আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি :: আর্দ্রতা মাপার বিশেষ স্যাটেলাইট এসএমওএস এখন কক্ষপথে

এই ব্লগে মৌলবাদী, রাজাকার এবং জামাত শিবিরের প্রবেশ সম্পূর্ণরূপে নিষিদ্ধ।
ইউরোপীয় মহাকাশ সংস্থার একটি বিশেষ স্যাটেলাইট প্রায় ৩ বছর ধরে ভূ-পৃষ্ঠে আর্দ্রতার সূক্ষ্ম পরিমাপের মাধ্যমে জলবায়ু পরিবর্তন সম্পর্কে গুরুত্বপূর্ণ তথ্য সরবরাহ করবে। আগামী ডিসেম্বর মাসে কোপেনহেগেনে বিশ্ব জলবায়ু সম্মেলন অনুষ্ঠিত হতে চলেছে। কিয়োটো প্রোটোকলের উত্তরসুরি চুক্তি সম্পর্কে ঐক্যমত সৃষ্টি করার লক্ষ্যে জোরালো প্রস্তুতি চলছে। কিন্তু যে বিষয়টি নিয়ে বিজ্ঞানী ও রাজনৈতিক মহলে প্রবল বিতর্ক দেখা যায়, তা হল জলবায়ু পরিবর্তনের কুপ্রভাব সম্পর্কে স্পষ্ট তথ্য-প্রমাণের গ্রহণযোগ্যতা।

প্রেক্ষাপট: ইউরোপীয় মহাকাশ সংস্থা ইএসএ গত ২রা নভেম্বর ২০০৯ তারিখে এসএমওএস নামের একটি স্যাটেলাইট উৎক্ষেপণ করেছে, যার মূল কাজ পৃথিবীর বুকে জলবায়ু পরিবর্তনের স্পষ্ট চিহ্ন খুঁজে বার করা। ভূ-পৃষ্ঠ থেকে প্রায় ৭৬০ কিলোমিটার উপরে কক্ষপথ থেকে এসএমওএস এই কাজ করবে। এসএমওএস স্যাটেলাইটটি রাশিয়ার প্লেসটেস্ক কসমোড্রোম থেকে উৎক্ষেপণ করা হয়েছে। ইউরোপের একাধিক দেশের বিজ্ঞানীরা প্রায় ৩১ কোটি ৫০ লক্ষ ইউরো মূল্যের এই স্যাটেলাইট তৈরি করেছেন। তাঁরা এমন ধরনের পরিমাপের যন্ত্র গড়ে তুলেছেন, যা এর আগে কখনো ব্যবহার হয় নি।

যেমন ‘মিরাস’ নামের এক যন্ত্রের সাহায্যে এক অভিনব পন্থায় মাটির আর্দ্রতা ও সমুদ্রের পানিতে লবণের পরিমাণ মাপা হবে। ভূ-পৃষ্ঠের উপর মাইক্রোওয়েভ তরঙ্গের প্রতিফলনের ভিত্তিতে এই সূক্ষ্ম পরিমাপ করা হবে। শুকনো বা ভিজে মাটি এবং লবণাক্ত বা মিষ্টি পানির ইলেকট্রো-ম্যাগনেটিক চরিত্র আলাদা হওয়ার কারণে এটা সম্ভব হবে। স্যাটেলাইটের বৈশিষ্ট্য: এসএমওএস স্যাটেলাইটের মধ্যে অত্যন্ত উন্নত প্রযুক্তির বেশ কয়েকটি যন্ত্র রয়েছে। তার সাহায্যে সমুদ্রের পানির লবণের মাত্রা পরিমাপ করা হবে।

সেইসঙ্গে মাটির আর্দ্রতাও মেপে দেখা হবে। মাটির মধ্যে যে পানি থাকে, তার পরিমাণ বেশী না হলেও পানির পরিবর্তন প্রক্রিয়ার ক্ষেত্রে এই আর্দ্রতার অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রয়েছে। পৃথিবীর বুকে যে পরিমাপ চালানো হয়, তার সঙ্গে স্যাটেলাইট থেকে পাঠানো তথ্য তুলনা করে দেখা হবে। এই বিপুল তথ্যভান্ডারের মাধ্যমে গোটা বিশ্বে পানির পরিবর্তনের প্রক্রিয়ার উপর নজর রাখা সম্ভব হবে। আবহাওয়াবিদদের কাছে এই প্রক্রিয়া সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।

সমুদ্র কোন স্থির জলাধার নয় – নানা ধরনের স্রোতের ফলে পানির ক্রমাগত প্রবাহ ঘটতে থাকে। যেসব বিষয় এই স্রোতের প্রবাহের গতি-প্রকৃতি স্থির করে, তার মধ্যে লবণ অন্যতম। বিশ্বের বিভিন্ন সাগর ও মহাসাগরের মধ্যে স্রোতের আদান-প্রদান ঘটে উষ্ণতার তারতম্যের কারণে, যার অন্যতম সূত্র হল লবণ। লবণের ঘনত্বের তারতম্য ঘটলে স্রোতের গতিও বদলে যায়। পরিবর্তনের এই প্রক্রিয়ার উপর সার্বিক নজর রাখতে বিজ্ঞানীরা বহুকাল ধরে অপেক্ষা করে রয়েছেন।

এই প্রক্রিয়া পর্যবেক্ষণের মাধ্যমে তাঁরা দীর্ঘমেয়াদী প্রবণতা এবং সেইসঙ্গে জলবায়ু পরিবর্তন সম্পর্কে স্পষ্ট ধারণা অর্জন করার আশা করছেন। এই জ্ঞানের ভিত্তিতেই ভবিষ্যৎ সম্পর্কে পূর্বাভাষ দিতে পারবেন তাঁরা। সবকিছু পরিকল্পনা অনুযায়ী চললে এসএমওএস স্যাটেলাইট দিনে ১৪ বার পৃথিবী প্রদক্ষিণ করবে। এভাবে ধাপে ধাপে ভূ-পৃষ্ঠের সম্পূর্ণ এলাকাই মেপে দেখা হবে। আগামী বছরের শুরুতেই প্রাথমিক তথ্য প্রকাশ করা হবে।

গত ২৩শে নভেম্বর ২০০৯ তারিখে এটি প্রথম ডাটা প্রেরণ করে, বিজ্ঞানীরা সেই ডাটা নিয়ে ইতিমধ্যে গবেষণা শুরু করেছেন। প্রায় ৩ বছর ধরে এই স্যাটেলাইট কাজ চালিয়ে যাবে বলে ধরে নেওয়া হচ্ছে। ইউরোপিয়ান ইউনিয়নভুক্ত বিভিন্ন দেশের গবেষণা কেন্দ্রে স্যাটেলাইট থেকে পাঠানো তথ্য বিশ্লেষণ করা হবে। তথ্যসুত্র ১ তথ্যসুত্র ২ তথ্যসূত্র ৩ তথ্যসুত্র ৪
 

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.