সত্যের চেয়ে অপ্রিয় আর কিছু নেই
পুঁজিবাজারের শেয়ার ক্রেতা-বিক্রেতারা এখন অনেক সতর্ক। বিক্রেতারা শেয়ার বিক্রি করতে গেলেই নির্ঘাত লোকসান গুণতে হবে এই আশঙ্কায় এখন অনেকেই শেয়ার বিক্রি করতে চাচ্ছেন না।
চলতি সপ্তাহের গত ৪ দিন পুঁজিবাজারে যে নিম্নমুখী অবস্থা ছিল গতকাল বুধবার দিনশেষে আবার তা ঘুরে দাঁড়িয়েছে। ফলে পুঁজিবাজারের সাধারণ বিনিয়োগকারীরা সূচক এবং বেশীর ভাগ কোম্পানির শেয়ারের দাম বাড়ায় স্বস্তির নিঃশ্বাস নিতে শুরু করেছে। ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানসহ অন্যান্য খাতের শেয়ারের মূল্য ইতিবাচক ছিল।
ফলে গতকাল বুধবার দিনশেষে ঢাকায় পুঁজিবাজারে সূচক এবং লেনদেনকারী বেশীর ভাগ প্রতিষ্ঠানের দাম কিছুটা বাড়লেও লেনদেনের পরিমাণ অনেক কমে ৭শ’ ৮৮ কোটি টাকায় দাঁড়িয়েছে। ঢাকায় পুঁজিবাজারে সপ্তাহের শুরুর দিন থেকেই শতাধিক প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারী প্রতিষ্ঠান এবং বাজারের বড় প্লেয়ারদের মধ্যে অনেকেই শেয়ার ক্রয়-বিক্রয়ে অংশ না নিয়ে হাত গুটিয়ে দর্শকের ভূমিকায় বাজার পর্যবেক্ষণ করছে বলে বাজার বিশ্লেষকরা মনে করেন। সিকিউরিটিজ এন্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের কর্মকর্তাদের পুঁজিবাজার নিয়ে বাড়তি খবরদারি-হুমকি-ধমকি এবং যখন-তখন নির্দেশ জারি বিনিয়োগকারীদের ক্ষতিগ্রস্ত করে বলে বিনিয়োগকারীরা মনে করেন। আর এসইসি কর্তৃপক্ষের কাছ থেকে দীর্ঘমেয়াদী নীতিমালা প্রণয়নের দাবী জানিয়েও পাচ্ছে না! এসইসি কর্তৃপক্ষের কাছ থেকে সরকারী খাতের কোম্পানির শেয়ার পুঁজিবাজারে আনার ব্যাপারে তেমন কোন কার্যক্রম বিনিয়োগকারীদের চোখে পড়ছে না বলে বিনিয়োগকারীরা অভিযোগ করেন।
পুঁজিবাজারের ব্যাপারে মাল্টি সিকিউরিটিজ এন্ড সার্ভিসেস লিমিটেডের ম্যানেজিং ডিরেক্টর আব্দুল আউয়ালের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, ক্ষুদ্র বিনিয়োগকারীরা নিজেদের পুঁজি এবং লোন মার্জিনে শেয়ার কিনে আটকে গেছেন, তারা এখন শেয়ার বিক্রি করলেও প্রতি শেয়ারে ৫০ টাকা থেকে শতাধিক টাকা লোকসান গুণতে হবে।
তাই তাদের অনেকের পক্ষে শেয়ার ক্রয়-বিক্রয় করা এখন সম্ভব হচ্ছে না।
বাজার একটু ভাল হলেও তাদের শেয়ার ক্রয়-বিক্রয়ে গতি ফিরে আসবে এবং প্রতিদিন লেনদেনের পরিমাণ কমবেশী ১৫ কোটি টাকার কাছাকাছি চলে যাবে। এছাড়াও চলতি অর্থ বছরের মধ্যে পুঁজিবাজারে অনেক অর্থ আসবে। তিনি বলেন, যারা তাদের অর্জিত অর্থকে আয়করের খাতায় দেখাতে পারবে না তাদের পুঁজিবাজারে অর্থ বিনিয়োগ করা ছাড়া কোন পথ নেই বলে তিনি মনে করেন। বাজার পরিস্থিতির ব্যাপারে পিএফ আই সিকিউরিটিজ লিমিটেডের প্রধান নির্বাহী এবং বিশেষজ্ঞ কাজী ফরিদউদ্দিন আহমেদ বলেন, সার্বিক বিবেচনায় পুঁজি বাজারের অবস্থা ভাল।
গত তিনদিনের তুলনায় ব্যাংক আর্থিক প্রতিষ্ঠানসহ অন্যান্য খাতের শেয়ারের দাম বাড়তে শুরু করেছে, বিনিয়োগকারীদের শেয়ার ক্রয়ের ক্ষমতা কমে যাওয়ার কারণেই লোকজন কম বলে তিনি মনে করেন। তিনি বলেন, এসইসি কর্তৃপক্ষ যে সকল শেয়ারের ভিত্তি ভাল সে সকল শেয়ার ক্রয়ে বিনিয়োগকারীদের ঋণ বাড়িয়ে দেয়া এবং কর্তৃপক্ষ সেগুলোকে গেমলিং শেয়ার মনে করছেন। এদের বিরুদ্ধে নানা প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করে সাধারণ বিনিয়োগকারীদের রক্ষা করা যায় কিনা তা চিন্তা করে দেখার পরামর্শ দেন। গতকাল বুধবার দিনশেষে সূচক ৪৬ পয়েন্ট বেড়ে ৫ হাজার ৫৩৪ পয়েন্টে দাঁড়িয়েছে, এর মধ্যে ১৮৫টি কোম্পানির দাম বেড়েছে এবং ৪৯টি কোম্পানির দাম কমেছে। দিনশেষে লেনদেন হয়েছে ৭শ’ ৮৮ কোটি টাকা।
গতকাল লেনদেনের শীর্ষে ছিল লংকা বাংলার শেয়ার। এ কোম্পানির শেয়ার লেনদেন হয়েছে প্রায় কমবেশী ৯৭ কোটি টাকা। লেনদেনে দ্বিতীয় স্থানে ছিল বেক্সিমকো লিমিটেডের শেয়ার। এ শেয়ারের লেনদেনের পরিমাণ ছিল ৫০ কোটি টাকা, গ্রামীণ ফোনের শেয়ার ছিল তৃতীয় স্থানে, লেনদেন হয়েছে ৩৬ কোটি টাকা।
সুত্র: ইত্তেফাকে প্রকাশ।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।