এবারের বইমেলায় "রাকিবুল হাসান" এর ১ম বই "এখনও মুর্তি হতে পারি নি" ঘাস ফুল নদী থেকে প্রকাশিত হয়েছে। আমার ভাল লেগেছে....আপনারা দেখতে পারেন। পাওয়া যাচ্ছে "ঘাস ফুল নদী" ও "শিরদাড়া"র স্টলে
বাঘ
কারণ তার সামনে আর কোন খাবার ছিল না,
আর যেহেতু তার পেটের ভিতর একটা বাঘ ছিল -
তাই সে নিজের একটা হাত খেয়ে শীতটা পার করে দিল।
কিন্তু যেহেতু শীতকাল ঘুরে ঘুরে আসে আর তার ক্ষুধাও অসীম,
তাই সে পরবর্তী শীতে আরেকটি হাত খেয়ে নিল।
এভাবে পর্যায়ক্রমে এক একটি শীতে
সে তার চোখ, পা, জিহ্বা সহ
বিভিন্ন অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ খেয়ে বেঁচে থাকল।
কিন্তু তার পরেও বাকি রইল আরও শীতকাল,
আর তার পেটের ভিতরে রইল দীর্ঘ ক্ষুধা।
তখন তার পেটের ভিতর থেকে সেই বাঘটি বেরিয়ে এল
আর গিলে ফেলল তার দেহাবশেষ।
কারণ তার সামনে আর কোন খাবার ছিল না,
আর যেহেতু তার পেটের ভিতর আসন্ন ক্ষুধা ছিল -
তাই সে পরবর্তী শীতের জন্য ঢুকে গেল আরেকটি পেটে।
এখনও মূর্তি হতে পারিনি
আপনার সুন্দর পা জোড়া
চেটে দেবার দুঃসাহস আমার নাই,
আর লেজ থাকলে নেড়ে দেখাতাম -
আমি ঠিক কতটা খুশি।
তুমুল করতালির সাথে দিতে পারি হর্ষধ্বনি,
কিন্তু ভয় হয় -
আপনার বরফের পৃথিবী
গলে যেতে পারে শব্দের উষ্ণতায়।
তাই আমি নিশ্চুপ দাঁড়িয়ে আছি,
বুকের ভেতর ঢেউ তোলে
ফূর্তির ফেনিল নদী।
এভাবে দাঁড়িয়ে থাকতে পারি অনন্তকাল,
যদি অভয় দেন -
দ্ইু একবার নড়েচড়ে শুধু
পায়ের ভর ঠিক করে নেব।
কারণ?
কারণ তো আপনি জানেন,
এখনও আমি ঠিক মূর্তি হতে পারিনি।
এখনও আমি ঠিক মূর্তি হতে পারিনি,
তাই মাছের ডিমের মতো নিযুত স্বপ্ন নিয়ে
অনাগত ইতিহাসে সাঁতরে বেড়াই।
বইটির ফ্ল্যাপ থেকে:
বিশ্বের বিরুপতা যাকে নিরাশার অতলে ছুঁড়ে দেয়, যে সঞ্চয় করতে পারে না স্পৃহার কোন কণা-আমূল ভেঙে পড়া তেমন এক মানসের দেখা মেলে তার কাব্যচরাচরে; যে মানস একই সাথে প্রাচ্য আর পাশ্চাত্য গুণে মাখামাখি, এবং ডাক দেয় ঘুমন্ত ইস্রাফিলের শিঙা নিজেই ফুকে দিতে- ধ্বংসকে সম্পূর্ণতা দিতে; নিহিলিস্ট মনের চূঁড়া এখানে সবচেয়ে উচু হয়ে এমনকি আকাশ ফুঁড়ে উঠে গেছে- এক স্ববিরোধী অলৌকিক ঈশ্বরের দিকে, তর্করক্তে ভাসিয়ে দিতে আকাশের প্রাচীন নির্বাক সূর্যের অনার্য সন্ধ্যাকে, যাকে গোধূলি বলি আমরা, যেখান থেকে অন্ধকার যাত্রার অর্থ আমাদের ঘুম নয়, স্বপ্ন নয়, রসাতলেই তলিয়ে যাওয়া, ফের জেগে ওঠা একই সমাধানরিক্ত সূর্যের তলে, এবং নিজের অনাগত সন্তানের কাছে ক্ষমাপ্রার্থনায় বসা, পৃথিবীতে তার অনাকাঙ্খিত আগমন অনুমোদনের অপরাধে, এবং সব আশা ত্যাগের শর্তে যাকে জন্মাতে হয়, জন্মানো সন্তানের জন্য গৃহের বাইরে থাকে উন্মূখ ভয়াল বাঘ, এবং জনক হিসেবে জাপন করে যাওয়া কেন্নোর জীবন নিজেরই পিতা-প্রপিতা মতো।
আর রাকিবুল হাসানের জানালা দিয়ে বাইরের পৃথিবী দেখা, তাই, দাবি করে পাঠকের স্পর্ধা।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।