যখন বিকাল হতে থাকে, হতে হতে সূর্যটা ঢলে পড়ে, পড়তে থাকে
পৃথিবীর মাটিতে প্রথম যেদিন জুতাসমেত পা পড়লো সেই তবে থেকেই মোজা নিত্যসঙ্গী। মোজা ছাড়া জুতো পরা যায় না - এটা সংক্রমিত জ্ঞান, লব্ধ না। কোনদিন মোজা ছাড়া জুতা পরে হাতেনাতে শিক্ষাটা নেয়া হয়নি, গুরুজনেরা কেন শিখিয়েছেন তার কারণও ফলতঃ অজানা। ধারণা করি আমার বাবা, তার বাবা এবং তার বাবা - যে অব্ধি মোজার প্রচলন শুরু হয়েছে তারা সবাই মোজা পরার ব্যবহারিক কারণ সন্বন্ধে অজ্ঞাত ছিলেন।
মোজা কি জুতার সাথে সাথেই আবিষ্কার হয়েছিলো নাকি মোজার পরে জুতো অথবা জুতার পরে মোজা এসব ভেবে ভেবে হয়রান।
সৌন্দর্য্যের জন্য মোজার ব্যবহার নাকি পায়ের আরামের জন্য - এসব নির্ণয়ও আমার জন্য অসাধ্য হয়ে উঠছিলো ক্রমশঃ।
একটা মোজা অনেকদিন পরলে তলানীটা স্ফীত হতে থাকে, দুর্গন্ধ চৌদ্দকুলকে অস্বস্তিতে ভোগায় - তজ্জন্য মোজা পরিবর্তন প্রয়োজনীয় হয়ে ওঠে, কিন্তু ইহাতে মোজা ব্যবহারের আদি কারণ সম্বন্ধে কোন ধারণা পাই না।
তবে এভাবে যখন সকল মোজা ফুরিয়ে গেল এবং মোজার স্তুপে আমার ময়লার ঝুড়িটা ফুলে ফেঁপে উঠলো এবং একই সাথে সুগন্ধে পাশ্ববর্তী বাড়ীর বাচ্চাটা মাঝরাতে কেঁদে উঠলো তখন একদিন আমার সাধ হলো পরীক্ষাটা করে ফেলতে। সঙ্গত কারণ হিসাবে আর কোনো নতুন মোজা না থাকা আসলে বলতে চাই না।
অতপর অদ্য মোজা ছাড়া আমার প্রথম জুতাপদখানি পৃথিবীর মাটি স্পর্শ করলো।
মোজা মুক্ত স্বাধীন জুতার বিচরণ আপাতত কোনো অস্বস্তি বা ক্ষতির আলামত প্রদর্শন করিলো না।
দুপুর হইতে ক্রমশ আমি অনুধাবন করতে সক্ষম হইলাম, উহারা মোজা শুধু শুধু আবিষ্কার করে নাই। পায়ের তালু ঘেমে, গরম হয়ে মস্তক পর্যন্ত ফোটাতে শুরু করলো। প্রথমে আমল না দিলেও ক্রমশ আমার পায়ের তালু যেন লোহার কাঁটার মধ্যে বিদ্ধ হতে থাকলো। অসহ্য পা-রিরীক কষ্টে যখন আমার পাবন অতীষ্ট তখন ছুড়ে ফেললাম জুতা - সরবে ছুটোছুটি শুরু করলো আমার সকল কলিগবৃন্দ।
অবর্ণনীয় সুগন্ধে দেয়ালে টাঙানো জাতির পিতার নাকটাও কুচকে গেলো। কিন্তু সব কিছু অবজ্ঞা করে আমার ভার্চুয়াল মস্তক অবনত করলাম সেই মহান পিতার মোজাতলে যিনি এই অমানুষিক নির্যাতন ভোগ করিয়া মোজা সৃষ্টিতে বাধ্য হয়েছিলেন।
শেষটা না শুনে উঠবেন না। আজকে আমাকে একটু আর্লিই ছুটি দিতে বাধ্য হয়েছে বস। কারণ হিসাবে তিনি আমার বিরুদ্ধে মুজাৎকারের অভিযোগ তুলেছেন।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।