আলো অন্ধকারে যাই... ব্র্যাক ব্যাংকের সাবসিডিয়ারি কোম্পানি ‘বিকাশ’কে ২০১০ সালের ১২ এপ্রিল পেমেন্ট সার্ভিস অপারেটর (পিএসও) হিসেবে অনুমোদন দেয় বাংলাদেশ ব্যাংক। পিএসওর নিয়ম ভেঙে আমানত গ্রহণ করায় প্রশ্নবিদ্ধ হয়ে পড়েছে বিকাশ।
গ্রামীণফোন ও রবির নেটওয়ার্ক এবং কয়েকটি আউটলেটের মাধ্যমে পিএসও সেবা দিচ্ছে বিকাশ। পাশাপাশি ব্যাংক বা আর্থিক প্রতিষ্ঠানের মতো আমানতও সংগ্রহ করছে। এরই মধ্যে চার লাখেরও বেশি গ্রাহকের হিসাব খুলেছে প্রতিষ্ঠানটি।
এসব হিসাবে গত মার্চ পর্যন্ত ৪৯৯ কোটি টাকা জমা হয়েছে। বিকাশের এ আমানত সংগ্রহের কার্যক্রম বাংলাদেশ ব্যাংকের নজরে এসেছে। বিকাশের প্রতি হিসাবের বিপরীতে এখন মাসে আড়াই লাখ টাকা পর্যন্ত লেনদেন করা ও পাঠানো যায়।
বাংলাদেশ ব্যাংক প্রণীত সেলফোনে আর্থিক সেবা নীতিমালায় আছে, মোবাইল ব্যাংকিংয়ের মাধ্যমে খোলা হিসাব অবশ্যই ব্যাংকের সঙ্গে সংযুক্ত করতে হবে এবং গ্রাহককে সুদ দিতে হবে। তবে বিকাশে খোলা হিসাব ব্যাংকের সঙ্গে যুক্ত নয়।
গ্রাহক এ থেকে কোনো সুদও পাচ্ছে না।
পিএসওর নীতিমালায় উল্লেখ আছে, যেসব প্রতিষ্ঠান বাংলাদেশ ব্যাংকে নগদ জমা করে, সেসব ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠান এ লাইসেন্স পেতে পারে। তবে ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠান না হয়েও লাইসেন্স পেয়েছে বিকাশ।
এ বিষয়ে বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্বাহী পরিচালক দাশগুপ্ত অসীম কুমার বণিক বার্তাকে বলেন, ব্র্যাক ব্যাংক তার সহযোগী প্রতিষ্ঠান বিকাশের মাধ্যমে সেলফোনে আর্থিক সেবা দেয়ার অনুমতি পেয়েছে। প্রতিষ্ঠানটির কার্যক্রম মনিটরিংয়ের মধ্যে রাখা হয়েছে।
লাইসেন্সের সময় তাদের কিছু শর্ত দেয়া হয়। এখন তা ভঙ্গ করলে তাদের বিরুদ্ধে অবশ্যই ব্যবস্থা নেয়া হবে।
জানা গেছে, যেকোনো সময় বিকাশের সংগৃহীত আমানত ও হিসাব ব্র্যাক ব্যাংকের সঙ্গে সংযুক্ত করতে নির্দেশনা দিতে পারে বাংলাদেশ ব্যাংক। এ ছাড়া প্রতিষ্ঠানটির বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থাও নেয়া হতে পারে।
বিকাশের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা কামাল কাদির এ প্রসঙ্গে বলেন, ‘বাংলাদেশ ব্যাংকের নীতিমালা মেনেই কাজ করছি আমরা।
নীতিমালায় সুদ দেয়ার কথা থাকলেও এ মুহূর্তে গ্রাহককে তা দিচ্ছি না। ভবিষ্যতে দেয়ার পরিকল্পনা রয়েছে। বিকাশের আউটলেটে যে অর্থ জমা হয়, তা ব্র্যাক ব্যাংকে জমা করা হয়। গ্রাহক যত দিন প্রয়োজন মনে করবেন, ব্যাংকে তত দিন সে অর্থ থাকবে। বাংলাদেশ ব্যাংকের নিয়ম মেনেই আমরা এটা করছি।
’
জানা গেছে, সেলফোনে আর্থিক সেবা নীতিমালা প্রণয়নের পর ব্র্যাক ব্যাংক তা পরিবর্তন করার জন্য বাংলাদেশ ব্যাংকের কাছে একটি চিঠি পাঠায় ২০১১ সালের ১০ আগস্ট। এতে তারা ব্যাংকের পাশাপাশি ‘সাবসিডিয়ারি’ শব্দটি ব্যবহারের অনুরোধ করে। তাদের সে আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে বাংলাদেশ ব্যাংক নীতিমালায় পরিবর্তন আনে।
ব্র্যাক ব্যাংক ২০০৯ সালের ৬ ডিসেম্বর বাংলাদেশ ব্যাংকে পিএসও হিসেবে কাজ করার জন্য সাবসিডিয়ারি কোম্পানি গঠনের আবেদন করে। ওই বছরের ২৩ ডিসেম্বর কারেন্সি ম্যানেজমেন্ট অ্যান্ড পেমেন্ট সিস্টেম বিভাগের মাধ্যমে ব্র্যাক ব্যাংককে পিএসও হিসেবে কাজের অনাপত্তি দেয়া হয়।
২০১০ সালের ১২ এপ্রিল একই বিভাগ থেকে ব্র্যাক ব্যাংককে বিকাশের জন্য পিএসও লাইসেন্স দেয়া হয়। অথচ ব্র্যাক ব্যাংক ও বিকাশ দুটো আলাদা প্রতিষ্ঠান। তাদের পরিচালনা পর্ষদও আলাদা। বিকাশ গঠিত হয়েছে আমেরিকান কোম্পানি মানি ইন মোশন ও ব্র্যাকের যৌথ বিনিয়োগে।
সূত্র: Click This Link ।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।