_________________সেলাই গাছের কারখানা _______________________________________
শততম পোষ্ট আয়োজন: একটি দীর্ঘশ্বাসের জানাজা
সৈয়দ আফসার
জীবনাটা কাটছে সাদাসিধা। নেই কোন পিছুটান চেষ্টা। নেই কেনো চাওয়া পাওয়ার আকুলতা। যেভাবে আছি যদি জীবনটা এভাবেই কাটে... ভালোই। কারণ এজীবনে তারচে' বেশি চাওয়ায় নেই।
পাঁচ বছর আগের কথা যখন প্রিয় কবি বন্ধুদের ছেড়ে হই ভিনদেশী, তাদের বলেছি- 'আমায় করুণা করো না বন্ধুরা, ক্ষমা করো' / 'ক্ষমা করে দিয়ো অনুজ যারা'/কবি মোস্তাক আহমাদ দীনের একটি কথা আজো আমার বুকে গেঁথে আছে ধাঁরালো চুরির মতো 'যেখানেই থাকো, কবিতাকে আঁকড়ে ধরে রাখো বুকে, সে তোমাকে মুক্তি দেবে, মুক্তির পথ বাতলে দেবে। সবাই তোমাকে ছেড়ে যেতে পারি(আমিও) কিন্তু কবিতা তোমাকে ছেড়ে যাবে না। ' সেই থেকে কবিতা আমাকে হাসায়-কাঁদায়-ভাসায়, নতুন করে জীবনকে চেনায়। আর ব্লগ আমাকে নতুন করে প্রাণ দিয়েছে কারণ প্রতিদিন অনেক নতুন নতুন লেখা পাঠ করার সুযোগ পাচ্ছি। পাঠ অভিজ্ঞতা গুলো নিজের মতো করে খুলে খুলে দেখি।
অনেক ভালো লেখা পাঠ করেও সময়ের অভাবে মন্তব্য করিনি। ভালো লাগলে প্লাস দিয়েছি। ভালো না-লাগলে চুপচাপ থাকার চেষ্টা করেছি। আমার পোষ্টগুলো আপনারা কষ্ট করে সময় ব্যয় করে পড়েছেন, ভালো লাগাটুকু বলেছেন। ভালো না-লাগাও জানিয়েছেন।
আমি তা থেকে নিজে শোধরে নেবার চেষ্টা করেছি। আপনাদের ভালোবাসায় আপ্লুত হয়েছি। কখনো ব্যক্তিগত আক্রমণটুকু এড়িয়ে গেছি। মনে দুঃখ পেয়েছি। কিভাবে ব্যক্তিত্ব চর্চা হয় তা ভেবেছি।
পরিশেষে একটি কথাই বলবো ব্লগ আমারকে প্রতিদিন লিখতে অনুপ্রেরণা জোগায়। আর লিখতে চেষ্টা করি আপনাদের ভালোবাসায়।
শততম পোষ্টে এসে তাঁদের কথা লিখতে ইচ্ছে হচ্ছে। যাঁরা আমাকে বারবার মন্তব্য করে সাহস দিয়েছেন, লেখার শক্তি দিয়েছেন।
সবার প্রতি সবাইকে অনেক অনেক শুভেচ্ছা।
আমার পোষ্টে প্রথম মন্তব্যকারী-- অপূর্ব সোহাগ। ধন্যবাদ তোমাকে।
মন্তব্যকারী :
১০০তম সৈয়দ নাসের ভাই ♣ ২০০তম নিবিড় ♣ ৩০০তম আল্ কায়ামতি ♣ ৪০০তম আসমা বানু ♣ ৫০০তম শিমুল সালাহ্ উদ্দিন ♣ ৬০০তম আন্দালীব ♣ ৭০০তম এরং অথবা আমি ♣ ৮০০তম নুশেরা আপা ♣ ৯০০তম কবিতার আড্ডা ♣ ১০০০তম ফকির ইলিয়াস ভাই ♣ ১১০০তম অদৃশ্য ♣ ১২০০তম সাদা কালো ধূসর ♣ ১৩০০তম শত রুপা ♣ ১৪০০তম আবু সালেহ ♣ ১৫০০তম রুবেল শাহ ♣
আর শততম পোষ্টটির কথা যে দু'জন মনে করিয়ে দিয়েছেন কৃতার্থ তাঁদের কাছে সন্ধি এবং সহেলী ধন্যবাদ আপনাদের।
_______________♣ ♣ ♣ ___________
সে কথা বললেই তুমিই বলবে এতো লজিক্যাল কথা! তোমার কথা আমার যত দুশ্চিন্তা... আমি কি মিথ্যা বললাম কথাকলি, আমি তো জানি মিথ্যা কথারা 'বড়ই সামাজিক' হয়। তুমি এগুলেই পেয়ে যেতে পারো নতুন সিকোয়েন্স... অন্য কৌতূহল।
আমাকে টেনে রাখে নীল বাড়ির স্বপ্ন শেষসীমানা,কারো ইমোশনাল ভাব,হয়ত-বা দাঁড়াবে না আর... আমি ছায়ার ভেতর হাঁটি, ছায়ার ভেতর জাগি, ছায়ার ভেতর দেখি পুরোটা জগৎ সংসার। ছায়াসম্পর্ক হলে ক্ষতি কি? হউক না এই সব সম্পর্ক ভার্চুয়াল। আমার ছায়ারা চারিদিক বড়ই একাকি হাঁটে আর ইচ্ছেরা কেনো জানি ডালা পেতে দাঁড়ায় দূর পাহাড়ের চূড়ায়, এই চূড়ায় একা বসে থাকা আমায় কি মানান? হেঁটে গেলে কেনো যে আমার সাথে ছায়াও হাঁটে, গায়ে জড়িয়ে থাকে আমাকেও দর্শক বানায়।
আমার প্রথমপ্রেমিকা ওইছায়া, শেষপ্রেমিকাও সে। আমাদের বয়সেও ফারাক নেই, নেই চেহারাতেও অমিল।
সারাক্ষণ আমার পাশাপাশি থাকে সুখ-দুঃখ-হাসি-বেদনা ভাগাভাগি করি। সে অর্ধেক ঘুমিয়ে নেয়, আমিও অর্ধেক ঘুমাই। কারণ জীবনের খণ্ড খণ্ড ছায়াগুলো যেভাবে ছায়াছবিতে ফুটে ওঠে, তেমনি জীবনের বর্ণিল কথকতা গুলোকে ছিঁড়ে-খুঁড়ে ফ্রেমে বেঁধে রাখা আত্নহনন-আত্নলব্ধির জাল খুঁটে খুঁটে হৃদের কল্পকথাগুলোকে ছেনে-সেচে দেখার একটি নিরন্তর চেষ্টা...।
জীবনানন্দ যখন বলেন- কবিতা আর জীবন একই জিনিষের দুই রকমউৎসরণ; ফজলুররহমান বাবুল যখন লিখেন- 'কিন্তু, কবিতা কি? কেন কবিতার গহন-যাত্রা জীবনে-জীবনে ?' জয় গোস্বামী নিজেকে উপলব্দি করে যখন বলেন- 'জীবন নিয়ে এক লাইনও লিখা অসম্ভব'... বুদ্ধদেব বসুর ‘শীত রাতের প্রার্থনা’র শেষ স্তবক থেকে যদি বলি- শূন্যতার অজ্ঞাত গহব্বর থেকে নবজন্মেও জন্য প্রার্থনা করো, প্রতীক্ষা করো, প্রস্তুত হও। ... মোস্তাক আহমাদ দীন যখন লিখে ফেলছেন কথার ভেতর হাড়ের যত গোপন কথা আমি আর নতুন কি লিখব ভেবে পাইনা।
শুধু ভাবি লেখায় কেনো থাকে হাজার রহস্যবোনা কথা বারবার খেতে মন চায়। কিন্তু নিজের মতো করে খেতে পারি না বদহজমের ভয় থাকে। তবুও মনে-মনে ভাবি 'কবিতা সময়ের পাঠ নাকি সময়কে পাঠ করা'?
সে দ্বিধাদ্বন্দে আড়াল থেকে প্রাণের ভেতর একরৈখিকতা ঘুরে ফেরে আবদ্ধ করে, বৃত্তের ফাঁকে সীমাবদ্ধ করে রাখে তাও বলা যাবে না; না-বলা কথা ও কল্পনা। যদি বলি-একটাই তো জীবন তাকে আর কতটুকু ভেঙে ভেঙে দেখলে নিজেকে হবে জানা, বিপরীত হতে পারে, না-হলে বিরহকাতরতায় কেটে যাবে, ফেটে যাবে; বেঁচে থাকার বাতুলতা । কিন্তু আসলে কবিতা কী? শুধুই নিজেকে ভেঙেচুরে দেখা কিংবা নিজেকে উপলব্দি করার প্রাণান্তর চেষ্টা... তারচে’ বেশি জানি না।
আমার দ্বিধারা বিনা বাধায় এগুতে চায় বলেই থাকে স্পর্শহীন নিঃসঙ্গী; অকাতরতায় নিয়ত ঠেলে যাচ্ছি এমন জীবন, কিছুই জানে না মন... শোকপাখি। সে কথার ভেতর কথা বলার আপ্রাণ চেষ্টা আমার শারিরীক বসবাস যে ঘরে হয়, মনের বসবাস ঠিক তার উল্টো পথে হাঁটে বন্ধুটার নাম হতে পারে রক্তজবা, শাদাজেবা কবিতা কি এবং কেনো? কেনো কবিতার যাত্রা অনাধিকাল ধরে! এলাইনটি গত রাত থেকে আমাকে ভাবিত করল কারণ আমার পরিচয় যে আমি হারিয়ে ফেললাম তাঁর অনুভব-অনুভূতির ভেতর… আর ভাবলাম নার্ভাস নাইটি-নাইন এর আগে মৃত্যুটাকে ছুঁতে চাই।
কবিতা কাকে টানে? কবিতা কাকে খুঁজে? কবিতা কাকে গ্রেফতার করে? কেনো করে? কবিকে না পাঠককে? সে প্রশ্ন কাকে করবো? আমার আসা-যাওয়া, আমার পথ চলা আমার আহার-তন্দ্রা, কে আমাকে বেশি ভালোবাসে, কে আমাকে কাছে টেনে হিমের ভেতর ঘুম পাড়িয়ে রাখে, যদি বলো উত্তর পাবেন কবিতা!!! কবিতা মনের ঘরে হাসে, কাঁদে, কথা বলে, ঘুমোঘোরে আমাকে জাগিয়ে রাখে। কবিতা কখনও জ্বালায়, কখনও পোড়ায়, কখনও-বা নিঃসঙ্গ করে রাখে!!! কবিতা মাথা ব্যথার কারণও হয়! কবিতা রোগমুক্তির কারণও হয়, আবার কবিতা আমাকে শান্তি দেয়, তৃপ্তি দেয়, দীর্ঘশ্বাসের ভেতর আত্নকথা লুকিয়ে রাখি, সে আমার ভেতর হাসে-কাঁদে আমাকে ঘুমের বড়ি এনে দ্যায়। কবিতার ভেতর কি এমন মায়া আছে যা পাঠককে কাছে টানে, কবিরা মনের কথা গেঁথে সাজিয়ে রাখে কবিতার পরতে পরতে…।
আমি কি জানি কবিতা কিভাবে পাঠককে টেনে রাখে? জানিনা। কবিতা মনের না বলা কথা তাও বলা যাবে না। কবিতার তুমি-টা কে? সে রহস্য আজো অজানা। কবিতার গতি আছে, কবিতার প্রকৃতি আছে। কবিতা রূপসী হয়, কবিতা জানালায় উঁকি দ্যায়, কবিতা কখনো জ্বলে কখনো নিভে কখনো দ্যোতনা ছড়ায়।
কবিতা আমাকে পথে নামায়, বে-পথেও ছড়ায়! কবিতা শ্রেষ্ট সময়ের অভিব্যক্তি, শ্রেষ্ট সময়ের ধারণা।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।