আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

নেপাল থেকে শ্রমিক নিচ্ছে মালয়েশিয়া, বাংলাদেশ উপেক্ষিত! অথচ বিতর্কিত মালয়েশিয়ান কোম্পানি IRIS কে দেয়া হয়েছে বাংলাদেশের মেশিন-রিডেবল পাসপোর্টের কাজ!!

ডানের বামে এবং বামের ডানে

প্রায় এক বছরেরও বেশি সময় ধরে বিদেশী শ্রমিক আমদানি বন্ধ থাকার পর মালয়েশিয়া নতুন করে বিদেশী শ্রমিক নিতে শুরু করেছে। ইতিমধ্যে তারা নেপাল থেকে এক লাখ জনশক্তি আমদানির জন্যে কার্যাদেশ দিয়েছে। আগামী ৬ মাসের মধ্যে এই লোক পাঠাতে বলা হয়েছে। নেপালের শ্রমিক নিলেও মালযেশিয়া বাংলাদেশের শ্রমিক নিয়োগের উপর থেকে নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার করে নি। যথাযথ কূটনৈতিক উদ্যোগের অভাবে নতুন এক লাখ শ্রমিক আমদানির কোনো অংশও বাংলাদেশ আদায় করতে পারে নি।

নেপালের রিপাবলিক পত্রিকায় গত ৮ ফেব্রুয়ারি প্রকাশিত এক খবর থেকে জানা যায়, দুই সপ্তাহ আগে নেপালের জনশক্তি রপ্তানিকারকরা ছয় মাসের মধ্যে জরুরী ভিত্তিতে এক লাখ শ্রমিক পাঠানোর কার্যাদেশ পেয়েছে। মালয়েশিয়ার চাহিদা মোতাবেক শ্রমিক সংগ্রহ করে প্রয়োজনীয় আনুষ্ঠানিকতা সম্পন্ন করতে নেপালের জনশক্তি রপ্তানিকারকরা রীতিমত হিমসিম খাচ্ছেন। চাহিদা মোতাবেক শ্রমিক পেতে জনশক্তি রপ্তাণিকারকরা তাদের ফি পর্যন্ত কমিয়ে দিয়েছেন বলে পত্রিকাটির খবরে উল্লেখ করা হয়েছে। রিপাবলিকের তথ্য অনুসারে, সাধারনত নেপালীরা আগে এক লটে ২৫ হাজারের মতো ভিসা পেতো। এবারই প্রথম বারের মতো এক সঙ্গে এক লাখ শ্রমিকের জন্যে ভিসা অনুমোদিত হয়েছে।

পত্রিকাটির খবরে বলা হয়েছে, বাংলাদেশ থেকে শ্রমিক নেওয়া বন্ধ থাকার কারণেই নেপালের উপর হঠাৎ করে এমন চাপ পড়েছে। তা ছাড়া বিশ্ব অর্থনৈতিক মন্দা কেটে যাওয়া এবং মালয়েশিয়ায় ব্যবসারত বহুজাতিক কোম্পানিগুলোর ব্যবসা ভালো হওয়ায় শ্রমিক চাহিদা বেড়ে গেছে। রিপোর্টে বলা হয়েছে, মূলত ম্যানুফ্যাচারিং খাতে এই শ্রমিক নেওয়া হচ্ছে। কৃষি ও সেবাখাতেও বিদেশী শ্রমিকের চাহিদা বেড়েছে। প্রাপ্ত তথ্যে জানা যায়, পাম অয়েলসহ বিভিন্নখাতে বেশ ক মাস ধরেই শ্রমিকের ঘাটতি অনুভব করছিলো মালয়েশিয়া।

এ নিয়ে মালয়েশিয়ার পত্রপত্রিকায় রিপোর্টও হয়েছে। মালয়েশিয়ায় অবস্থিত বাংলাদেশের হাই কমিশন এই সব খবরের সূত্র ধরে কূটনৈতিক তৎপরতা চালালে বাংলাদেশ থেকেও শ্রমিক পাঠানো সম্ভব হতো বলে মালয়েশিয়ায় প্রবাসী বাংলাদেশীরা মনে করছেন। কিন্তু হাই কমিশন আদৌ কোনো তৎপরতা চালিয়েছেন কি না, আর চালালেও নেপালের সঙ্গে পেরে উঠতে না পারার কারণ সম্পর্কে ব্যাখ্যা থাকা জরুরী বলেও তারা মত প্রকাশ করেছেন। উল্লেখ্য, মালয়েশিয়া প্রথমে বাংলাদেশ থেকে শ্রমিক আমদানি সাময়িক স্থগিত রাখা হয়েছে বলে ঘোষণা দিলেও পরে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে মালয়েশিয়ান প্রধানমন্ত্রীর বৈঠকে মালয়েশিয়ান প্রধানমন্ত্রী জানিয়ে দেন বাংলাদেশ থেকে শ্রমিক আমদানির নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার করা হবে না। সে সময় মালয়েশিয়ান ট্রেড ইউনিয়ন এ ব্যাপারে মালয়েশিয়া সরকারের ব্যাখ্যা চেয়ে বিবৃতি দেয়।

তারা এও বলে, অন্য কোনো দেশের শ্রমিক মালয়েমিয়ায় কাজ করতে পারলে বাংলাদেশের শ্রমিকের ক্ষেত্রে নিষেধাজ্ঞা বৈষম্যমূলক পদক্ষেপ। মালয়েশিয়ান মিডিয়ার সূত্রে পাওয়া ওই খবর পরে ঢাকার জাতীয় দৈনিকেও প্রকাশিত হয়। তখনো এ নিয়ে কোনো কূটনৈতিক তৎপরতার খবর পাওয়া যায় নি। বাংলাদেশের প্রতি মালয়েশিয়ার এই বৈরি মনোভাব থাকলেও বাংলাদেশ সরকার কিন্তু মালয়েশিয়ান কোম্পানীর প্রতি অনেক বেশী সদয়। যে কারণে সকল নিয়মনীতি উপেক্ষা করেই বাংলাদেশে মেশিন-রিডেবল পাসপোর্ট তৈরি ও ভিসা প্রবর্তনের কাজ দেয়া হয়েছে বিতর্কিত মালয়েশিয়ান IRIS কোম্পানিকে।

গত ৫ ফেব্রুয়ারি কোম্পানিটি মালয়েশিয়ায় এই কার্যাদেশ পাওয়ার ঘোষণা দিয়েছে বলে মালয়েশিয়ার পত্রপত্রিকায় খবর বেরিয়েছে। বিভিন্ন মহলের প্রতিবাদ এবং মিডিয়ার তুমুল সমালোচনা উপেক্ষা কেন সরকার ৫২৬১.৪৭ কোটি টাকার এই কাজটি ইতিপূর্বে অন্যদেশে কালো তালিকাভূক্ত হওয়া মালয়েশিয়ার আইরিশকেই দিয়েছে তা অনেক প্রশ্নের জন্ম দিয়েছে। ধারণা করা হচ্ছে এর পেছনে যুক্তরাষ্ট্র প্রবাসী এক ক্ষমতাধরের হাত রয়েছে। কারণ আইরিশ হচ্ছে ডাটা এজ লিমিটেড এবং পোরিশ সিকিউরিটি প্রিন্টিং ওয়ার্কস এর একটি যৌথ উদ্যোগ। হায়রে আমাদের দেশপ্রেম! এ যেন- মেরেছিস কলসীর কানা, তাই বলে কি প্রেম দেবো না? ------------------------------------------------------------------------------- পূর্ববর্তী পোস্ট: প্রধানমন্ত্রীর ব্যর্থ সফর।

জনশক্তি রপ্তানির জন্য কুয়েতের বন্ধ দরোজা খুলে নি। ২০০৯ সালে কুয়েতে গেছেন মাত্র ১০ জন শ্রমিক।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।