আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

আমাদের স্থূল জামায়াতবিরোধিতা



আমি, তুমি, সে -- সবাই বাস করি বৃত্তের ভেতরে। যার যার নিজস্ব বৃত্ত। আমরা বৃত্ত ভালোবাসি। বৃত্তের ভেতরেই বাঁচি। বৃত্তেই নৃত্ত, স্বতঃপ্রবৃত্ত।

সে বৃত্ত নিজের ধারণার। তবে নিজে তা দেখি না। খেপে গিয়ে অন্যকে বলি শামুক। বলি মণ্ডূক। মণ্ডূক মানে ব্যাঙ।

তার সঙ্গে কূপ যোগ করলে কূপমণ্ডূক -- কুয়োর ব্যাঙ। মাননীয় কূপমণ্ডূকবৃন্দ! বলুন দেখি, এদেশে জামায়াতের সবচে' ঘোরতর বিরোধী কারা? নাস্তিকরা? না। নিজের বৃত্তের দেয়ালে একটা ধাক্কা দিন। কেননা, এমনকী আওয়ামী লীগও নয়। রাজাকার ইস্যু নিয়ে বিরোধ মৌল আদর্শগত নয়, ঐতিহাসিক ঘটনাগত।

আপনারা জামায়াতে ইসলামীর বিরোধিতা করেন, কিন্তু আদতে জামায়াত চেনেন না। অন্ধের হাতি দেখার মতো জামায়াতের বাইরেটা দেখেছেন, ভেতর দেখেন নি। তাই বারবার ভুল করছেন। সাদৃশ্যানুমান থেকে টুপি-পাঞ্জাবি দেখলেই জামায়াত ভেবে আঁৎকে উঠছেন। গতকাল চট্টগ্রামে যারা সমাবেশ ডেকেছিলো, একইভাবে তাদেরও ছদ্মবেশী জামায়াত বলে হৈ হৈ শুরু করেছেন।

বিনীত নিবেদন : আপনাদের বৃত্তটি কি টেনেটুনে আরেকটু বড় করা যায় না! গতকাল সীরাত নিয়ে একটা তাত্ত্বিক ও প্রামাণ্য পোস্ট ছিলো ব্লগে, একজন এসে বললো, এটা জামায়াতের কাণ্ড। যুক্তি, জামায়াত মীলাদবিরোধী; এ লেখাও মীলাদবিরোধী। ওই বেকুবটা অবশ্য সচেতন ব্লগারদের গলাধাক্কা খেয়ে শেষে চুপ মেরে যায়। এদেশে জামায়াত-শিবিরের সবচে' শক্ত বিরোধী কওমী আলিমগণ, যাঁদের অধিকাংশই উপমহাদেশের প্রাচীনতম ও ঐতিহ্যবাহী রাজনৈতিক সংগঠন 'জমিয়তে উলামায়ে ইসলাম' এর সমর্থক। ১৯১৯ সালে প্রতিষ্ঠিত এ দলই ইংরেজ খেদাও আন্দোলনে সবচে' বড় ভূমিকা পালন করেছিলো।

এঁদের সঙ্গে জামায়াতের মৌলিক আক্বীদাগত বিরোধ রয়েছে। আর মুসলমান মাত্রই জানেন, অন্য সকল ব্যাপারে আপোস সম্ভব হলেও আক্বীদাগত বিষয়ে কখনোই তা সম্ভব নয়। তাই আমরা দেখি, বিএনপি ও আওয়ামী লীগ রাজনৈতিক স্বার্থে জামায়াতের সঙ্গে নানা সময়ে সমঝোতায় গেলেও জমিয়ত একবারও কাছে ঘেঁষে নি। কারণ আক্বীদাগত বিরোধের চে' রাজনৈতিক বিরোধ অনেক বেশি স্থূল। গতকাল সরকারের লেলিয়ে দেয়া পুলিশ আল্লামা আহমদ শফী'র গাড়িতে গুলি করেছে।

এটি যে কী অকল্পনীয় ধৃষ্টতা, সরকার বুঝতে পারে নি। আহমদ শফী কোন্ মাপের মানুষ, তা উপলব্ধির যোগ্যতা সরকারের মন্ত্রিসভায় কারো আছে বলে মনে হয় না! স্রেফ ধিক্কার জানাচ্ছি!

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।