লেখালেখির অভ্যাস নেই, তবুও লিখতে ইচ্ছা করে !
“যে দশটি কাজ একজনকে ইসলাম থেকে বের করে দেয়”
প্রথম, আল্লাহর সাথে কাউকে শরীক করে ইবাদত করলে। আল্লাহ তাআলা বলেন,
“আল্লাহ তাআলা (এ বিষয়টি) ক্ষমা করবেন না যে, তাঁর সাথে (কোন রকম) শরীক করা হবে, এ ছাড়া অন্য সকল গুনাহ তিনি যাকে ইচ্ছা করেন তাকে ক্ষমা করে দিতে পারেন” (সূরা নিসাঃ ১১৬)
আল্লাহ তাআলা আরো বলেন,
“মূলত যে কেউই আল্লাহর সাথে শরীক করবে, আল্লাহ তাআলা তার উপর জান্নাত হারাম করে দিবেন, আর তার (স্থায়ী) ঠিকানা হবে জাহান্নাম; এ জালেমদের (সেদিন) কোন সাহায্যকারীই থাকবে না”। (সূরা মায়িদাঃ৭২)
যারা প্রাণী কুরবানী করে কোন জ্বিন বা কবরে শায়িত মৃত মানুষের উদ্দেশ্য করে সেও এই প্রকার শিরকে লিপ্ত হবে।
দ্বিতীয়, যে কেউ তার নিজের এবং আল্লাহর মধ্যে কোন মাধ্যম ঠিক করে নিবে, সেই মাধ্যমের নিকট প্রার্থনা করবে, সেই মধ্যমের উপর ভরসা করবে যেভাবে ভরসা একমাত্র আল্লাহ তাআলার উপর করা উচিত তাহলে সে আল্লাহর বিরুদ্ধে নিন্দা করল(আলেমদের ঐক্যমত অনুযায়ী)।
তৃতীয়, বহু গডের অনুসারীদের(ইহুদী, খ্রিস্টান, মূর্তিপূজারী অর্থাৎ যারাই একত্ববাদে অবিশ্বাসী) অবিশ্বাসীরুপে মনে না করলে অথবা তারা সত্যিই অবিশ্বাসী কিনা সে বিষয়ে সন্দেহ পোষণ করা কিংবা তাদের এই বহু গডের বিশ্বাসকে সঠিক বলে যে কেউ মনে করবে তাহলে সে নিজেই কুফরী করল বা অবিশ্বাসীদের মতো কাজ করল।
চতুর্থ, যদি কেউ আল্লাহ কর্তৃক রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের অর্পিত দেখানো জীবন ব্যবস্থার চেয়ে অন্য কোন জীবন ব্যবস্থা বেশী সঠিক বা রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের উপর অর্পিত বিচার ব্যবস্থার চেয়ে অন্যান্য বিচার ব্যবস্থাকে উত্তম বলে মনে করল তাহলে সে অবিশ্বাসীদের মতো কাজ করল। এই বিষয়টাকে এভাবেও বলা যায় যেমন, রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের উপর নাযিলকৃত নিয়ম ও আইন-কানুন থেকে মিথ্যা গড কর্তৃক বা মানুষের বানানো নিয়ম ও আইন-কানুনকে বেশী পছন্দ করা। এই রকম ধারণা অবিশ্বাসীদের ধারণার সামিল।
পঞ্চম, রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম যা কিছু নিয়ে এসেছেন যদি কেউ তা অপছন্দ করে তাহলে সে অবিশ্বাসীদের মতো কাজ করল যদিও সে কাজটি করে থাকুক না কেন।
ষষ্ঠ, কেউ যদি রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের উপর অর্পিত জীবন ব্যবস্থা তথা ইসলামে কোন বিষয় নিয়ে কিংবা কোন পুরস্কার ও শাস্তি নিয়ে হাসি-তামাশা করল, কৌতুক পূর্ণ কথা বললো তাহলে সে অবিশ্বাসীদের ন্যায় কাজ করল।
আল্লাহ তাআলা বলেন,
“তুমি তাদের বলো, তোমরা কি আল্লাহ তাআলা, তাঁর আয়াত সমূহ ও তাঁর রাসূলকে বিদ্রুপ করছিলে? তোমরা দোষ ছাড়ানোর চেষ্টা করো না, একবার ঈমান আনার পর তোমরা পুনরায় কাফের হয়ে গিয়েছ” (সূরা তওবাঃ ৬৫-৬৬)
সপ্তম, যাদুর চর্চা করা হচ্ছে অবিশ্বাসীদের কাজ। এই প্রকার যাদুমন্ত্র মানুষের মধ্যে একে অপরের প্রতি হয় ঘৃণা কিংবা ভালোবাসা তৈরী করে দেয়। যে কেউ এই ধরণের যাদু চর্চা করবে বা এই রকম যাদুর প্রতি সন্তুষ্ট থাকবে সে অবিশ্বাসীদের ন্যায় কাজ করল।
আল্লাহ তাআলা বলেন,
“সেই দু’জন ফেরেশতা (কাউকে) ততোক্ষণ পর্যন্ত এ বিষয়ে শিক্ষা দিতো না, যতোক্ষণ পর্যন্ত তারা (এ কথাটা) তাদের বলে না দিতো, আমরা তো হচ্ছি (আল্লাহর) পরীক্ষামাত্র, অতএব (কোন অবস্থায়ই) তুমি (এ বিদ্যা দিয়ে আল্লাহ তাআলাকে) অস্বীকার করো না” (সূরা বাকারাঃ১০২)
অষ্টম, মুসলিমদের বিরুদ্ধে বহু গডে বিশ্বাসীদের সাহায্য এবং সহযোগীতা করা অবিশ্বাসীদের কাজ। যে কেউ তা করবে সে অবিশ্বাসীদের ন্যায় কাজ করবে।
আল্লাহ তাআলা বলেন,
“তোমাদের মধ্যে কেউ যদি তাদের(ইহুদী ও খ্রিস্টানদের) কে সাহায্যকারী ও প্রতিরক্ষাকারী হিসেবে গ্রহণ করে তাহলে সে তাদের মধ্যেই গণ্য হবে। আল্লাহ কখনো জালিম সম্প্রদায়কে হিদায়েত দান করেন না” (সূরা মায়িদাঃ ৫১)
নবম, যদি কেউ বিশ্বাস করে কিছু ব্যক্তি রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের উপর অর্পিত জীবন বিধান তথা আইন কানুন থেকে মুক্ত যেমনটি মুসা আলাইহি ওয়া সাল্লামের সময় খিজির এর ক্ষেত্রে ঘটেছিল, তাহলে সে ব্যক্তি একজন অবিশ্বাসী।
দশম, আল্লাহর দ্বীন থেকে দূরে সরে যাওয়া, ইসলাম সম্পর্কে শিক্ষা গ্রহণ না করা বা তা জীবনে বাস্তবায়ন না করা অবিশ্বাসীদের কাজ।
আল্লাহ তাআলা বলেন,
“তার চাইতে বড় যালেম আর কে হতে পারে যে ব্যক্তিকে তার মালিকের আয়াতসমূহ দ্বারা নসীহত করা হয়, অতপর সে তা থেকে মুখ ফিরিয়ে নেয়, অবশ্যই আমি নাফরমানদের কাছ থেকে প্রতিশোধ নিবো” ( সূরা আস-সাজদাঃ২২)
এই উপরোক্ত কাজগুলো কৌতুক করে, মজা করে, সিরিয়াসভাবে বা ভয় বিহীন অবস্থায় করা হোক না কেন তাতে কোন পার্থক্য নেই। অর্থাৎ সে অবিশ্বাসীদের ন্যায় কাজ করবে তবে শুধুমাত্র তাদের ছাড়া যাদেরকে তাদের ইচ্ছার বিরুদ্ধে জোর করে করানো হবে।
উপরোক্ত সব কাজগুলো খুবই বিপদজনক কাজ যা আল্লাহকে অসন্তষ্ট করে দেয় আর আমাদের মুসলিমদের মাঝে অনেককেই প্রায়ই উপরোক্ত কাজগুলো করতে দেখা যায়। একজন মুসলিমকে অবশ্যই এসব কাজ থেকে সতর্ক হতে হবে।
আমরা আল্লাহর নিকট আশ্রয় প্রার্থনা করি সে সকল কাজ থেকে, যেসকল কাজ আল্লাহকে অসন্তুষ্ট করে দেয় এবং যে কাজগুলোর ফলে জাহান্নামে শাস্তি ভোগ করতে হবে। আল্লাহ তাআলা আমাদের হিফাজত করুন।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।