আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

স্বাধীনতা যুদ্ধে তিন অজানা বিদেশী কে আমার স্যালুট

হৃদয়ের কাছে বুদ্ধির বাস ভাল কথা। কিন্তু মাঝে মঝে হৃদয়ের ওপর থেকে বুদ্ধির শাসন তুলে দিতে হয়, হৃদয়কে স্বাধীন করে দিতে হয়, মুক্ত করে দিতে হয়। স্বাধীন মুক্ত হৃদয়ের ধর্মকে সব সময় বুদ্ধি দিয়ে বিচার করতে নেই দ্যা লাভ লেটার চিত্রকর্মটি টিল অভ লিমবার্গ ৪র্থ অক্টোবর ১৯৭১ সাল বেলজিয়ামের ‘হেট ভোক’ পত্রিকায় এক ব্যাক্তি ফোন করে জানায় তার কাছে প্রখ্যাত ওলন্দাজ চিত্র শিল্পী ভেরমিয়ার ‘দ্যা লাভ লেটার’ তৈলচিত্রটি আছে। এই মাষ্টার পিস টি ২৪ শে সেপ্টেম্বর ব্রুসেলস ফাইন আর্টস থেকে চুরি যায়। তখন এটির বাজার মূল্য ছিল ৫০ লাখ ডলার।

ঐ ব্যাক্তি জানান তিনি ঐ মাষ্টারপিস টি চুরি করেছেন। যদি কতৃপক্ষ বাংলাদেশী শরনার্থীদের ৪০ লক্ষ ডলার কারিতাসের মাধ্যমে প্রধান করে তবে তিনি ঐ চিত্রকর্মটি ফেরত দিবেন। আর গ্যালারীতে যে চিত্রকর্মটি ঝুলানো আছে সেটি নকল। এবং এই অর্থ দিতে হবে একটি টেলিভিশন সংস্থার উপস্থিতিতে যারা অনুষ্ঠান্টি সরাসরি প্রচার করবে। পত্রিকার মতে ইন্স্যুরেন্স বিশেষজ্ঞ্রা জানিয়েছেন একদিনের মধ্যে এধরনের চুক্তি করা ও টেলিভিশনে প্রচার করা অসম্ভব।

অজ্ঞাতনামা এ ব্যাক্তি নিজের নাম দিয়েছিলেন ‘টিল অভ লিমবার্গ’। টিল ইউলেনাস পিগেল ছিলেন রবিন হুডের মত কিংবদন্তী। যিনি বড় লোকদের ধন ডাকাতি করে গরীবের মধ্যে বিলাতেন। টিল অভ লিমবার্গ আরো ঘোষনা দেন তার দাবী না মানলে পৃথিবীতে যে কটি ভেরমিয়া আছে তার সবকটি চুরি করবেন। উল্লেখ্য সর্ব সাকুল্ল্যে ভেরমিয়া আছে মাত্র ৩৯টি।

ব্রুসেলেসের দৈনিক ‘ল্য সোয়ের’ এ ফোন করে টিল প্রথম এ সংবাদটি জানান। পত্রিকা তাকে প্রথমে প্রমান দাবী করে। প্রমান হিসাবে তিনি এক ফটো সাংবাদিক কে বেলজিয়ামের গহীন অরন্যে নিয়ে যান এবং সেখানে তাকে ছবি তোলার সুযোগ দান করেন। কিন্তু ওলন্দাজ জাতীয় জাদুঘরের পরিচালক ডাঃ এ এফ এ ভন সেন্দেল পরে বলেন ওই চিত্রকর্মের ছবি প্রমান হিসাবে জোরালো না কারন এটি প্রতিরুপ ও হতে পারে। আজো ব্যাপারটি ধোয়ায় আচ্ছন্ন।

সত্যি টিল চুরি করেছিল কিনা আমি জানি না কিন্তু টিল আমাদের যুদ্ধে যে সহমর্মিতা দেখিয়েছিল তার জন্য স্যালুট। মসিয়ে প্রেমা যা করলেন ১৯৭১ স নে অনেক সাহায্য সংস্থা এগিয়ে এসেছি বাঙ্গালী শরনার্থীদের সাহায্যে। এর মধ্যে উল্লেখ্যযোগ্য ছিল রেডক্রস। এপ্রিলের একেবারে শুরুতেই রেডক্রস একটি আন্তর্জাতিক দল ঘোষনা করে মেডিকেল সাপ্লাই নিয়ে করাচীর পথে রওনা দেয়। পাকিস্তান সরকার তাদের করাচীতে আটকে দেয়।

কমিটির সহ সভাপতি জ্যাক প্রেমা মনে করেন যদি সরাসরি ঘোষনা না দিয়ে গোপনে যেতেন তাহলে পাকিস্তান সরকার হয়ত বাধা দিত না। মসিয়ে প্রেমা ছিলেন জেনেভা বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্তর্জাতিক স্টাটিজের পরিচালক। রেডক্রসের কিছু নীতি নিয়ে এর আগেও তার সাথে বিরোধ হয়েছে। তার ধারনা তার মতামত গ্রহন না করারা জন্য পূর্ব পাকিস্তানে ত্রান নিতে পারে নি। সুতারাং এর প্রতিবাদে তিনি সহসভাপতির পদ থেকে ইস্তাফা দেন।

স্যালুট মসিয়ে প্রেমা যোগার কর এক পাউন্ড কীথ ওয়াটার হাউস। লন্ডনের ডেইলি মিররে নিয়মিত কলাম লিখতেন। জুন ৯ তারিখ পত্রিকার প্রথম পাতায় পাতায় তিনি লিখলেন তার কলাম টি বৃহস্পতিবার বের হবার কথা কিন্তু তিনি বুধবার লিখছেন কারন সময় নেই, এক দিন অনেককে বাচাতে পারে মৃত্যু থেকে। কীথ লিখেছেন সময় নষ্ট করার সময় নেই। বরং এটী করুন দুপুরের আগেই করুন।

যোগার করুন একটি খাম। কলম হাতে নিন। খামের ওপর লিখুন SAVE A LIFE BOX-189, DAILY MIRROR 1 THABIS IN LONDON আপনার হয়ত অন্য দাতব্য সংস্থা আছে। হয়তো ঠিকানা পাচ্ছেন না। হয়তো ভাবছেন আমার এই দান কতটুকু যাচ্ছে আমলাতান্ত্রিক জটিলতায় কত টুকু যাচ্ছে ভূক্তভোগীর কাছে? ওসব দ্বিধাদ্বন্দ্ব জাতিসংগের ওপর ছেড়ে দিন।

বরং খামের ওপর তিন পেনীর একটি টিকিট লাগান, এক পাউন্ডের একটি নোট নিন, যদি না থাকে তবে ধার করুন, গ্যাস মিটারের জন্য রাখা টাকা থেকে নিন, বাচ্চার পকেট মানি থেকে নিন, বাড়ী ভাড়া থেকে নিন, কিছু বিক্রি করুন না হলে বন্ধক রাখুন। খামে এক পাউন্ডের নোট টি রাখুন। পোষ্ট করুন তাতেই একটি জীবন বাচবে। ধন্যবাদের আশা করবেন না। কারন কীথের ভাষায় – Because you will have done the absolute minimum that will entitle you to go an living on this bloody awful revolving globe. ১১ জুনের কলামটি ছাপানোর পর তখনকার দিনে ৩৩৪০০ পাউন্ড পাওয়া গেছিল দু’দিনের মধ্যে।

কীথ কি একটি স্যালুট আপনার আমার কাছ থেকে পায় না? কৃতজ্ঞতাঃ মুনতাসীর মামুন এর অন্যরকম যুদ্ধ  ।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.