আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

ইকবালের সেই মামলা প্রত্যাহারের আবেদন!

ভালবাস চাই, ভালবাসতে চাই

আলোচিত ‘মালিবাগ হত্যা’ মামলা প্রত্যাহারের আবেদন করেছেন রাষ্ট্রপক্ষের কৌঁসুলি। সাবেক সাংসদ ডা. এইচ বি এম ইকবালসহ ২৪ জন এই মামলার আসামি। আবেদনে মামলা থেকে তাঁদের অব্যাহতিও চাওয়া হয়। ২০০১ সালের ১৩ ফেব্রুয়ারি হরতাল চলাকালে বিএনপির মিছিলে গুলি করে চারজনকে হত্যার অভিযোগে মতিঝিল থানার তখনকার উপপরিদর্শক (এসআই) ইছহাক মল্লিক বাদী হয়ে এ মামলা করেন। মামলাটি ঢাকার দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনাল-১-এ বিচারাধীন আছে।

মামলাটি প্রত্যাহারের সিদ্ধান্ত জানিয়ে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের আইন শাখা-১ থেকে গত বছরের ১৭ আগস্ট ঢাকা মহানগরের আদালতের সরকারি কৌঁসুলি আবদুল্লাহ আবুকে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়ার অনুরোধ করে চিঠি দেয়। আবদুল্লাহ আবু গত ২২ অক্টোবর ফৌজদারি কার্যবিধির ৪৯৪ ধারায় মামলাটি প্রত্যাহার করতে আদালতে আবেদন করেন। মহানগর পিপি তাঁর আবেদনে বলেন, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় যেহেতু মামলা না চালানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে, ফলে রাষ্ট্রপক্ষ মামলাটি পরিচালনা করে লাভবান হবে না। তাই মামলাটি প্রত্যাহার করা আবশ্যক। বর্তমান মহাজোট সরকার ক্ষমতায় আসার পর বিএনপি-জামায়াত জোট সরকারের মতো ‘রাজনৈতিক হয়রানিমূলক মামলা’ প্রত্যাহারের সিদ্ধান্ত নেয়।

মালিবাগ হত্যা মামলা: মহানগর গোয়েন্দা (ডিবি) পুলিশের তত্কালীন পরিদর্শক লুত্ফর রহমান তদন্ত করে ২০০১ সালের ১২ জুলাই ছয় আসামির বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র দেন। ঘটনার অধিকতর তদন্ত করে ডিবি পুলিশ পরিদর্শক ফরিদ উদ্দিন ২০০২ সালের ২৯ ডিসেম্বর আগের ছয়জনের সঙ্গে ইকবালসহ আরও ১৮ জনের বিরুদ্ধে সম্পূরক অভিযোগপত্র দেন। মামলার ২৪ আসামিই জামিনে আছেন। তবে ২০০৩ সালের ৫ এপ্রিল ১০ আসামির বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করা হয়। ইকবালসহ ১৪ আসামির আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে হাইকোর্ট মামলার কার্যক্রম স্থগিত করলে তাঁদের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করা হয়নি।

আর যাঁদের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করা হয়েছে তাঁদের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতেও হাইকোর্ট মামলার কার্যক্রম স্থগিত করেন। অভিযোগপত্র: অভিযোগপত্রে বলা হয়, মামলার ৩ নম্বর আসামি আবদুল হালিম আদালতে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেন। জবানবন্দিতে বলা হয়, ২০০১ সালের ১৩ ফেব্রুয়ারি চারদলীয় জোটের ডাকা হরতালের সমর্থনে মির্জা আব্বাসের নেতৃত্বে হারতালের সপক্ষে একটি মিছিল মালিবাগ মোড়ে পৌঁছে। একই সময় তখনকার সাংসদ ইকবালের নেতৃত্বে হরতালবিরোধী একটি মিছিলও সেখানে আসে। হরতালবিরোধী মিছিলে নেতৃত্বদানকারী ইকবাল এবং নুরুন নবী ওরফে শাওন, মনিরুজ্জামানসহ অন্য আসামিরা তাঁদের নিজ নিজ হাতে থাকা রিভলবার ও পিস্তল দিয়ে একই উদ্দেশে বিএনপির মিছিল লক্ষ্য করে এলোপাতাড়ি গুলি ছোড়ে।

এতে আবদুর রশিদ মোল্লা, জসীম, নাজমা বেগম ও অপর একজন (পুরুষ) নিহত হন। জবানবন্দিদানকারী আবদুল হালিমকে পরে মামলার রাজসাক্ষী করা হয়। এ মামলায় সাক্ষীর সংখ্যা ৭৯। আদালতে দুজনের সাক্ষ্য চলাকালে আসামিদের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে ২০০৩ সালে হাইকোর্ট মামলার কার্যক্রম স্থগিত করেন। মামলা প্রত্যাহারের উদ্যোগ নিয়ে বিতর্ক: আইনজীবীরা জানিয়েছেন, নিম্ন আদালতে কার্যক্রম স্থগিত এই মামলার নথি এখন হাইকোর্টে।

হাইকোর্টের স্থগিতাদেশ থাকায় মামলা প্রত্যাহারের সুযোগ নেই। উদাহরণ হিসেবে আইনজীবীরা বলেন, গত তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সময় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে ব্যবসায়ী আজম জে চৌধুরীর দায়ের করা মামলার কার্যক্রম হাইকোর্ট স্থগিত করায় তত্কালীন পিপি মামলাটি প্রত্যাহারের আবেদন ফিরিয়ে দেন। কারণ হিসেবে তখন বলা হয়, হাইকোর্টের স্থগিতাদেশ থাকা অবস্থায় মামলা প্রত্যাহারের সুযোগ নেই। পরে স্থগিতাদেশ তুলে নেওয়া হলে মামলাটি প্রত্যাহার করা হয়। কিন্তু ইকবালের মামলা প্রত্যাহারের সুপারিশের ক্ষেত্রে এই নিয়ম অনুসরণ করা হয়নি।

সরাসরি আদালতে মামলা প্রত্যাহারের আবেদন করেছেন পিপি। জানতে চাইলে পিপি আবদুল্লাহ আবু প্রথম আলোকে বলেন, হাইকোর্ট মামলার কার্যক্রম স্থগিত রাখলে ওই মামলা প্রত্যাহারের সুযোগ নেই। স্থগিতাদেশ তুলে নিলেই মামলা প্রত্যাহার হবে। ২৪ আসামি: ডা. ইকবাল ছাড়া এ মামলার অন্য আসামিরা হলেন—তারেক শামছুল খান ওরফে হিমু, শওকত হোসেন ওরফে নান্নু, কবির হোসেন, নুরুন নবী চৌধুরী, গোলাম মোস্তফা ওরফে পাপ্পু, কামরুল মোরশেদ, জি এম জিয়াউল হক, জসীম উদ্দিন, মুন্সী কামরুজ্জামান ওরফে কাজল, বাবুল ওরফে কালা বাবুল, আবদুস সালাম, মনিরুজ্জামান ও আবুল বাশারের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন হয়নি। তবে কিরণ, দুলাল ওরফে লন্ড্রি দুলাল, ইমদাদুল হক ওরফে বাচ্চু, মনির হোসেন, ছোট হান্নান ওরফে পিচ্চি হান্নান, লিয়াকত হোসেন, এস এম আরমান, খোরশেদ আলম, কামরুল হাসান ওরফে হান্নান ও আবদুল হালিমের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন হয়েছে।

সূত্র:- প্রথম আলো। ১৬-০২-২০১০ইং।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.