সদরঘাটে পৌছুতেই শুরু হয়ে গেলো বৃষ্টি,
ছোট ছোট ফোঁটা হলে নিয়ে নিতাম মাথায়,
কিন্তু বৃষ্টির ফোঁটাগুলো ছিলো বেশ বড় সড়,
তাই অগত্যা দৌড়ে এসেই আশ্রয় নিলাম,
ফুটপাতের এক পুরোনো বইএর দোকনের তলায়।
সচরাচর এসব দোকানে আজকাল ঢুকিনা,
কিন্তু আগে এক সময় অভ্যেস ছিলো;
বৃষ্টি থামবার কোনো লক্ষন নেই দেখেই
চোখ ফেরালাম সাজানো বইএর বুডে
রবীন্দ্রনাথ শরৎচন্দ্র এবং মাসুদ রানার পাশেই
হঠাৎ দেখি
আমার নিজের লেখা একখানা কাব্যগ্রন্থ
কবিতা অমীমাংসিত রমণী।
বাহ বেশ মজার ব্যাপার তো!
একবার ভাবলাম দেখি একটু হাতে নিয়ে
আবার সঙ্গে সঙ্গে মনে হলো
থাক দোকানীর মনে প্রত্যাশাভঙ্গের দুঃখ দেবোনা
কিন্তু কৌতুহল বড় সংক্রামক
অজান্তে কখন হাত চলে গেলো বইএর দিকে
পাতা উল্টাতেই
রমণীর হস্তাক্ষরে আমার চোখ গেলো আটকে
গোটা গোটা কাঁচা কালো কয়েকটি শব্দ
হঠাৎ আমার বিকেলটাকেই দিলো বদলে
"খোকাভাই আরো সুনদর আরো ভালো হও"
মমতা
বৃষ্টি ভেজা মনের ভেতরে নামটা গেথে গেলো,
মার্বেলের ভেতরের রঙিন ফুলের মত
আমার মন ভরে উঠলো মমতায়,
মনে হলো আমার কবিতার চেয়ে অনেক বেশী সুন্দর
মমতার এই প্রার্থনা
মমতার এই চাওয়া।
এরপরও কি খোকা ভালো না হয়ে পারে?
পরমূহুর্তে মনে হলো এই বই দোকানে এলো কি করে?
মমতার দেওয়া এই উপ হার
আহা! হতভাগা খোকা বুঝি মূল্য বুঝলোনা।
নাকি এই বই দুজনের বিচ্ছদের স্মৃতি?
একি ছিলো ভালোবেসে দেওয়া মমতার শেষ উপ হার?
আমার কষ্ট হলো ভাবতে
তবুও ভাবলাম
বোশেখের বৃষ্টি থেমে গেলো দ্রুত ।
বইটিকে যথাস্থানে রেখে আমি পা বাড়ালাম,
বাংলাবাজারের উদ্দেশ্যে
কিন্তু , কিন্তু মমতা চললো আমার সাথে সাথেই,
যেনো আমি তার খুঁজে পাওয়া খোকাভাই।
মনে হলো এই বৃষটিস্নাত বিকেল বেলায় আজ তার প্রার্থনা পৌছেছে যথাস্থান।
Click This Link
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।