আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

জাহাজ ভাঙার জন্য 'সুনির্দিষ্ট অঞ্চল' করা হবে

দেশের সম্পদ দেশেই রাখুন

জাহাজভাঙা শিল্পের জন্য চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ডে একটি 'সুনির্দিষ্ট অঞ্চল' গড়ে তোলা হবে বলে জানিয়েছেন বন ও পরিবেশ প্রতিমন্ত্রী হাছান মাহমুদ। সোমবার দুপুরে সীতাকুণ্ডের মাদাম বিবির হাট ও কুমিরা এলাকায় দুর্ঘটনা কবলিত শিপ ব্রেকিং ইয়ার্ড এবং উপকূলীয় বনাঞ্চলে গাছ কাটার স্থান পরিদর্শন শেষে তিনি সাংবাদিকদের একথা বলেন। হাছান মাহমুদ বলেন, "উপকূলীয় এলাকার যত্রতত্র 'ফ্রি স্টাইলে' শিপ ব্রেকিং ইয়ার্ড করতে দেওয়া হবে না। দ্রুতই পরিবেশ ও বন, শিল্প এবং নৌ-পরিবহন মন্ত্রণালয়ের সমন্বিত আলোচনার মধ্য দিয়ে একটি সুনির্দিষ্ট অঞ্চল গড়ে তোলা হবে। " এ ব্যাপারে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা মৌখিক নির্দেশ দিয়েছেন বলেও জানান তিনি।

সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে পরিবেশ প্রতিমন্ত্রী বলেন, ভূমি ও গাছের মালিক যেই হোক না কেন সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের অনুমতি ছাড়া উপকূলীয় এলাকার গাছ কাটা যাবে না। ইতোপূর্বে সরকারি কর্মকর্তাদের অজ্ঞতা বা বিভ্রান্তির কারণে সীতাকুণ্ডে শিপব্রেকিং ইয়ার্ড স্থাপনের জন্য জায়গা ইজারা দিয়েছিলেন। তিনি বলেন, বর্তমান সরকার পরিবেশ সংরক্ষণে অতীতের যে কোনো সময়ের চেয়ে সোচ্চার। এখন থেকে ইজারা দেওয়ার ক্ষেত্রে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের অনুমতি নিতে হবে। এতে সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীদের কোনপ্রকার গাফিলতি থাকলে তা খতিয়ে দেখে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে মন্ত্রী জানান।

শ্রমিকদের নিরাপত্তা ও কর্মসংস্থান এবং ইয়ার্ড মালিকদের স্বার্থ বিবেচনা করে চারটি মন্ত্রণালয়ের সমন্বয়ে জাহাজভাঙা শিল্পের জন্য একটি সুর্নিদিষ্ট নীতিমালা হচ্ছে জানিয়ে হাছান মাহমুদ বলেন, এটি কার্যকর হলে এ শিল্প একটি বাধ্যবাধকতার মধ্যে আসবে এবং শিপ ইয়ার্ডে দুর্ঘটনায় শ্রমিক নিহত হওয়ার হার কমবে। এছাড়া শিপ ইয়ার্ডে পরিবেশের জন্য ক্ষতিকর কোনো কাজ না করতে মন্ত্রী ইয়ার্ড মালিকদের হুঁশিয়ার করে দেন। শনিবার সীতাকুণ্ডের মাদামবিবির হাট এলাকায় রহিম স্টিল অ্যান্ড শিপ ইয়ার্ডে পুরনো জাহাজ কাটার সময় বিস্ফোরণে ৪ শ্রমিক নিহত ও ১০ জন আহত হয়। সীতকুণ্ডের শিপ ইয়ার্ডগুলোতে অনিরাপদ পরিবেশে কাজ করার ফলে প্রায়শই দুর্ঘটনায় শ্রমিকের মৃত্যু হয়। সীতাকুণ্ডের ফৌজদারহাট থেকে কুমিরা পর্যন্ত ১২ কিলোমিটার উপকূলীয় এলাকা জুড়ে ৮৭টি শিপ ব্রেকিং ইয়ার্ড রয়েছে।

এগুলোতে কাজ করে প্রায় ৩০ হাজার শ্রমিক-কর্মচারী। জাহাজভাঙা শ্রমিকদের নিয়ে কর্মরত বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থা ইয়ং পাওয়ার ইন সোশ্যাল অ্যাকশন 'ইপসার' হিসাব অনুযায়ী, ১৯৮২ সাল থেকে ২০ বছরে সীতাকুণ্ডের শিপ ইয়ার্ডগুলোতে কাজ করতে গিয়ে প্রায় চার শ' শ্রমিকের মৃত্যু ঘটেছে। আহত হয়েছে ছয় হাজারেরও বেশি। বাতিল বিদেশি জাহাজ কিনে এনে সীতাকুণ্ডের শিপ ব্রেকিং ইয়ার্ডগুলোতে কাটা হয়। এসব জাহাজ থেকে পাওয়া লোহা দেশের রড তৈরি শিল্পের অন্যতম উপাদান।

কর্কশ শব্দ, অক্সি অ্যাসিটিলিন গ্যাস কাটারের তীব্র আলোর বিচ্ছুরণ, বাতাসে লৌহকণাসহ ধুলি-বালিময় বিষাক্ত পরিবেশে প্রায় কোনো নিরাপত্তা ব্যবস্থা ছাড়াই শ্রমিকরা জাহাজভাঙা শিল্পে কাজ করে। অনেক জাহাজ থেকে সৈকত ও সাগরে মারাত্মক রাসায়নিক দূষণও ঘটে থাকে। মালিকরা বেশি মুনাফার লোভেই শ্রমিকদের কাজ করার জন্য আধুনিক উপকরণ কেনেন না বলে অভিযোগ রয়েছে। এর আগে সীতকুণ্ডের সোনাইছড়ি এলাকায় শিপ ব্রেকিং ইয়ার্ড নির্মাণের জন্য দুর্বৃত্তরা উপকূলীয় বন বিভাগের প্রায় দুই হাজার গাছ কেটে ফেলে। সূত্রঃ বিডিনিউজ টোয়ন্টিফোর ডটকম


অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.