আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

একমাস পরেও নিখোঁজদের জন্য ব্যাকুল স্বজনরা

বিজিএমইএ ও জেলা প্রশাসনের উদ্যোগে নিখোঁজের তালিকা তৈরির জন্য সাভার উপজেলায় একটি অস্থায়ী কন্ট্রোল রুম করা হয়েছে। গত ১৪ মে থেকে সেখানে মানুষ স্বজনের নাম তুলছেন নিখোঁজ তালিকায়। সেখান থেকেই কেউ কেউ যাচ্ছেন সাভার থানায় সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করতে।
জীবিত না হোক, অন্তত স্বজনের লাশটির যদি হদিশ মেলে, এই আশা স্বজনদের।
শুক্রবার সকালেও বৃষ্টির পানিতে তলিয়ে যাওয়া রানা প্লাজার ফাঁকা স্থানটিতে গিয়ে দেখা যায়, উৎসুক মানুষের ভিড়ে অনেক স্বজন হাতে ছবি নিয়ে অসহায়ের মতো সেদিকে চেয়ে নীরবে চোখের জল ফেলছেন।


সাভার মডেল থানার ওসি মো. আসাদুজ্জামান বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, কন্ট্রোল রুমে নিখোঁজের তালিকায় তিনশ’র অধিক নাম লিপিবদ্ধ করেছেন স্বজনরা।
“যারা তালিকায় নাম অন্তর্ভুক্ত করছেন তাদের একটি টোকেন দেওয়া হচ্ছে। সেই টোকেন নিয়ে স্বজনদের মধ্যে কেউ থানায় এসে জিডি করছেন। শুক্রবার দুপুর পর্যন্ত এ রকম ৯২টি জিডি করা হয়েছে। ”
যেহেতু ডিএনএ রিপোর্টে মৃতদেহ সনাক্ত হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে, তাই স্বজনদের এত ব্যাকুলতা বলে মনে করেন ওসি আসাদুজ্জামান।


বোন ছালেহা বেগমের খোঁজ না পেয়ে শুক্রবার সকালেই সাভার থানায় জিডি করতে এসেছেন ভাই আব্দুর রহিম। ছালেহা রানা প্লাজার তৃতীয় তলার একটি কারখানায় দুই বছর ধরে কাজ করতেন।
মজিদপুরের এ-৬৫ মহল্লার বাড়ির ভাড়াটিয় ছালেহা ভবন ধসের পর থেকেই নিখোঁজ। তিনি ময়মনসিংহের কোতয়ালী থানার কান্দাপাড়া মহল্লার আব্দুল গফুরের মেয়ে।
আব্দুর রহিম ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, “ডিএনএ পরীক্ষার জন্য নমুনা দিয়েছি, নিখোঁজ তালিকায় নাম উঠিয়েছি, থানায় জিডি করেছি।

কিন্তু এক মাসের কেউ আমার বোনের হদিস দিতে পারেনি। এখন কোথায় যাব বলতে পারেন?”
একই প্রশ্ন পোশাক শ্রমিক এবাদুল হকের বাবা হাফিজুল ইসলামেরও। এবাদুলের বাড়ি ময়মনসিংহ জেলার তারাকান্দা থানার চাকিরকান্দা এলাকায়। ২ বছর ২ মাস আগে এবাদুল তৃতীয় তলার কারখানায় কাজ নেয়। ভবন ধসের পর থেকেই সে নিখোঁজ রয়েছে।


হাফিজুল ইসলাম বলেন, থানায় জিডি করতে চাইলেও পুলিশ তা নেয়নি। পুলিশ নিখোঁজ তালিকার টোকেন নাম্বার চায়।
পরে রাগারাগি করে থানা থেকে চলে যান ছেলেহারানো এই বাবা।
ইউনুছ আলীও শুক্রবার মেয়ে ময়না আক্তারের খোঁজ পেতে থানায় এসেছেন জিডি করতে। ময়নার বাড়ি মানিকগঞ্জ জেলার শিবালয় থানার ধুপুলিয়া গ্রামে।


ময়নার বাবা বলেন, তার মেয়ে রানা প্লাজার নিউ ওয়েভ স্টাইল লিমিটেড কারখানায় অপারেটর পদে কাজ করত। কোথাও মেয়ের লাশের সন্ধান না পেয়ে জিডি করেছেন।
এদিক দুপুরে ধ্বংসস্তূপ ঘেরা কাঁটা তার ধরে দাঁড়িয়ে থাকতে দেখা গেছে অনেককে। উৎসুক মানুষের ভিড়ে  অনেকেই ছবি নিয়ে এখনও খুঁজে বেড়াচ্ছেন নিখোঁজ স্বজনদের।
ঢাকা জেলা প্রশাসনের তত্ত্বাবধানে থাকা কাঁটা তার দিয়ে ঘেরা রানা প্লাজার স্থানটির সামনে রয়েছে সার্বক্ষণিক পুলিশের নিরাপত্তা ব্যবস্থা।


সোর্স: http://bangla.bdnews24.com

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.