h
উত্থান আর পতন এ নিয়েই যেন বিশ্বের রাজনীতি যুগ যুগ ধরে চলে আসছে। হাজার বছর আগের প্রবল পরাক্রমশালী রোমান সম্রাট কি ভেবেছিলেন যে তার সম্রাজ্য ভেঙ্গে খান-খান হয়ে যাবে? অথবা কয়েকশত বছর আগেও কি মার্কিনিরা বুঝেছিলো তারা বর্তমান বিশ্বে নিরঙ্কুশ আধিপত্য বিস্তার করবে? না, ভাবেনি। ভাবেনি সেই জাপানি জেলে পরিবারটি বা কোরিয়ান কৃষকটি,এই মাত্র কয়েক দশকের ব্যাবধানে তাদের পৌত্রগণ বিশ্ব অর্থনীতির একাংশ নিয়ন্ত্রন করবে। হয়তো সেই একই স্বপ্ন এখন ভিয়েতনামিজ দোকানদার বা চীনা রাখালটি দেখছে। দেখছে হয়তো ভারতীয় সেই চা বিক্রেতাও।
তারা যদি স্বপ্ন দেখতে পারে, আমরা কেন পারবোনা? অবশ্যই পারবো, পারতেই হবে আমাদের। কিন্তু এজন্য দরকার সঠিক পরিকল্পনা ও তার বাস্তবায়ন। তা কিভাবে হতে পারে? এজন্য চাই রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা, অর্থনৈতিক সমৃদ্ধি, সামরিক শক্তি ও দেশপ্রেম।
রাজনৈতিক স্থিতিশীলতাঃ প্রথমত আমাদের যাহা প্রয়োজন তাহা হইল একটি স্থিতিশীল সরকার ও পরিকল্পনার দ্রুত বাস্তবায়ন। বর্তমান তথাকথিত এই শুভঙ্করের ফাঁকিতে পূর্ণ গনতান্ত্রিক পদ্ধতিতে তাহা সম্ভব নয়।
তাই আমাদের অতি দ্রুত একটা স্থিতিশীল সরকার গঠনের প্রয়াস চালাইতে হইবে। যেই সরকার কিনা উন্নয়ন পরিকল্পনার বাস্তবায়ন অতি দ্রুত করিতে পারে আর তরুন প্রজন্মের পূর্ণ আস্থা রহিয়াছে যেই সরকারের ওপর। সেইখানে থাকবেনা কোন দুর্নিতিবাজ আমলা অথবা ঘুষখোর কেরানী বা পুলিশ। আইন করা হইবে, যাহারা দুর্নিতি করিবে তাহাদের প্রকাশ্যে ফাঁসি ও সম্পত্তি বায়েজাপ্ত। ছাত্র রাজনীতি বলিয়া কিছুই থাকিবেনা।
থাকিবে ছাত্রদের জন্য নির্বাচন কিন্তু তা কোন রাজনৈতিক দলের লেজুরবৃত্তি বিবর্জিত। সরকারের বিরোধীতাকারীদের ওপর দমন চালানো যাবেনা, উল্টা তাদের ভালো সুযোগ সুবিধা দিয়ে হাতে রাখা হবে। বুদ্ধিজীবিদের নির্দেশ দেয়া হবে সরকারের পক্ষে প্রচারণা চালানোর জন্য (আশা করা যায় এধরনের চামচামীপূর্ণ কাজে বুদ্ধিজিবীরা অগ্রগামী ভূমিকা পালন করিবেন)। দেশের পুলিশ ও গোয়েন্দা বাহিনীকে আরও শক্তিশালী করা হইবে। পুলিশকে সেনাবাহিনীর সমতুল্য সুযোগ-সুবিধা দেয়া হবে যাতে তাহারা দুর্ণিতির প্রয়াস না পায়।
এনএসআই-কে যুক্তরাস্ট্রের এফবিআই এর মতন করিয়া ঢালিয়া সাজানো হইবে ও প্রয়োজনে বিদেশে ট্রেনিং-এও পাঠাইতে হইবে। এনএসআই এর জন্য সেরা ও চৌকস তরুনদের নিয়োগ দেওয়া জরুরি ও তাহাদের রেগুলার মাসুদ-রানার বই ফ্রি পড়িতে দেয়া হইবে । পূর্বের ঘুষখোর অফিসারগুলোকে সকলের সামনে কৌপিন পড়াইয়া সারাদেশে ম্যারাথন দেওয়ানো যাইতে পারে ও শৃংখলা ভঙ্গকারীদের ক্রসফায়ার! ডিজিএফআই কে সাজানো হইবে ইসরায়েলের মোসাদের মতন করিয়া (শত্রুদের বিরুদ্ধে লড়ার সহজতম উপায় হইল তাদের কৌশল রপ্ত করা)।
এইবার পররাষ্ট্র মন্ত্রনালায়কে ধরা হইবেক। পূর্বের সকল কূটনৈতিক গুলিকে দাওয়াত দেয়া হইবে বিশাল একটা কক্ষে।
ইহারপর রুমে ব্যাঘ্র ছেড়ে দেয়া হইবে নাকি গুলি করিয়া হত্যা করা হইবে, সেইটা বিবেচনার ব্যাপার !পররাষ্ট্র নীতির আমুল পরিবর্তন করা হইবে। এইক্ষেত্রে অর্থনৈতিক সমৃদ্ধি আসিবার আগ পর্যন্ত সুবিধাবাদী অবস্থানে থাকাটাই শ্রেয়। সকলেই আমাদের বন্ধু, আমরা কাহারোই শত্রু নই। বিশেষত ভারতের সাথে খুবই বন্ধুত্বপূর্ণ (!) সম্পর্ক রাখা হইবে নিজেদের প্রয়োজনে আর ভারতের প্রধানমন্ত্রীকে ঢাবি হইতে ডক্টরেট ডিগ্রী দেয়ার ব্যবস্থা পাকা করা হইবেক (শয়তানি হাসির ইমো)। এদিকে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রকে সেইন্টমার্টিন দ্বীপ নৌবন্দর ব্যাবহারের জন্য ইজাড়া দেয়া হইবেক।
তাহাতে ভারত ও মিয়ানমারের সহিত সমুদ্রসীমা লইয়া কূটনৈতিক লড়াইও লোপ পাইবে আর বাংলাদেশ বঙ্গোপসাগরের অলিখিত একক মালিকানা পাইবে। যাহারা মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের উপস্থিতি বিরোধীতা করিবে (বিশেষত হুজুর ও তথাকথিত বামপন্থি শ্রেনী) তাহাদের মার্কিন গ্রিন কার্ডের মুলা ঝুলাইয়া নিষ্ক্রান্ত করা হৈবে। তাহাতেও নিস্ক্রান্ত না হইলে যুক্তরাষ্ট্রে পাঠাবার নাম করিয়া হেইতি ও বাহামায় নির্বাসন দেয়া হৈবে ।
মৃতপ্রায় সার্ককে ধরিমাছ না ছুই পানির মতন এড়াইয়া গিয়া আসিয়ানের সাথে জোট বাধিতে হৈবে, ইউরো ও আমেরিকার মানবাধিকার সংগঠন গুলির নিকট দেশকে আরও গ্রহণযোগ্য করিয়া তুলিবার জন্য দেশে ধর্ম লইয়া বাড়াবাড়ি প্রদানকারীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির ব্যাবস্থা করা হইবে। মুসলমানদের জন্য তাহাদের আইন-কানুন (মালয়শিয়ার মতন), হিন্দুদের জন্য হিন্দু আইন,বৌদ্ধ ও খৃস্টানদের জন্য নিজ-নিজ আইন প্রনয়ন করা হইবে।
আর যাহারা এত ভেজালে না গিয়ে নাস্তিক থাকিতে চান, তাহাদের জন্য থাকিবে প্রচলিত আইন। অর্থাৎ কে কোন ধরনের আইন বাছিয়া লইবেন তাহা নিজেদের ওপরেই বর্তাইবে, রাষ্ট্রের তাহা লইয়া মাথা ব্যাথার কোন কারন নাই। ইহার পরেও দেশে কোন জঙ্গি সংগঠনের সন্ধান পাওয়া গেলে তাহাদের কঠোর হস্তে নির্মূল করা হইবে। এক্ষেত্রে এনএসআই গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করিতে সক্ষম।
মোটকথা আগামী পাচবছরের মধ্যে দেশের রাজনৈতিক অবস্থা চরম স্থিতিশীল করা হইবে আর এর পরেই পরবর্তি পদক্ষেপ হইবে অর্থনৈতিক সমৃদ্ধি।
(পরবর্তি খন্ড শীঘ্রই আসিবে…...)
পরাশক্তির পথে বাংলাদেশ -২
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।