আমাকে অনেকেই জামায়াত-শিবিরের পরোক্ষ সমর্থক বলেছেন। কারণ আমি আপনাদের সাথে রাস্তায় গিয়ে বসে থাকিনি কিংবা স্লোগান দিয়ে গলা ব্যথা করিনি। কিন্তু আমি একটিবারের জন্যও কোথাও বিচারকার্যের বিপক্ষে কথা বলিনি। রায়ে ফাঁসির আদেশ না হওয়াতে ১৬ কোটি বাঙালির মত আমিও কম বিস্মিত হইনি। কিন্তু তার মানে এই নয় যে ফাঁসি কার্যকর না হওয়া পর্যন্ত আমি রাস্তায় বসে থাকব।
সবার ক্ষেত্রে প্রতিবাদ করার ভাষা একইরকম হবে, তা আশা করা মোটেও বাঞ্ছনীয় নয়। আমি আমার মত করে প্রতিবাদ করতেই পারি। সেটা শাহবাগে না গিয়েও করা যায়।
মোমবাতি না জ্বালানোর কারণে যদি আমি আজ রাজাকার হয়ে যাই, তাহলে ১২ বছর আগে এই রাজাকারদের গাড়িতে জাতীয় পতাকা ওড়ানোর সুযোগ করে দেওয়ার জন্য আপনাদেরও দেশদ্রোহিতায় অভিযুক্ত করা উচিত। ৫টি বছর তারা দেশ শাসন করেছে।
তখন তো একবারের জন্যও আপনি তাদের রাজাকার বলেননি, উপরন্তু মহান বিজয় দিবসে তারা বীরদর্পে সশস্ত্র বাহিনীর সালাম গ্রহণ করেছে আর আপনি হাততালি দিয়ে গিয়েছেন।
আর দুই-তিন মাসের জন্য যদি আমি যাবতীয় কার্যক্রম বন্ধ করে রাস্তার মোড়ে বসে থাকি, তাহলে ব্যক্তিগত ক্ষতির কথা বাদ দিলাম, দেশের অর্থনীতি কিরুপ বাধাগ্রস্ত হবে তা হয়তো এই মুহূর্তে কারও মাথায় আসছে না। ব্যবসায়ী সংগঠনের মতে যেখানে একদিনের হরতালে কয়েক হাজার কোটি টাকার লোকসান হয়, সেখানে লাগাতার অসহযোগ আন্দোলনে দেশ যে উন্নয়নশীল দেশের কাতার থেকে বহুদূরে সরে যাবে তা সহজেই অনুমেয়।
শাহবাগ নাস্তিক কিংবা গঞ্জিকাসেবীদের আড্ডাখানা কিনা, তা নিয়ে বিতর্কে যাওয়ার কোন ইচ্ছেই আমার নেই। তবে এটুকু জানি ইতিহাসের পাতায় এমন কোন সফল আন্দোলনের জয়গাঁথা নেই যেখানে আন্দোলনকারীদের নিরাপত্তার জন্য সে দেশের এলিট বাহিনী নামানো হয়েছে এবং আন্দোলনের মহারথীরা নিজের জীবনহানির ভয়ে বাড়তি নিরাপত্তারক্ষী নিয়ে চলাফেরা করেন।
আপনার আর আমার দাবি একই; “ সকল যুদ্ধাপরাধীর ফাঁসি”। টগবগে রক্ত আবেগের বন্যায় কিছু ভুল সিদ্ধান্ত নিতেই পারে। কিন্তু সময় থাকতেই তা শুধরে নিয়ে সঠিক পন্থা অবলম্বন করা উচিত। তারুণ্যের স্বতঃস্ফূর্ত অংশগ্রহণের জোয়ারে তাই এমন কোন অনভিপ্রেত আবদার কিংবা কর্মকাণ্ড কাম্য নয় যার ফলশ্রুতিতে শাহবাগের নবজাগরণ এক ব্যর্থ অভ্যুথানের সাক্ষী হয়ে আজন্ম তরুণদের অধিকার আদায়ে সোচ্চার হয়ে উঠতে বাধা হয়ে দাঁড়ায়। ।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।