রাত্রে ডাইনিং টেবিলে বসে আরামছে খাচ্ছি আর মাঝে মাঝে টিভিতে চোখ দিচ্ছি। এটা- ওটা নিয়ে টুকটাক গল্প গুজব ও হচ্ছে। বিশেষ করে বর্তমানে ব্লগ সমাজের হট টপিক জাফর ইকবালই ছিলো গল্পের মূল বিষয়।
খাওয়া প্রায় শেষ, হঠাৎ গলায় কিসের যেনো খোঁচা!!! থমকে গেলাম এবং আবিষ্কার করলাম কাঁটা মহাশয় জায়গা মতো আটকে গেছেন। আমি চেষ্ঠা করলাম কাঁটাটা সরাতে, মুখে পানি নিয়ে গারগিল করলাম কিন্তু কাঁটা সরেনা, যেন খালেদার ভাষনে অনুপ্রানিত হয়ে আমার গলায় আরো চেপে বসেছে।
আমি রাজনীতির ধারে কাছেও নেই, তাহলে না হয় হাসিনার মতো আরেকটা কঠিন বাণী দিয়ে কাঁটাটাকে নির্বাসনে পাঠতাম। আফসোস কাঁটার কাছে এই অধমের অসহায় আত্মসমর্পন।
উনি রেগে গিয়ে বললেন, দেখে খেতে পারোনা? বাচ্চাদের মতো গলায় কাঁটা বিধিয়েছে, আমার আর সহ্য হয়না.... ইত্যাদি ইত্যাদি। আমি কিভাবে বলি দেখেইতো খাচ্ছিলাম , কিন্তু কাটা না , ক্যাটরিনারে দেখে দেখে খাচ্ছিলাম
যা হোক উনার পরামর্শে বেশী করে সালাদ খেতে লাগলাম, পেটে আর জায়গা নেই কিন্তু শালার কাঁটা সরেনা। শীতের এই রাত্রেও আমি ঘামতেছি, গলায় হালকা ব্যথাও অনুভব করছি।
মনে মনে ক্যাটরিনারে গালি দিতাছি।
অবশেষে ছোট ভাইকে নিয়ে ডাক্তারের কাছে গেলাম। অনেক রাত হয়ে গেছে সুতরাং আমার পরিচিত ডাক্তার তার চেম্বার বন্ধ করে চলে গেছে। আমি চোখে সর্ষে ফুল দেখছি। মাছটাতো ছোটই ছিলো কিন্তু কাটাটাকে এখন তিমি মাছের মতো বড় লাগছে।
আমার কি হবে???
পাশেই এক মেডিসিন স্পেশালিষ্টের চেম্বার, উপায় না দেখে তার কাছেই গেলাম। উনি বসতে বলে ফোনে তার বউয়ের সাথে ছেলের এডমিশান টেস্টের রেজাল্ট নিয়ে দীর্ঘক্ষন আলাপ চালিয়ে অবশেষে আমার গলায় টর্চের আলো ফেললেন। না, কাটা নেই, উনি প্রেসক্রিপশান লিখতে শুরু করলেন । আমিতো বেকুব বনে গেলাম। ঢোক গিলতেই বুঝতে পারলাম কাটা বহাল তবিয়তেই আছে।
আমি বললাম ডাক্তার সাহেব কাটা যায়নাই, আছে। উনি পুনরায় টর্চ মারলেন এবং যথারীতি কাটা নেই বললেন এবং তার পরের কথায় আমার মাথা ঘুরতে লাগলো । এ তো মাছের কাটা নয় , এ যেন আমার মরণ কাটা। ডাক্তার সাহেব বললেন , আমি এন্টিবায়োটিক লিখে দিচ্ছি, খেয়ে যান সব ঠিক হয়ে যাবে। আমি কি আর বলবো ভেবে পাচ্ছিলাম না।
তবুও বললাম ডাক্তার সাহেব আমি আপনার কাছে এসেছি কাটা সরাতে এন্টিবায়োটিক খাওয়ার প্রেসক্রিপশান নিতে নয়। উনি বোধ হয় কিছুটা রাগ করলেন এবং প্রেসক্রিপশনের উপর আরেক দফা কলম চালালেন এবং আমাকে বিদায় করলেন। চেম্বার থেকে বেরিয়ে প্রেশক্রিপশানে চোখ ফেলেই আমার আরেক দফা জান যায় অবস্থা। উনি আমাকে মেডিকেলে রেফার করেছেন!!!!
অনেক বড় হয়ে গেলো, তাই শেষ করে দিচ্ছি। পরের কাহিনী খুব সহজ, ফার্মেসীতে গেলাম এবং দোকানদারের পরামর্শে পাশেই সদ্য পাশ করা এক ডেন্টিস্টের চেম্বারে।
ডেন্টিস্ট তার চেয়ারে শুয়ে দিয়ে গলায় কি যেনো একটা করলো এবং নিমিষেই কাঁটা হাওয়া। আমি ও বেঁচে গেলাম । ডেন্টিস্টের জন্য অসংখ্য শুভ কামনা রইলো।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।