আমি মাঝে মাঝে খুব হতাশ হয়ে পরি যে এই দেশে কোন দিন সুস্থ রাজনৈতিক চর্চা, সুস্থ মানসিক বিকাশ বা উন্নত জীবন ব্যাবস্থা আসবে কিনা। নিঃসন্দেহে একটি স্বতঃস্ফূর্ত গণজাগরণের সৃষ্টি হয়েছিল কদিন আগে
কিন্তু সেটা নিয়ে যে পরিমান রাজনীতি ও কূট চাল চলছে তাতে এটি স্পষ্টই প্রমানীত যে কিছু শক্তি বলছে, আপনি যতই নীতি বাক্য ছাড়ুন না কেন আমরা আছি না, আপনার নীতিকে বাস্তবায়িত হতে দেবই না।
খুব চাইছিলাম কোন একটা ইস্যুতে সমস্ত জাতি এক হোক, গড়ে তুলুক প্রতিরোধ, সৃষ্টি হোক স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা। সমগ্র রাষ্ট্র কাঠামো আওতায় আসুক সেই জবা্বদিহিতার জন আদালতে। মিডিয়ার যুগ এখন।
বিচার পদ্ধতি থেকে শুরু করে সরকারী সব কিছু উন্মুক্ত হোক জনগণের সামনে, ভিডিও চিত্র সহ। কিন্তু হায় উদ্যোগ নেবে কে? আপনি উদ্যোগ নিলে আমরা আছি আপনার পেছনে লাগার। আমাদের রাজনৈতিক ব্যাবসা মারবেন আর সুস্থ গনতন্ত্র ফলাবেন, তা হবে না দাদা। আপনি চলেন পাতায় পাতায় আমরা চলি শিরায় শিরায়। কয়দিন ধরে রাজনীতি করেন? আজ যদি পরিবর্তন না আসে, আজ যদি আপনার ক্ষীণ
মানসিকতার পরিবর্তন না হয়, আজ যদি আপনি ফেসবুকে বিকৃত মানসিকতার চর্চা করেন তবে আমি নিশ্চিত, আগামীর সমস্ত বিশৃঙ্খলার জন্য আপনিও অন্যতম দায়ী ব্যাক্তিদের একজন।
এবার বলি সাম্প্রতিক নাস্তিকতার প্রসঙ্গে।
বুঝলাম আপনি নাস্তিক, সম্মান জানাই আপনার উন্নত চিন্তাকে। কিন্তু আপনি অন্য ধর্মকে কটাক্ষ করতে পারেন না। আপনাদের একটা মনোগ্রাম, আর কিছু অধর্মীয়
মতবাদ তৈরি কুরুন, পারলে কিছু কাল্পনিক চরিত্রও তৈরি করুন তারপর সেটাকে বিশ্বব্যাপী প্রচার করুন। ভালো লাগলে আমরাও গ্রহণ করবো আপনাদের অধর্ম, কিন্তু অন্য ধর্ম নিয়ে শেয়াল কুকুরের মত টানা হেঁচড়া করেন কেন? আর যে সমস্ত শব্দ, বাক্য উল্লেখ করেন তাতে কি মনে হয়না আপনারা সুস্থ প্রক্রিয়ায় পৃথিবীতে আসেননি? যাই হোক, পৃথিবীর আদি থেকেই আপনাদের পূর্বসূরিরা ছিল বা থাকবে, আর আমাদের ধর্ম মতে বিধাতা আপনাদের করুনা করেননি।
আর অন্যদেরকে বলি জনমত তৈরি করুন এবং গনতান্ত্রিক উপায়ে এদের ব্লগ গুলো বয়কট করুন, গলা কেটে নয়। আমার ভাবতে অবাক লাগে সেই সমস্ত জঘন্য লোকদের যারা অন্যের চুরির অপরাধ বোঝাতে নিজে চুরি করে অন্যের পকেটে ঢুকিয়ে দেয়। বুঝলাম সে নাস্তিক, তার এসব লেখতে খারাপ লাগে না, কিন্তু আপনি তো আল্লাহর নেক বান্দা। আপনি ধর্ম নিয়ে বাজে কথা লিখতে কি একবারও হাত কাঁপল না। আমার তো মনে হয় ও, আপনার থেকে বেটার।
ও সাহসিকতার সাথে নিজের নাস্তিকতা প্রকাশ করে আর আপনিও লেখেন তাও আবার চুরি করে। প্রায়ই দেখি মিথ্যা বানোয়াট কথা, ছবি দিয়ে ইসলাম প্রচার করে কিছু ধর্মান্ধ মানুষ। আর তাদের জন্যই আজ ইসলামের এই দশা। আপনি সুস্থ ইসলামী চর্চা করবেন, প্রকাশ করবেন তাতে কেউ দেখুক আর না দেখুক কিছু যায় আসেনা।
এবার আসি শাহবাগ প্রসঙ্গে।
এটি একটি গন মঞ্চ। এখানে হিন্দু, মুসলিম, বৌদ্ধ, খ্রিষ্টান, আস্তিক, নাস্তিক, চোর, গুন্ডা, সাধু, দুর্নীতিবাজ সবার সমাগম। এমন না যে, এইখানে যারা আসছে সবাই সাচ্চা মুসলিম, দুধে ধোয়া তুলসী পাতা বা অনুসরনীয় আইকন। সবাইকে নিয়ে বাংলাদেশ। এদের অনেকেরই চারিত্রিক বৈশিষ্ট খারাপ-ভালো হতে পারে।
এখানে যেমন আছে অধ্যাপক তেমনি আছে রিকশাওয়ালা। ফেসবুক প্রোফাইল ঘাঁটলে দেখা যাবে কারও দুই বউ বা দশ প্রেমিকা। কিন্তু সবাই মুক্তিযুদ্ধ সমর্থক বা ৭১ এর নির্মম নির্যাতনের বিরোধী। হয়তো কারও মা, ভাই বা বোনের হত্যার বিচার চায়। হতে পারে একজন পতিতাই
স্বাধীনতা আন্দোলনে উপস্থিত বা স্বাধীনতা চায়।
আজ কোন হিন্দু, বা পাঁচ বউওয়ালা লোক, বা পতিতা, আন্দোলনরত অবস্থায় খুন হয়, তবে কি আন্দোলনের সবাই বসে থাকবে? তার বিচার চাওয়া হবে না? অথবা ব্যাপারটা কি এমন যে, তাহরির স্কয়ারে একজন দুশ্চরিত্র অপরাধী ধরা পড়ল আর সাথে সাথে সবাই আন্দোলন ছেরে, গাঁটটি গুটটি গুছিয়ে বাড়ি চলে গেল। এখানে সবার উদ্দেশ্য ৭১ এ মানুষ হত্যার, ধর্ষনের বিচার চাওয়া, অন্য কিছু না। আর কেই বা চাবে না, আমি আজও দেখলাম তদকালীন বিশ্ব মিডিয়ার ধারনকৃত ধর্ষিত নারীদের নিয়ে একটি রিপোর্ট। কি ভয়াবহ সেই অবস্থা! আপনিকি পারতেন আপনার বোন নির্যাতিত হলে আপনি চুপ করে থাকতে, বা থাকা উচিত? নাকি বলবেন,তাঁরা আমাদের নেতা আর যৌবনকালে মানুষ এসব একটু আধটু করেই থাকে। এর উত্তরে অনেকে বলেন, বুঝলাম এই পক্ষ এইটা করছে, কিন্তু ওই পক্ষ যে ওইটা করছে তার বিচার করেন।
আমার কথা good, raise your voice! চুপ করে থাকলে তো হবে না সবার বিচার দাবি করুন। আরে বাবা, আওয়ামীলীগ কে বিচারের সুযোগ দেবো কেন?
আমি একটি পরিপূর্ণ ইসলামীয় আদর্শিক দলের নেতা, আমার কর্মীরা যদি ইসলাম বিরোধী কাজ করে থাকে তবে আমি নিজেই খুজে বের করে তাদের বিচার করবো, খুনের বদলা খুন, একেবারে পাথর নিক্ষেপ করে। আপনি সৎ বাবা হয়ে থাকলে আপনার সন্তানের অপরাধের বিচার অন্যরা চাওয়ার আগেই তাকে আপনি শাস্তি দেবেন, তাইনা? কিন্তু হায়! একবার জনাব মুজাহিদ কে জিজ্ঞাসা করা হল যুদ্ধাপরাধী সম্পর্কে, তিনি বললেন বাংলাদেশে কোন যুদ্ধাপরাধী নেই। একেবারে সাফ কথা।
আমার কথা বৃত্তের বাইরে এসে, নির্দলীয় ভাবে তুলে ধরুন সমস্ত অপরাধ।
প্লাটফর্মটাকে শক্ত করুন। আজ যদি বিতর্ক সৃষ্টি করেন তবে, আপনার বিতর্কের সুযোগে সকল অপরাধীরাই পাশ কাটিয়ে বেঁচে যাবে, হোক সে কাদের মোল্লা বা হোক সে মখা। আর যদি বলেন এতদিন পর এসব বিচার ফিচারের দরকার নাই, তবে আমি আপনার বাবাকে মেরে আপনার সকল সম্পত্তি লুট করে ২০ বছর আমেরিকা থেকে আসি, তারপর নিশ্চয়ই বিচার হবে না। মনে রাখবেন এই প্লাটফর্মটাই হতে পারে আপনার ভবিষ্যতের সকল দাবী আদায়ের মাধ্যম, শুধু আজকের বিচার নয়। পারলে এই প্লাটফর্মটাকে বুদ্ধি দিয়ে, মত দিয়ে, গঠনমুলক উন্নয়ন করুন, বিচারের সচ্ছতার দাবী করুন, অপরাধীদের তালিকায় আরও নাম সংযোজন করুন, ক্রমে ক্রমে অন্যান্য দাবী দাওয়া তুলে ধরুন আর না পারলে অফ যান তবু প্লিজ ভালো কিছুকে নষ্ট করে দেবেন না।
এমনিতেই আমাদের রাজনৈতিক সংস্কৃতি অনেক জঘন্য, এর থেকে পরিত্রান পাওয়া অনেক দুস্কর। এখন যখন খর কুটোর মত হলেও একটু সুযোগ এসেছে, আসুন সকলে শক্তি দিয়ে এই খর কুটোকে জাহাজ বানিয়ে পারি দেই আগামীর পথ। আমার বিশ্বাস আমরা যারা এটা পরছি, তাঁরা মানসিক ভাবে ১৮+। ।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।