আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

বাংলাদেশের পানিতে আর্সেনিক কোথা থেকে আসছে, সে রহস্য ভেদ করা গেছে



বাংলাদেশের কোনো কোনো অঞ্চলে ভূ-গর্ভস্থ পানিতে আর্সেনিক বা সেঁকো বিষ কোথা থেকে আসছে তা শেষ পর্যন্ত গবেষকরা নির্ণয় করতে পেরেছেন। ইতিহাসে এর আগে এত ব্যাপক সংখ্যক মানুষ এমনভাবে কোনো বিষক্রিয়ার শিকারে পরিণত হয় নি। প্যারিস থেকে ফরাসি বার্তা সংস্থা পরিবেশিত খবরে আরো বলা হয়েছে, বাংলাদেশে কোটি কোটি গ্রামীণ মানুষের খাবার পানিতে আর্সেনিক বা সেঁকো বিষ কি করে মিশে যাচ্ছে, সে রহস্য উদ্ঘাটনের জন্য গত প্রায় ৩ দশক ধরে বিজ্ঞানীরা গবেষণা চালিয়েছেন। নতুন এক সমীক্ষায় বলা হয়েছে, বাংলাদেশ বন্যা প্রতিরোধ প্রকল্প বাস্তবায়নের কাজে ব্যবহারের জন্য মাটি সংগ্রহের লক্ষ্যে যে হাজার হাজার পুকুর খনন করা হয়েছে সে সব পুকুর থেকে পানিতে আর্সেনিক মিশছে। বাংলাদেশে প্রায় ২০ লক্ষ মানুষ আর্সেনিক আক্রান্ত হয়েছে বলে একটি হিসেবে বলা হয়েছে।

এই বিষের কারণে বাংলাদেশে বহু মানুষ প্রাণ হারিয়েছে এবং মর্মান্তিকভাবে প্রাণ হারানোর এই ধারা অব্যাহত থাকবে বলে বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন। নলকুপের পানিতে আর্সেনিক পাওয়া যায় এ কথা বাংলাদেশের প্রায় সবাই জানেন। ভাগ্যের পরিহাস হলো, এ সব নলকুপ খনন করা হয়েছিলো গ্রামের মানুষদের বিশুদ্ধ পানির চাহিদা মেটানোর জন্য। বিশুদ্ধ পানির কোনো বিকল্প পথ না থাকায় বাংলাদেশের বহু অঞ্চলের মানুষ জেনেশুনেই আর্সেনিক আক্রান্ত নলকুপের পানি ব্যবহার করতে বাধ্য হচ্ছেন। বাংলাদেশের গ্রামের জনগণ এসব নলকুপকে সাধারণভাবে চাপকল বলে থাকেন।

এর আগের সমীক্ষায় দেখা গেছে, সবচেয়ে বেশি আর্সেনিক রয়েছে এমন চাপকলগুলো প্রায় ৫০ বছের পুরানো। এই সব পুকুরে যে জৈব কার্বন থাকে তার সাথে অনুজীবের বিপাকক্রিয়া ঘটে। আর এর ফলে এ সব পুকুরের তলানি থেকে আর্সেনিক নির্গত হয় এবং এগুলো চুইয়ে ভূ-গর্ভে যেতে বেশি সময় লাগে না। দুষিত পানি ও জৈব কার্বনের উৎস কি তা এতকাল বিজ্ঞানীরা খুঁজে বের করতে পারেন নি। এই রহস্যের সমাধান করেছেন চার্লস হার্ভের নেতৃত্বাধীন বোস্টন অবস্থিত এমআইটির একদল গবেষক।

এই গবেষক দলটি বাংলাদেশের মুন্সিগঞ্জ এলাকায় কাজ করেছেন। তারা দেখতে পেয়ছেন বেশি মাত্রায় আর্সেনিক রয়েছে এমন পানি আসছে পুকুর থেকে আর কম মাত্রা আর্সেনিক রয়েছে এমন পানি আসছে ধান ক্ষেত থেকে। আর্সেনিক অবমুক্ত করার সাথে জড়িত জৈব মিশ্রণ প্রথমে পুকুরের তলদেশে আশ্রয় নেয় তারপর তা চুইয়ে ভূ-গর্ভে যেতে থাকে। তাদের এই গবেষণার ফলাফল ন্যাচার জিও সায়েন্স সাময়িকীতে প্রকাশিত হয়েছে। পুকুরের পানির প্রভাব পৌঁছাতে পারে না এমন গভীরে নলকুপ খুড়লে বা ধান ক্ষেতের কাছে অগভীর নলকুপ বসালে আর্সেনিক মুক্ত পানি পাওয়া যেতে পারে বলে গবেষক দলটি মনে করছেন।

গবেষক দলটি বাংলাদেশে এমন কিছু নলকুপ বসিয়ে চূড়ান্ত পরীক্ষা করবে। #

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.