জাতীয় নারী উন্নয়ন নীতি-’৯৭ ঘোষণা, নারী শ্রমিকদের গৃহে বা কর্মক্ষেত্রে তাদের অবদান ও শ্রমের যথাযথ স্বীকৃতি ও মর্যাদার দাবি জানানো হয় আন্তর্জাতিক নারী দিবসের শতবর্ষ উদযাপন বিষয়ক সমাবেশে।
নারী দিবসের শতবর্ষে ‘করো অঙ্গীকার, বৈষম্য-শোষণ ও সহিংসতামুক্ত বিশ্বে থাকবে নারীশ্রমের স্বীকৃতি ও সমঅধিকার’—এই স্লোগান নিয়ে কর্মজীবী নারী গতকাল বৃহস্পতিবার মুক্তাঙ্গনে নারী শ্রমিক সমাবেশের আয়োজন করে। সমাবেশ শেষে বর্ণাঢ্য এক শোভাযাত্রা রাজধানীর বিভিন্ন সড়ক প্রদক্ষিণ করে।
আন্তর্জাতিক নারী দিবসের শতবর্ষে নারীদের জন্য শোষণ, বৈষম্য আর সহিংসতা রুখতে শ্রেণী-পেশা নির্বিশেষে সুদৃঢ় ঐক্য ও আন্দোলন গড়ে তোলার অঙ্গীকার ব্যক্ত করা হয়। কর্মজীবী নারীর সভাপতি শিরীন আখতারের সভাপতিত্বে সমাবেশ সঞ্চালনা করেন কর্মজীবী নারীর নির্বাহী পরিচালক রোকেয়া রফিক বেবী এবং ঘোষণাপত্র পাঠ করেন সমন্বয়ক আরিফা আক্তার অনু।
সমাবেশে শিরীন আখতার বলেন, সমাজ গঠনের হাতিয়ার নারী শ্রমিক। নারী শ্রম সভ্যতাকে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছে। তিনি আরও বলেন, ১৮৫৭ সালে সুঁই কারখানার শ্রমিক নারীরা যে দাবি নিয়ে আন্দোলন করেছিল এবং যার ফলশ্রুতিতে ১৯১০ সালে আন্তর্জাতিক নারী দিবসের সূচনা, আজ সেই দিবসের শতবর্ষে এসেও নারী শ্রমিককে একই দাবিতে লড়াই করতে হচ্ছে। নারী দিবসের প্রাক্কালে ‘গরীব এন্ড গরীব’ গার্মেন্ট-এর ১৩ জন নারী শ্রমিক লাশ হয়ে তারই প্রমাণ করে দিয়ে গেলেন। একই ঘটনার তদন্তে প্রমাণিত দোষীদের অবিলম্বে গ্রেফতার করতে হবে ও শাস্তি দিতে হবে।
তাই নারী শ্রমের স্বীকৃতি ও সমঅধিকার অর্জনের সংগ্রাম চলবেই বলে হুশিয়ার করেন শিরীন আখতার।
সমাবেশে বক্তারা বলেন, হাজারো নির্যাতন সহ্য করে নারীরা অনেক চ্যালেঞ্জিং পেশায় সফলতার সঙ্গে কাজ করে যাচ্ছে। সুস্থ শ্রম পরিবেশ ও ন্যায্য শ্রম অধিকার নিশ্চিত করা ছাড়া প্রকৃত উন্নয়ন সম্ভব নয়। তাই রাজনৈতিক দল, রাষ্ট্র, প্রশাসন, ট্রেড ইউনিয়ন, সরকারসহ সকলের দায়িত্ব নারীর জন্য কর্মবান্ধব পরিবেশ। চলার পথের সব বাধা দূর করার জন্য এখন দরকার নারীদের বৃহত্তর ঐক্য।
সমাবেশে নারী শ্রমিকরা জাতীয় নারী উন্নয়ন নীতি-১৯৯৭ ঘোষণা ও বাস্তবায়ন, ’৭১-এর যুদ্ধাপরাধীদের বিচার, নারী-পুরুষ সমকাজে সমমজুরি, মাতৃত্বকালীন ছুটি, নিরাপদ কর্মপরিবেশ, সর্বস্তরে এক-তৃতীয়াংশ নারী প্রতিনিধিত্ব, গ্রামীণ নারী শ্রমের স্বীকৃতি প্রদান, কৃষি শ্রমিকদের জন্য পূর্ণাঙ্গ শ্রম আইন, ট্রেড ইউনিয়নের সব স্তরে নারী প্রতিনিধিত্ব নিশ্চিত করাসহ বিভিন্ন দাবি তোলেন। একই সঙ্গে জাতীয় সংসদ কার্যকর করতে এবং জাতীয় সংসদে নারী ইস্যুসমূহ উত্থাপন করে আইন প্রণয়ন ও বাস্তবায়নে দলমত নির্বিশেষে নারী ককাস গঠন করতে হবে।
সমাবেশে জাগরণের গান পরিবেশন করেন গণসঙ্গীত শিল্পীরা। সমাবেশ শেষে বেলুন ও পতাকা সাজে সজ্জিত বর্ণাঢ্য শোভাযাত্রাটি মুক্তাঙ্গন থেকে শুরু হয়ে পল্টন-ডিআইটি-দৈনিক বাংলা হয়ে জিরো পয়েন্টে এসে শেষ হয়।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।