স্বাধীনতার পর এক জায়গায় বীরঙ্গনাদের নাম ঠিকানা লেখা হচ্ছে। সেখানে উপস্থিত হলেন শেখ মুজিবুর রহমান। একজনকে বাবার নাম জিজ্ঞাসা করা হচ্ছে। ওনি কিছুতেই বলতে চাচ্ছেন না। বঙ্গবন্ধু সেটা দেখলেন।
অনেক অনুরোধের পরও সেই বীরঙ্গনা বাবার নাম বলতে চাচ্ছেন না।
বঙ্গবন্ধু সেখানে গিয়ে বললেন, আর জিজ্ঞাসা করতে হবেনা। লেখ ওর বাবার নাম শেখ মুজিব।
দেশও, দেশের মানুষকে এইভাবে আকড়ে ধরা, নিজের করে ধরা মানুষের বুকে যখন গুলি চালানো হয় তখন এমনকি তার একশো বছর পরও সেই খুনিদের প্রতি মমত্ববোধ আসার কথা না। আসা সম্ভব না।
আজ যখন বঙ্গবন্ধুর হত্যাকারীর পাঁচজনের যখন ফাঁসি হলো তখন মানুষের দায়মুক্তি যেমন হয়েছে, কলংক মোচন যেমন হয়েছে তেমনি আনন্দও না হওয়ার কথা না।
তবে আমি রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রনোদিত আনন্দের কথা বলছি না।
উল্লাস না হওয়ারও কথা না। ভেতরে ভেতরে সবারই উল্লাস হওয়া স্বাভাবিক। খুব স্বাভাবিক চিৎকার করে ওঠা সেই মানুষের জন্য, যে মানুষ জীবীতকালে এই মাটির সঙ্গে মিশে হয়ে গিয়েছিলেন মাটির মতো।
মৃত্যুর পর এ মাটি যার সঙ্গে মিশে মাটি হয়ে গেছে তার মতো।
যিনি একা আগলে দাঁড়িয়েছিলেন একটা দেশকে প্রতিপক্ষ করে। বানিয়েছেন নতুন এক দেশ। যে দেশে আমরা পরাধীন নই। স্বাধীন।
এতোটাই স্বাধীন যে শেখ মুজিবকেও গালি দিতে পারি নির্ধিদ্বায়। নিঃঙ্কোচে।
কাল ব্ঙ্গবন্ধুর হত্যাকারীদের ফাঁসির রায় কার্যকর হওয়ার পর থেকে দেশ জুড়ে এক ধরণের উল্লাস লক্ষ্য করা যাচ্ছে। এ ক্ষেত্রে অনেকে বিষয়টাকে মানবিক দৃষ্টিকোন থেকে দেখছেন। কজনের ফাঁসি হয়ে গেলো আর মানুষ আনন্দ করছে!
এ উল্লাস অমানবিক?
আমি ভাবিনা, এ উল্লাস ক'জন মানুষের মৃত্যুর বিপরীতে উল্লাস।
আমি মানি, এ উল্লাস কিছু বিশ্বাসঘাতকের অর্থহীন এই পার্থিব জন্মকে উপহাস করে এবং জন্মকালের হাস্যকর পরিসমাপ্তি দেখে উল্লাস।
যারা বুঝেনি, পৃথিবী আর যাই হোক বাবার বুকে গুলি চালানোকে বীরত্ব বলবে না।
আর যাই হোক, প্রকৃতি কোনো বাবা হন্তাকারককে বেশিদিন আগলে রাখবেনা।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।