শৈশবে প্রায় রাতেই কিছু না কিছু স্বপ্ন দেখতাম
আমাদের ভাঙা ঘরটি ভেঙে গড়েছি ইট-পাথরে
বাবার সামান্য রোজগারী জীবনকে দিয়েছি বিদায়ী ছুটি;
অথবা মায়ের জীর্ণবস্ত্রগুলো রেখেছি নিজস্ব মিউজিয়ামে
আর ভাইবোনের হাসিমাখা মুখ দেখাই যেন আমার রোজকার অভ্যাস।
অথচ আজ আমার এই সব স্বপ্নেরা কেবলই ধরাছোঁয়ার বাইরে
এখনো রাতের প্রহর শেষে ঘুম ভেঙে দেখি
আমার ভাঙা ঘরটির ক্রমশই নাজেহাল দশা;
দুয়ারে দাঁড়িয়ে আছে নোবেল বিজয়ী কিস্তি অথবা কোন পাওনাদার;
বাবাতো কবেই নিয়েছেন বিনা চিকিৎসায় তার চিরবিদায়ী ছুটি।
অভাবের সংসারের ঘানি টেনে টেনে মা এখন অর্ধ শয্যাশায়ী
অল্প দামের কিছু উচ্চ রক্তচাপের ঔষধ আর সান্ত্বনা নিয়ে;
কোন ভাবে বেঁচে আছে চিকিৎসা বঞ্চিত এক হতভাগী নারী হয়ে।
অথচ আমি নাকি মফস্বলের এক সাহসী নির্ভীক সাংবাদিক!
সমাজের সুখ-দুঃখের কথা কাগজের বুক জুড়ে লেখি।
অথচ দিন শেষে রাতের আঁধারে ঘরে ফিরে দেখি;
ুধা নামের ডাকাতেরা শ্বাসরুদ্ধকর ভাবে জিম্মি করে রেখেছে সবাইকে।
এইসব বিভৎস দৃশ্যে লজ্জায় আমার মাথা মাটি ছুঁয়ে যায়
আমি নাকি লেখি মানুষের কত শত জীবনকথা;
অথচ কে লিখবে আমার এই দুঃখময় জীবনচিত্র কাহিনী
নিঃসঙ্কোচে কে বাড়াবে হাত একটু সহানুভূতির।
বুক জুড়ে এখন আমার কেবল রাশি রাশি দীর্ঘশ্বাস
কোথাও কেউ নেই; চারদিকে শুধু শূন্য মরুভূমি।
এখন আমার বড় ঘৃণা হয় নিজের পরিচয় দিতে
নিজের ভেতরে রেখে নিজের গড়া জীবন্ত মমি;
মৃত মানুষের মত মফস্বলে বেঁচে থাকা এক কাগজের মানুষ আমি।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।