অলসদের দিয়ে কী আর হয়। আলসেমি ছাড়া!
পুরাতন ঢাকার সবচেয়ে বড়ো বিদ্যাপীঠের নাম জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়। বাহাদুর শাহ পার্কের কোনায়, আনুষ্ঠানিকভাবে চিত্তরঞ্জন এভিনিউতে এটির অবস্থান। আজকে নিয়ে দ্বিতীয়াবারের মতো এই ক্যাম্পাসে গিয়েছি। আজকে সেখানে একটি সভা ছিল, কীভাবে এই বিশ্ববিদ্যালয়ে ইন্টারনেট কম্পিউটারকে সবার জন্য উন্মুক্ত করা যায়।
আমি আর জাফর ইকবাল স্যার ছিলাম ক্যাম্পাসের বাইরের লোক। বাকীরা সেখানকার। আলাপ আলোচনা খুব ভাল হয়েছে।
দীননাথ সেন, প্রভাতীচরণ রায়, অনাথবন্ধু মল্লিক আর ব্রজসুন্দর মিলে ১৮৫৮ সালে ঢাকার ব্রাহ্ম স্কুল প্রতিষ্ঠা করেন। জমিদার কিশোরীলাল চৌধুরী ১৮৭২ সালে স্কুলের দায়িত্ব নিয়ে তার বাবার নামে সেটিকে নামকরণ করেন - জগন্নাথ স্কুল।
এর দুই বছর পর এটি দ্বিতীয় গ্রেডের কলেজে উত্তীর্ণ হয় । পরে ১৮৮৭ সালে স্কুল শাখাটি আলাদা হয়ে যায়। এটি এখন কিশোরী লাল জুবিলী স্কুল বা কে এল জুবিলী স্কুল নামে পরিচিত। ১৯০৮ সালে এটি পূর্নাঙ্গ কলেজে পরিণত হয়।
কলেজের যাত্রা শুরু হয় ৪৮ জন শিক্ষার্থী নিয়ে আর ৫ বছরের মধ্যে তা ৩৯৬ জনে উন্নীত হয়।
সেই সময় এটি ছিল ঢাকার উচ্চ শিক্ষার মূল বিদ্যাপীঠ। ১৯২১ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা হলে কলেজে ডিগ্রী শাখা বন্ধ করে দেয়া হয়। কলেজ হয়ে যায় ইন্টারমিডিয়েট কলেজ। ১৯৪৯ সালে আবার ডিগ্রী চালু হয় আর ১৯৬৮ সালে কলেজটি সরকারী কলেজ হয। ১৯৭৫ সালে স্নাতক ও মাস্টার্স চালু হয় আর ২০০৫ সালে পরিণত হয় জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ে।
এখন ৪টি অনুষদ, ২২টি বিভাগ, ২৭১ জন শিক্ষক আর ২৭ হাজার শিক্ষার্থী নিয়ে এটি বাংলাদেশের অন্যতম বৃহত্তম বিদ্যাপীঠ। এই বিদ্যাপীঠের অবদান এই দেশে কেমন তার একটিমাত্র পরিসংখ্যানই যথেষ্ঠ-চলতি বছর ে২ ১৫ জন ব্যক্তিত্ব একুশে পদক পেয়েছেন, আমি শুনেছি, তাদের ছয়জনই এই বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী!
কলেজে সেই অর্থে ইন্টারনেট ফ্যাসিলিটি নেই। সব বিভাগই স্থানীয়ভাবে আলাদা আলাদা ভাবে ব্রডব্যান্ড (পাড়াতো ব্রডব্যান্ড আর কী) নিয়েছে । শিক্ষার্থীদের জন্য সে রকম কোন ফ্যাসিলিটি এখনো করা যায় নি।
এখনকার উপাচার্য ড. মেজবাহ উদ্দিন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের পদার্থ বিজ্ঞানের শিক্ষক এবং জাফর স্যারের ক্লাশরুম শিক্ষক।
কাজে স্যারের ডাকে আমরা গিয়েছি সেখানে। কীভাবে আমার মোটা বুদ্ধি দিয়ে সহায়তা করা যায়। আজকের সভাতে নানান বিষয় আলাপ হয়েছে আর কিছু সিদ্ধান্তও হয়েছে==
মগবাজার বিটিসিএল থেকে ফাইবার অপটিক দিয়ে ক্যাম্পাসে ৩ মেগাবিটের ইন্টারনেট সংযোগ নেওয়া হবে। শুরুতে কয়েকটি ওয়াই-ফাই জোন করে ক্যাম্পাসে সবার জন্য ইন্টারনেটের ব্যবস্থা করা হবে। মূল ল্যাবগুলোতেও সংযোগ দেওয়া হবে।
এর পাশাপাশি সম্পূর্ণ ক্যাম্পাসের জন্য ক্যাম্পাস নেটওয়ার্কের ডিজাইন চূড়ান্ত করা হবে। আমাদের বিশেষ কৃতজ্ঞতা বাংলাদেশ ইন্টারনেট সার্ভিস এসোসিয়েশনের সভাপতি আক্তারুজ্জামান মঞ্জু ভাই-এর প্রতি যিনি এই ডিজাইনে আমাদের ভলান্টারি সহায়তা করছেন। ডিজাইন শেষ হলে এই কাজে হাত দেয়া হবে। আগামী বছরের ভর্তি পরীক্ষায় রেজিস্ট্রেশন অনলাইনে হবে। আর বিশ্ববিদ্যালয়ের অটোমেশন-এর কাজটাও শুরু করা হবে।
সভায় উপাচার্য স্যার ছাড়াও ডিন, রেজিস্ট্রার, কম্পিউটার কমিটির সদস্যরা ছিলেন। কাজে সিদ্ধান্তগুলোকে মোটামুটি চূড়ান্তই বলা যায়।
আমি আশা করছি জুন মাসের মধ্যে জবি ক্যাম্পাসে ইন্টারনেটের উপস্থিতি প্রবলভাবে লক্ষ করা যাবে।
আগামীকাল সকালে অর্থ মন্ত্রণালয় অনুমোদন দিলে বিজ্ঞান মন্ত্রণালয়ের উদ্যোগে ক্যাম্পাসে একটি সাইবার সেন্টারও চালু হয়ে যাবে।
মিটিং শুরুর আগে আমি আর জাফর স্যার কম্পিউটার বিভাগের প্রথম ব্যাচের শিক্ষার্থীদের সঙ্গে কথা বলেছি।
ওদের উৎসাহ দেখে ভাল লাগলো। আশা করি ওদের এই উৎসাহে ভাটা পড়বে না।
জবি ক্যাম্পাস সম্ভবত দেশের একমাত্র ক্যাম্পাস যেখানে একটি 'গণিত চত্বর' আছে।
জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় ও এর সঙ্গে যুক্ত সবার সেকেন্ড ডিফারেন্সিয়াল নেগেটিভ হোক।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।