আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

থার্ড পারসন সিঙ্গুলার নাম্বার ফ্যান্টাসি

অন্যায়ভাবে সংঘটিত সকল বিচার বহির্ভূত হত্যাকান্ডের তীব্র প্রতিবাদ জানাই । ।
থার্ড পারসন সিঙ্গুলার নাম্বার মুক্তি পায় গত ডিসেম্বর মাসের এগার তারিখ। মুক্তি পাওয়ার আগেই এ ছবি নিয়ে বেশ হৈচৈ তৈরি হয়। এই হৈচৈ তৈরি হওয়ার মূলে ছিল এ ছবির অভিনব বিজ্ঞাপনী প্রচারণা।

ইমপ্রেস টেলিফিল্ম এর প্রযোজক এবং রেডিও ফূর্তি এর মিডিয়া পার্টনার হওয়াতে মূল ধারার মিডিয়াগুলো খুবই স্বাভাবিকভাবে এ ছবির পক্ষে প্রচারণা চালায়। এছাড়াও টি-শার্ট ছাপিয়ে ও সিনেমার অভিনেতা-অভিনেত্রীদের (এদের মধ্যে তপু গায়ক হিসেবেও স্টার – যার রয়েছে আলাদা ইমেজ) দিয়ে দীর্ঘ প্রচারণা চালানো হয়। এভাবেই এই সিনেমা সম্পর্কে একটি প্রারম্ভিক আগ্রহ তৈরি করা হয় দর্শকদের মধ্যে। এ ছবির প্রোডাকশনে বিভিন্ন মিডিয়া মাধ্যমের হর্তা-কর্তারা জড়িয়ে আছেন- যাদের সিনেমা হিট হওয়ার সঙ্গে ব্যবসায়িক লাভালাভ জড়িত। প্রত্যাশিতভাবেই এ সিনেমা দেখতে দর্শকদের বেশ ভিড় হচ্ছে।

মোস্তাফা সারোয়ার ফারুকীর এটা তৃতীয় ছবি। এর আগে ব্যাচেলর এবং মেইড ইন বাংলাদেশ নামে দুটি ছবি বানিয়েছিলেন। এ সিনেমার আলোচনায় ঢোকার আগে সিনেমা গল্পটা সংক্ষেপে বলে নিই- রুবা হক এক ভঙ্গুর পরিবারের মেয়ে। তার মা বাবাকে ছেড়ে পুরনো প্রেমিকের কাছে চলে গেছে। সে মুন্নার সঙ্গে লিভ টু গেদার করতো।

ঘটনাচক্রে মুন্নাকে জেলে যেতে হয়। সুযোগ বুঝে মুন্নার বাড়ির লোকজন তাকে তাড়িয়ে দেয়। সে তার মার বাড়িতেও মানিয়ে নিতে পারে না। সে বাড়ি থেকেও বিতাড়িত হয়। ভয়াবহ বিপদে পড়ে সে।

কোথায় যাবে? পরিচিত এক বড় ভাইয়ের মাধ্যমে এক বিজ্ঞাপনী সংস্থায় চাকরি নেয়। কিন্তু তবু তার বাসা সমস্যার সমাধান হয় না। হুট করে তার বাল্যপ্রেমিক তপুর কথা মনে পড়ে। তপু এখন বিখ্যাত গায়ক। তপু তাকে বসুন্ধরার প্ল্যাটে উঠায়- ফ্ল্যাটের উচ্চ ভাড়া সেই পরিশোধ করে।

তপু তাকে আহ্ববান করে, সেও সাড়া দিতে চায়। কিন্তু তখন তার আরেক সত্তা তাকে বারণ করে। সে দোলাচলে পড়ে। এদিকে মুক্তি পায় মুন্না। এই মানসিক দ্বন্ধের টানাপোড়েনে এই ছবি এগিয়ে চলে।

এ হচ্ছে মোটামুটি কাহিনী। যেকোনো শিল্প মাধ্যমের সঙ্গে বাস্তবতার সম্পর্ক জটিল। বাস্তবতা কিভাবে শিল্প মাধ্যমে পুনরুৎপাদিত হয় তা নিয়ে বিতর্কের শেষ নেই। সিনেমার সঙ্গে বাস্তবতার সম্পর্ক আরো নিকটবর্তী- সাহিত্য বা চিত্রকলার চাইতে। কারণ সিনেমায় বাস্তবতা পুনরুৎপাদিত হয় ক্যামেরার মাধ্যমে।

যা অনেক বেশি নির্দিষ্ট। তবু সিনেমায় এই বাস্তবতা পুনরুৎপাদনের ক্ষেত্রে যাকে আমরা বলি সিনেমাটিক রিয়েলিটি তার বিভিন্ন ঘরানা দাঁড়িয়েছে- বাস্তবতার উপকরণ চয়ন, ক্যামেরা স্টাইল, এডিটিং পদ্ধতি এসবের ওপর ভর করে। থার্ড পারসন সিঙ্গুলার নাম্বারেও প্রথম দিকে ক্যামেরা চালানো হয় ডকুমেন্টারি সিনেমার স্টাইলে- ডিরেক্ট সিনেমার ঘরানায় এবং বিষয় প্রকাশের মাধ্যমেও এক ধরনের চমক হাজির করা হয়। প্রথম কয়েকটি দৃশ্য খেয়াল করলেই ব্যাপারটা বুঝা যাবে- একটি মেয়ে হেঁটে যাচ্ছে, একা, গলি ধরে। মেয়েটির চেহারায় আতংক ফুটে উঠেছে।

গলি ধরে হাঁটতে হাঁটতে সে থমকে দাঁড়ায়। কারণ উল্টো পাশ থেকে একটি ছেলে মোবাইলে কথা বলতে বলতে আসছে। ঘুরে চলে আসতে গিয়ে মেয়েটি একেবারে ক্যামেরার মুথোমুখি পড়ে। সেখানেও বাধা- চোখে ফুটে ওঠে তীব্র ভয় (মেয়েটি যেন হুট করে তাকায় দর্শকের দিখে, যার অধিকাংশই পুরুষ এরকম কি তার মনে হয়? হতে পারে- মোট কথা চরিত্র নিজেই যেন ক্যামেরা সম্পর্কে সচেতন হয়ে ওঠে)। আবার ঘুরে মেয়েটি মোবাইলে কথা বলা ছেলেটির হাত থেকে কোনোমতে বাঁচার জন্য দৌঁড়ায়।

পুরুষের হাত খেকে বাঁচার জন্য সে থানায় আশ্রয় নিতে যাবে তখনই হাজির হয় সীমা চৌধুরী। সীমা চৌধুরী তাকে থানায় যেতে বাধা দেয়। ‘আমি সীমা চৌধুরী, কোথায় যাচ্ছ? থানায়? তুমি জান না আমাকে থানার ওসি তার নিজ রুমে ধষর্ণ করে মেরে ফেলেছে?’ সীমা চৌধুরী ও কথা বলেই উধাও হয়। সীমা চৌধুরী আমাদের তথাকথিত গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রের পুরষতান্ত্রিক চরিত্রের নগ্ন শিকার। আর সীমা চৌধুরী দর্শকের মস্তিকের মধ্যে বেঁচে আছে ভয়াবহ অভিজ্ঞতা নিয়ে।

দর্শকদের সবাই জানে যেকোনো সময় যেকোনো মেয়ের এরকম পরিণতি হতে পারে। এভাবেই আকাড়া বাস্তবের তথ্য থার্ড পারসন সিঙ্গুলার নাম্বারে পরিবেশন করা হয়। রুবা হকের উপস্থিতির সঙ্গীন অবস্থা বুঝাতে সীমা চৌধুরীর উপস্থিতি দুর্দান্ত কাজে দেয়। শুধু কি তাই? এর মাধ্যমে আকাড়া বাস্তবকে সিনেমাটিক রিয়েলিটিতে আত্মস্থ করা হয়। যা সিনেমার বিশ্বাসযোগ্যতাকে বাড়িয়ে দেয় কয়েক গুণ।

এই কয়েক দৃশ্যের মাধ্যমে আমরা বুঝে যাই এ এমন এক নারীর গল্প যে টিকে থাকতে চায় তার বিরূপ পরিবেশে। এ দৃশ্যের সিনেমাটিক ট্রিটমেন্টও দুর্দান্ত। যেমন প্রথম দৃশ্যে ব্যাক টু ব্যাক ক্যামেরা ব্যবহার করা হয়। এই ব্যাক টু ব্যাক ক্যামেরা স্পষ্ট করে যে, পরিচালক রুবা হককে অনুসরণ করছেণ। আর এ হচ্ছে এক মেয়ের গল্প- এক পুরুষের চোখে।

এই শটের সময় ক্যামেরা অল্প-সল্প কেঁপে উঠে। যা দৃশ্যগত ভয়-ভীতি-অস্থিরতা ক্যামেরার মতো বস্তুগত মাধ্যমেও দশ্যকদের রস আস্বাদন করায়। পরিচালকের এসব প্রচেষ্টা বাস্তবতাকেই চয়ন করার আপ্রাণ চেষ্টার নজির হিসেবে ধরা যায়। এই যে, হ্যান্ডহেল্ড ক্যামেরার ব্যবহার, ব্যাক টু ব্যাক শট, সীমা চৌধুরীর উপস্থিতি ডকুমেন্টেশনের ভাব জাগায়। এসব টেকনিক দর্শকের মধ্যে এক ধরনের ফ্যাটিশ মনোভাব [মনোবিজ্ঞানে ফ্যাটিশ মনোভাব হলো এমন মনোভাব যা পুংদন্ডের বিকল্প, মায়ের নেই বলে ধরা হয়।

আবার অনেক চলচ্চিত্র তাত্ত্বিকদের মতে চলচ্ছিত্রের জগৎ(চরিত্র, ঘটনা, প্রতিবেশ সবকিছু) প্রকৃত বাস্তবতার অনুপস্থিতিতে বিকল্প বাস্তবতা তৈরি করে আর সাধারণভাবে প্রায় মূলহীন কিছুর অতিমূল্যায়নই ফ্যাটিশ মনোভাব] জাগায়, যা দর্শক চৈতন্যে সিনেমাটিক রিয়েলিটি সত্য আকারে হাজির করার চেষ্টা করে। থার্ড পারসন সিঙ্গুলার নাম্বারে কিয়ৎক্ষণ পরেই তা ভানে পরিণত হয়। ভান এজন্য বলা যে, পরে যেভাবে গল্প বিকশিত হয় তা আর রুবা হকের গল্প থাকে না। রুবা হক হয়ে ওঠের পরিচালকের ইচ্ছাধীন উপকরণ, তার পজেক্টের অংশ। যেমন কিছুক্ষণ পরেই আমরা দেখতে পাই এক গ্রোটেস্ক সিকুয়েন্সের।

যে দৃশ্যে বাবা সামন্তরূপীয় কায়দায় চেয়ারে বসে ছেলের লিভ টু গেদার করার আবদার শুনে। মেনেও নেন। বেশ উদার চিত্ত বাবা বলতেই হবে! দৃশ্য দেখানো হয় ফ্লাশব্যাকে। এরকমের গ্রোটেস্ক দৃশ্য তখনো সিনেমা শুরুর স্পিরিটের সঙ্গে তাল মিলিয়ে চলার চেষ্টা করে। এর পরেই দেখানো হয়- রুবার বাড়ি খোঁজা।

সঙ্গে সঙ্গে ক্যামেরাও পুরনো ঢাকার অপরিসর অলিগলি পাকস্থলির উপর চোখ বুলিয়ে যায়। একা কোনো মেয়েকে পেলে কোনো বৃদ্ধ পুরুষও কেমন চটাং করে সুযোগ নেওয়ার জন্যে ওঁৎ পেতে থাকে তাও দেখানো হলো। এ সময়ে রুবা ওই বৃদ্ধকেই কৌশলে ব্যবহার করে তার থাকার বন্দোবস্ত করে নেয়। এ সময় মনে হচ্ছিল এই রুবা নিজের সংকট নিজেই মোকাবিলা করার জন্য যথেষ্ট। কিন্তু এরপরেই গল্প চূড়ান্ত রকমের পাক খায়।

পাক খেয়ে খোলস ছেড়ে একেবারে পরিচালকের খড়ের পুতুল হতে থাকে। ক্যামেরা স্টাইল, নিত্য ব্যস্তবতার জড়ৎ থেকে উপাদান সংগ্রহ করে যে বাস্তবতার গল্প আমাদের শুনাচ্ছিলেন, তার উপর যে মালিকানা বা কর্তৃত্ব অর্জন করলেন তার ভিত্তিতে যত্রতত্র রঙ চড়ানো শুরু করলেন। স্টার গায়ক তপুকে হাস্যকরভাবে গল্পে আমদানি করলেন। রুবা যেখানে চাকরি নেয় কপিরাইটার হিসেবে, সেখানে তার বান্ধবীর সঙ্গে কথোপকথনে তপুর কথা খেয়াল হয়। আশ্চর্য এ জন্য যে, তপু ছিল রুবার বাল্য প্রেমিক।

তপু এখন ঢাকা শহরে প্রতিষ্ঠিত শিল্পী। রুবার এতো সংকট গেল তবু তার তপুর কথা খেয়াল হয়নি একবারের জন্যও। অথচ এই বিরূপ পৃথিবীতে সাহায্যের ডালি নিয়ে রুবার জন্য বসে আছে তপুই তো! হুট করে তপুর এই আগমন কি কি পরিবর্তন ঘটায় সিনেমায় তা খেয়াল করা দরকার। তাহলেই আমরা বুঝতে পারব গল্পের শুরুর সঙ্গে কি তফাৎ তৈরি হয়। আর এই তফাৎ আমাদের কোন কোন সামাজিক বৈশিষ্ট্যকে ধারণ করে? যে রুবা একা টিকে থাকার সংগ্রামে রত ছিল সেই রুবা মেতে উঠে ছোঁয়াছুয়িঁর খেলায়।

তপুর আগমনের পর একলাফে রুবা টিভির বিজ্ঞাপন বা হিন্দি সিরিয়ালে যে আকাঙ্ক্ষিত জীবনের প্রলোভন দেখায় সে জীবনে প্রবেশ করে। আর সিনেমাটিক বাস্তব হয়ে ওঠে টিভি বিজ্ঞাপনের ছেলে ভুলানো ছড়ার মতোই। আর এভাবেই তৈরি হতে থাকে থার্ড পারসন সিঙ্গুলার নাম্বার ফ্যান্টাসি। এ ফ্যান্টাসির জগতে থাকে মধ্যবিত্ত-উচ্চ মধ্যবিত্তের আকাঙ্ক্ষিত জীবনের প্রজেকশন, রেডিও ফুর্তির বিজ্ঞাপনী কার্যক্রম আর বসুন্ধার ফ্ল্যাটে বিজনেসের কাটতি বাড়ানোর উপায়। এসবই শেষ পর্যন্ত এই সিনেমার দেহে ঘাপটি মেরে লুকিয়ে থাকে এবং সিনেমাকে নিয়ন্ত্রণ করে।

থার্ড পারসন সিঙ্গুলার নাম্বার- ফারুকীর অন্যান্য সিনেমার মতোই যৌন দৃশ্য সরাসরি তৈরি করে না কিন্তু যৌনতার ধারণা নির্মাণ করে যা সরাসরি পাশ্চাত্য থেকে আমদানিকৃত এবং তা আমাদের বাস্তবতার উপর নিক্ষেপ করে কোনো সমালোচনা ছাড়াই। গুটি কতকের বাস্তবতা সার্বজনীন চেহারায় রূপ নেয়। ঢাকাই ছবির রগরগে যৌনতা এখানে নেই। এই ছবিতে লিভ টু গেদারকে সামাজিক বাস্তবতা হিসেবে চাপিয়ে দেওয়া হয় পরিবার প্রথাকে যত্রতত্র হেয় করে। মুন্না-রুবা যে লিভ টু গেদার করে কেন, তার কোনো ব্যাখ্যা নেই।

মুন্ন বা রুবার মানসিক গড়ন কি? কেন বা কোন পরিস্থিতিতে তারা চিরাচরিত পারিবারিক কাঠামোর মধ্যে থাকতে পারলো না? আর বসুন্ধরার ফ্ল্যাটে যখন রুবা উঠে অপুর পড়শি হিসেবে তখন তো পুরো ফিল্ম জুড়েই ওপেন সেক্সের আবহ জুড়ে থাকে। আবার কাহিনী রহস্যের জন্য যখন রুবার তের বছরের সত্তা মুন্না প্রতি বিশ্বস্ততার জন্য হাস্যকর সতীত্বপনার ওকালতি করে তখন পুরো ব্যাপারটা কি দাঁড়ায়? লিভ টু গেদারকেই কি পরিবার প্রথার জায়গায় প্রতিস্থাপন করে না? এভাবেই লিভ টুগেদারের জয়গান গাওয়া হয়। আর পরিবার প্রথাকে যত্রতত্র হেয় করে এবং সাংস্কৃতিক আগ্রাসনের প্রেক্ষিত তৈরি হয়। আর এতো বলার অপেক্ষা রাখে না মতাদর্শ প্রচারে সিনেমা তার জন্ম থেকেই কতো শক্তিশালী ভূমিকা রেখে আসছে। পুরনো ঢাকা থেকে উদ্ভূত সংকট নিয়ে রুবা তার তারকা বন্ধুর সঙ্গে বাল্যপ্রেমের বিনিময়ে হাল আমলের ঢাকায় উঠে বসুন্ধরার ফ্ল্যাটে।

দুই অঞ্চল, মানুষের আচার-আচরণ, জীবনের প্রকাশের ভিন্নতা আছে। বৃদ্ধ রহমান, অপরিসর বিল্ডিং, কুৎসিত যৌনতার সুযোগ নেওয়ার চেষ্টারত পুরুষের চেহারা, মেয়েরা মায়ের জাত বলা মৌলবী যে অঞ্চলের প্রতিনিধিত্ব করে, তা পুরনো ঢাকা। এই ছবিতে পুরনো ঢাকার জীবনকে বেশ সমালোচনামূলক দৃষ্টিতে দেখা হয়েছে এবং তা স্বাভাবিকও। কিন্তু কই হাল আমলে ঢাকা- ভোক্তা মধ্যবিত্তের পীঠস্থান বসুন্ধরার ফ্ল্যাট কালচারগুলোতে যে জীবনপ্রণালী দাঁড়াচ্ছে তা কোনো সমালোচনামূলক দৃষ্টিভঙ্গিতে দেখা হলো না। যেমন আমরা সিনেমায় বৃদ্ধ রহমানের নারী সম্পর্কে পয়েন্ট অব ভিউ শট দেখি।

হাল আমলের ঢাকার ব্যক্তি স্বাধীনতার এক জয়গান দেখতে পাই। এই ব্যক্তি স্বাধীনতার নারী দৃষ্টিভঙ্গি তো দেখানো হলো না? আর এ সিনেমায় মিউজিক করেছেন লিমন। কাজী নজরুল ইসলামের ‘চল চল চল’ গানটির বাজনা যত্রতত্র বাজানো হলো। রুবার মানসিক দৃঢ়তা বোঝাতেও আবার তপুর জন্মনিরোধ সামগ্রী কিনতে যাওয়ার হাস্যরসাত্মক দৃশ্যের সময়ও। ফারুকী এই ছবিতে কিছু বিক্ষিপ্ত ভালো সিকুয়েন্স উপহার দিয়েছেন।

রুবার মায়ের প্রতি স্বপ্ন দৃশ্যের সিকুয়েন্স খুবই উপভোগ্য। আবার রুবা যখন তার মায়ের প্রতি হাহাকার করে তখনও তা দর্শকের মন ছুঁয়ে যায়। এরকমের দুয়েকটা কৃতিত্বের বাইরে থার্ড পাসন সিঙ্গুলার নাম্বার হয়ে দাঁড়ায় পুরুষের ফ্যান্টাসি চোখে নারী। যে চোখ পণ্যায়িত ভোক্তা আদর্শে চকচক করে। আর এরূপ আকাঙ্ক্ষার বিরিয়ানি তৈরি করে রুবা হককে- যা চালানো হয় থার্ড পারসন সিঙ্গুলার নাম্বারের সংকট হিসেবে।

লেখক: হাসান জাফরুল সূত্র/সংগ্রহ: সাপ্তাহিক বুধবার(সমাজ ও রাষ্ট্রের গণতান্ত্রিক বিকাশের প্রতি অঙ্গীকারাবদ্ধ) -১৭তম সংখ্যা;৩০ডিসেম্বর ২০০৯
 

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।