নিসঙ্গ দুপুর.....
-এম জসীম
এই আকাশ পোড়ে দ্রোহে
ক্ষোভে-অভিমানে
চৈতি খরার মত চৌচির যেমন
আমার বুকের মৃত্তিকা।
দহনে পোড়া শহরের পাশ দিয়ে
বয়ে চলে একা নদী; নি:শব্দ-নির্বাক
তেমনই আমার এই বসত
একাকী-নিসঙ্গ।
আমার চোখে জল জমে আছে
বুকে জলমগ্ন উঠোন
কাদার শরে দাড়াতে পারেনা স্থির
কেবলই চঞ্চল-বিষন্ন
ভয়ার্ত হরিণের মত
ছুঁটে পালানোর চেষ্টা।
আবার নিশি যাপিত হয়
আসে ভোর রবির আলিঙ্গনে
যৌবনে জাগে আশা
ভেজা কাপড় মেলে দেই উঠোনের দড়িতে
মায়ের ভেজা শাড়ির পাশে
স্যুটকেসে জমানো জামাগুলো
তুলি-মেলি ঘ্রাণ নেই
পুরনো বইয়ের গন্ধে
খুঁজি তোমার অস্তিত্ব।
ঘুটঘুটে তিমির আচ্ছন্ন ঘরময়
কদাচিৎ তোমার বিচরণ
আলো-আঁধারির মত চমকায় বিদ্যুৎ
নিমগ্ন নৈশব্দে-স্বপ্নের অলিন্দে
কাঁথামোড়া শীতার্ত বুকে...
আবার চৈতন্য ভেঙে
হারিয়ে যাও সুদূরে
পরীর ডানায় ভর করে।
তবু দ্বার খুলে রাখি
হাতের আঙুলগুলো
প্রহর গোনে অপোর...
না হয় এসো এক দুপুর বেলা
চিলের ডানায় ভর করে
না হয় কোন এক নিশীথে
এসো, স্বপ্ন নিয়ে
না হয় হৃদয়পোড়া গন্ধ দিও
ঘরময় ছড়িয়ে।
আমি যখন শুনি
দূর-ধূয়াসা থেকে
ভেসে আসে স্মিথ বাঁশির সুর
তখন বুঝি তুমি ছিলে একদিন
এই ঘরময় সুগন্ধির মত।
অথচ সঙ্গমের বীজ
কখনো পারেনি প্রসূতির স্বাদ দিতে
বড্ড অভিমানে নীল হয়েছো
পুড়িয়েছ দ্রোহ-দাহে।
তবু দিন- রাত যায় -আসে
শরীরের ভাজে জমানো বিষন্ন যত
ভেজায় গা-গতর, অন্তর-বিরহ।
ঘরময় নিরর্থক পায়চারি
বইয়ের পাতায়-মলাটে
ধুলো-বালির আস্তর তোমায় ভাবায়
উঠোনের ঘাসে বসি
পৌষ দুপুরের মত
নিস্তেজ হই
উঁঠি-হাঁটি, নতজানু হই একঘেয়েমিতে।
ঘরের ভেতরে অন্ধ, বন্ধ দেহ-মন
স্তব্ধ-গুমোট-রুদ্ধ কপাট
আমকে বরণ করে
এ পাঁচিল ঘেরা দেয়ালে টানানো
লোনা ধরা বিষন্ন ছবির মত
ফিরে-ফিরে আসে শুধু নিসঙ্গ দুপুর।
এম জসীম
লেখা: ২৪ এপ্রিল- ২০০৯
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।