আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

অস্থির সময়ঃ ক্লান্ত আমার এই দেশ।আসুন আমরা হাতে হাত ধরি।



কিছুদিন হল সবকিছুতেই কেমন যেন অস্থির ভাব বিরাজ করছে, আগে যে এমন ছিলনা তা নয় তারপরেও নতুন এই বছর শুরু হওয়ার পর থেকে আরও বেশি অস্থিতিশীলতা। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের হলে মারা গেল মেধাবী ছাত্র আবু বকর, আমরা চেয়ে চেয়ে দেখলাম পত্রিকা আর টেলিভিশনে,আমরা নাদান বাজ্ঞালী জাতি আশা করেছিলাম হয়ত প্রশাসন এর বিচার করবে কিন্তু আমরা স্তব্ধ হয়ে দেখলাম কিভাবে আমাদের বেহায়া স্বরাস্ট্রমন্ত্রী আর প্রশাসন এগুলো নিয়ে মিথ্যাচার করল আর এর ওর উপর দোষ চাপিয়ে নিজেদের দূর্বলতা আড়াল করল, এই ঘটনার রেশ কাটতে না কাটতেই রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে ঘটে গেল নৃশংস ঘটনা, এক ছাত্র, যে ছাত্রলীগের রাজনীতির সাথে জড়িত এই অপরাধে তাকে কুপিয়ে হত্যা করে ম্যানহোলের মধ্যে ফেলে রাখল শিবির নামধারী কিছু পশুরা। এরপর আমাদের কে দেখতে হল হামীম এবং সুমীর মত ফুটফুটে দুটো বাচ্চার লাশ, একসময় আমার মনে হল পেপার পত্রিকা পড়াই ছেড়ে দেই। আর কত সহ্য করা যায় এই রক্ত আর হানাহানি!! যাই হোক এই সব কিছু থেকে পরিত্রাণ পাবার জন্য ছুটে যাই বইমেলায় নতুবা ব্লগে, কিন্তু আশাহত হই, আমরা যারা গুটিকয়েক মানুষ ব্লগে লিখছি, বইমেলায় যাচ্ছি কিছু পরিবর্তনের কথা বলছি কিন্তু সেটা থেকেই যাচ্ছে গুটি কয়েক মানুষের ভেতরেই, আমরা সেভাবে ছড়িয়ে দিতে পারছিনা আমাদের মুক্ত চিন্তাকে। আমরা আমাদের তরুণ প্রজন্মকে যুক্তি,মুক্তচিন্তা,বিজ্ঞানের পথে আনতে পারছিনা, যত সহযে তারা শিকার হচ্ছে পূজিবাঁদী, মৌলবাদী চিন্তা চেতনায়।

আজ ১৪ই ফ্রেব্রুয়ারীর ভ্যালেন্টাইন্স ডে এর কথা টেলিভিশন আর মোবাইল এর কল্যাণে অজ পাড়াগ্রামের মানুষও জানে কিন্তু সেই দিনটিতে যে স্বৈরাচারী শাসকের বিরুদ্ধে লড়াই করে প্রাণ দিয়েছিল আমার আপনার ভাই, বোন জয়নাল, দীপালি আর কাঞ্চন তাঁদের খবর খোদ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্ররাই হয়ত জানেনা ,তাঁরা হতভাগা কারণ তাঁরা জীবন দিয়েছিল এক দূ্র্ভাগা জাতির জন্য যারা ইতিহাস দ্রুতই ভূ্লে যায়। আজ তাদের উত্তরসূ্রীরা সেই সব রাজাকার স্বৈরাচারীদের কে ভোট দিয়ে রাস্ট্র ক্ষমতায় বসাই। আর ভালবাসার নামে করে ইতরামি। অনেকেই বলে কিছু একটা করা দরকার কিন্তু সেটা কি, এটা অনেকেই জানেনা । আমার মনে হয় আজকে আমরা যারা এই প্লাটফর্মে লিখছি, দেশকে নিয়ে ভাবছি আমরা কেন এক হইনা প্রত্যেকে আমাদের নিজেদের এলাকায় গড়ে তুলি পাঠ চক্র,মিলিত হই সবাই,ছড়িয়ে দেই নিজেদেরকে।

আমরা যদি আমাদের চিন্তা ভাবনা গুলো শুধু এক জায়গাতেই রেখে দেই তবে মনে হয়না বড় কোন পরিবর্তন আনা সম্ভব, আর আমাদের প্রত্যেকেরই তো সামাজিক দায়বদ্ধতা বলে একটা ব্যাপার আছে। আমাদের এই বর্তমান শিক্ষা ব্যবস্থা আমাদের এক হওয়ার কথা শেখায়না, একক উন্নয়নের কথা শেখায়। আজ আমাদের বাবা, মা যারা একটু বিত্তবান তারা তাদের সন্তানদের কে ইংলিশ মিডিয়াম স্কুলে পাঠাচ্ছে, একটু বড় হলে পাঠিয়ে দিচ্ছে বিদেশে কিংবা বেসরকারী বিশ্ববিদ্যালয়ে কারণ সেখানে তাদের সন্তানরা নিরাপদে থাকবে, এই প্রজন্ম যারা রাজনীতিকে ভাবছে কীটের মত আর দেশকে ভাবছে অনিরাপদ, যারা একটা মাল্টিন্যাশনাল কোম্পানীতে চাকর হওয়াকে জীবনের লক্ষ্য ধরে নেয় তাদের কাছ দেশ ও দশের জন্য কল্যাণ কর কিইবা আশা করতে পারি ? আর যারা বাংলাদেশে থাকছে এবং সরকারী জব করছে তারাও চেস্টা করছে কিভাবে ঘুষ খেয়ে ফাঁকি দিয়ে রাতারাতি বড়লোক হওয়া যাবে। যে সব ছাত্রকে দেশ লক্ষ লক্ষ টাকা খরচ করে সরকারী ভার্সিটিতে পড়াচ্ছে তারাই বা কি করছে? তারা দ্রুত বড়লোক এবং ক্ষমতাবান হওয়ার জন্য যুক্ত হচ্ছে দলীয় রাজনীতিতে যখানে টাকা,ক্ষমতাই মূল কথা, তাহলে প্রশ্ন হচ্ছে দেশের কথা, সামাজিক দায়বদ্ধতার কথা কারা ভাবছে। তাই আমার ইচ্ছা আমরা যারা সামুতে আছি আমরা সবাই মিলে ফিজিক্যালি একত্রিত হই, কিছু একটা করি।

বড় কিছু করতে হয়ত পারবনা তবে ভাবাতে তো পারব। আমরা একত্রিত হয়ে অনেক মৃত্যুপথযাত্রী বন্ধুকে বাঁচিয়েছি,আজকে শুধু সামু নই আমরা বাংলাদেশের সবাই যদি ভালর পক্ষে কাজ করি তবে হয়ত এই মৃর্ত্যুপথযাত্রী দেশটাকে বাঁচাতে পারব। ছোটবেলা থেকে একটা কথা শুনতাম এবং বিশ্বাস করতাম একটি মোমবাতি থেকেই লক্ষ মোমবাতি জ্বালান সম্ভব। আর সব ধরণের অন্ধকার দূর হবে যদি মনের অন্ধকার দূ্র হয়।


অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।