আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

ভেবে ভেবে বলি, তুমি আরেকটু ভাব

মানুষের সবচেয়ে বড় ক্ষমতা কিংবা অক্ষমতা এক জায়গায় কেন্দ্রীভূত। তা হলো নিজের উপর নিয়ন্ত্রন

ভেবে ভেবে বলি, কিছু কিছু ব্লগারের ক্ষেত্রে ব্লগের পরিচয়কে আমি ঠিক গুনি না। কারন এদের সাথে ভার্চুয়ালের চেয়ে বাস্তব জীবনে অনেক ভালো পরিচয় আছে। তুমিও তাদের মধ্যে একজন। সহব্লগারের আগে তুমি আমার কলিগ, তারো আগে বন্ধু মানুষ।

এত সম্পর্কের দোহাই দিয়া আজকে কয়টা কথা বলে ফেলি। অনেক অনেক কিছু হয়ে গেল। মাঝে মাজে আমার মনে হয় ভুলের শুরুটা বোধহয় তুমিই করছো। এইটা আমি আগেও বলছি। আজকে আরেকবার বলছি।

আমার এখনো মনে আছে, যেইদিন বনানীতে ব্লগারদের আড্ডা হল, সেইআড্ডা পোষ্টে তুমি কমেন্ট করেছিলে, আর কেউ না হোক অন্তত 'কালপুরুষ' নামক নিকের জনৈক ভদ্রলোকের সাথে তোমার একবার অন্তত দেখা করার শখ। তখন অনেক হেসেছিলাম ওই কমেন্ট দেখে। উদ্দেশ্য মূলক কোনো হাসি না। পোষ্টের অন্য কমেন্ট গুলোর পাশে খুব খাপছাড়া একটা কমেন্ট ছিল সেটা। আমি ঠিক নিশ্চিত না যে এর আগে ওই নিক তোমার কোনো পোষ্টে কোনো কমেন্ট করেছে কিনা? তবে এটাই শুরু।

এটা খুব স্বাভাবিক একটা ব্যাপার। কেউ যদি ব্লগে লিখত যে রাকিবকে দেখার তার খুব শখ, সেটা মেয়ে নিক হলেতো কথাই নাই, এমনকি ছেলে নিক হলেও আমি তার সাথে দেখা করতাম। এবং এটা একবার ঘটেছেও। আমি ব্লগের কোনো আড্ডায় যাই না। আমার ভালো লাগে না।

কিন্ত একজন প্রবাসী ব্লগার (ছেলে) দেশে এসে আমাকে ফোন করেছে, আমার সাথে দেখা করতে চায়। আমি তার সাথে দেখা করেছি। সেটা ছেলে না হয়ে একটা মেয়ে হলে আমি সমান আনন্দ নিয়ে দেখা করতাম। তোমার ওই কমেন্টের পর ওই নিক তোমার প্রতি একটু বেশি নজর দেবে এটাই স্বাভাবিক ছিল। এটা না বোঝার মতন বয়স নিশ্চয় তোমার না, তাই না?এখন নজরদারীর ব্যাপারটা মানুষে মানুষে আলাদা হবে।

এটাতো তোমার মাথায় রাখতে হবে। অফিসে জয়েন করার পর তোমাকে দেখে মাত্র মনে হয়েছিল এই মেয়েটাকে আমি কোথায় যেন দেখেছি। এক বছর পার হয়ে গেল ওই মনে হওয়াতে। আর জানাই হয় নাই কোথায় দেখেছি। তারপর গ্রুপসের মেইল পেয়ে জানতে পারলাম তুমি কলেজে আমার ক্লাসেই পড়তে।

তখন বুঝতে পারলাম আসলে দুই বছরের চেনা মুখ। অপরিচিত লাগারতো কথা নয়। এত কিছুর পরেও তোমার কাছ থেকে তোমার ফোন নাম্বার চেয়েছি মনে পড়ে না। এই ব্যাপারটা আমার কাছে এত সহজ মনে হয় না। একটা মেয়ের কাছ থেকে ফোন নাম্বার চাওয়া।

সে জন্য একটা মিনিমাম সম্পর্কের দরকার আছে। সেটা কতটুকু এটাও মানুষে মানুষে আলাদা হবে এটাও স্বাভাবিক। তবে আমার মনে হয় একটা মেয়েকে এই সুযোগটা দেয়া উচিত। সে নিজে থেকে দিতে অথবা নিতে চাইলে ব্যাপারটা অনেক স্বস্তিদায়ক। আগবাড়িয়ে বলাটা অনেক ক্ষেত্রে বিপদজনক।

আমি যদি আমার চেয়ে বয়সে বেশ ছোট একটা মেয়ের কাছ থেকে ফোন নাম্বার চাইতে যাই, আর সে যদি সবার সামনে ফোন নাম্বার দিতে অস্বীকৃতি জানায়, ব্যাপারটা নিশ্চয়ই খুব আনন্দদায়ী হবে না। আবার এমন যদি হয়, মেয়েটা বয়সে গুরুজন মানুষের প্রতি শ্রদ্ধা প্রর্দশন করে আমাকে নাম্বারটা দিয়েও দেয়, তারপরেও অনেক কথা রয়ে যায়। একটা মেয়ের ফোন নাম্বার পেলাম মানেইতো এই নয় যে দিন রাত ফোনের উপর ফোন করতেই থাকলাম। আমাকে আগে বুঝতে হবে মেয়েটা আসলে আমার সাথে কথা বলে স্বস্তি পাচ্ছে কিনা? কিংবা আমি যে তাকে ফোন করছি তাতে সে সামান্যও বিরক্ত বোধ করছে কিনা? এই সমস্ত ব্যাপার হলো কমন সেন্স। বয়সের সাথে সাথে (এই সেন্সের জন্য অনেক বয়স হতে হয় না) সবারই এম্নিতেই হয়।

যাই হোক। একটা মানুষের সাথে কথা বলা, চলা ফেরা করা, হাই হ্যালো করা, খোঁজ খবর নেয়া, সব কিছুর জন্য ঐ মানুষের সাথে সম্পর্ক ডিফাইন করাটা খুব গুরুত্বপূর্ণ। সেইসব দিক চিন্তা করলে ব্লগের পরিচয়টা অনেক দীর্ঘদিন খুব সামান্যই থাকে বলে আমি মনে করি। এই সামান্য সম্পর্ক্টা গভীর হতে অনেক সময় প্রয়োজন। এই বিষয়টা তোমার বুঝতে হবে।

তুমি যদি তোমার বাস্তব জীবনের বন্ধুর সাথে ব্লগে যেভাবে কথা বল, সেটার ব্লগীয় বন্ধুর সাথে কথোপকথন মিলিয়ে ফেল, আমার মনে হয় বড্ড ভুল হবে। আর দুটো মিলিয়ে প্রপ্তির খাতা যদি একি ভেবে বসে থাকো তাহলেতো কথাই নাই। এটা একান্তই আমার ব্যক্তিগত মতামত। এবার আরেকটা গুরুত্বপূর্ণ কথা বলি। আমি সবসময় মনে করি, সব কিছুর সরাসরি কথোপকথন হলো সবচেয়ে বড় সমাধান।

সব কিছু খোলা খুলি কথা বলাই ভাল। সমস্যা হবেই, সমস্যা থাকবেই। আশে পাশের সব মানুষ তোমার মন মতন হবে না। সবাই তার নিজের মতন। তোমার যেমন কাউকে ভাল নাও লাগতে পারে, এমন অনেকে আছে যাদের তোমাকেও ভাল নাও লাগতে পারে।

তুমি যেমন প্রথম পরিচয়ে কাউকে মোবাইল নাম্বার দিতে স্বস্তিবোধ কর না, কেউ দুই দিনের পরিচয়ে তোমাকে এস,এম,এস এর পর এস,এম,এস দিবে দিবে, ফোন না ধরলেও ফোন করবে, রাত তিনটায় এস,এম,এস করবে। তোমার ভাল না লাগলেও তুমি পছন্দ না করলেও তার কাছে এটা হয়তো স্বাভাবিক। তাকে তোমার সরাসরি বলা উচিত, যে তুমি এটা পছন্দ করছ না। সরাসরি না বলে মনে মনে মন কষে দাঁতে দাঁত চেপে গালি দিয়ে কিছু হয় না। সমস্যা বাড়তেই থাকে।

এবং অনেক বড় আকার ধারন করে। একটা মেয়েকে একটা ছেলের চেয়ে অনেক বেশি না বলতে জানতে হয়। এবং সেটা অনেক আগেই শিখতে হয়। এটা হয়তো আমাদের সামাজিক সমস্যা। কিছু করার নাই।

যাই হোক অনেক কথা বলে ফেললাম। ব্লগে এত কথা বলা সমিচীন হলো কিনা জানি না। তুমি যে আমার বন্ধু মানুষ এটা দিয়েতো মডারেটররা ধুয়ে পানি খাবে না। এই পোষ্ট তুমি ক্ষমা সুন্দর দৃষ্টিতে দেখলেও তারা এটাকে আতশি কাচের নিচে নিয়ে যাবে। এবং এটাতে ব্যক্তি আক্রমন খুজে পাবে।

আসলেই এটা পুরোপুরি তোমাকে আক্রমন করে লেখা। হয়তো তুমি অনেক কষ্ট পাবে, কিন্ত কিছু করার নাই। ব্লগ হলো মনের কথা বলার জায়গা। এই কথাগুলো সামনা সামনি বলা হয়নি। তাই ব্লগে বলে গেলাম।


অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.