এডিট করুন
একদিন আমি স্বপ্নে দেখলাম আমি মাটি খুড়ে একটা পাথরের মূর্তি পেয়েছি। শ্বেত পাথরের মূর্তি। এক অপ্সরার মূর্তি। আমি মূর্তিটিকে আমার ঘরে নিয়ে আসি। মূর্তিটি ধীরে ধীরে এক জীবন্ত মানুষে, জীবন্ত অপ্সরায় পরিনত হয়।
না শ্বেত পাথরের মত সে শুভ্র নয়। তার গায়ের রঙ শ্যমলাই বটে। কিন্তু তার মুখখানি অনেক মায়াময়। তার মৃণাল বাহু আর লবঙ্গলতার মত দেহপল্লবী আমাকে চিন্তায় ফেলে দেয়। মূর্তির প্রাণ প্রতিষ্ঠা হয়।
আমি জানিনা আমার তাকে ছেড়ে দিতে হবে কিনা। হয়তো ছেড়ে দিতে হবে। কিন্তু আমার দ্বিধা বাড়তে থাকে। আমি এক অজানা আকর্ষণ অনুভব করি তার প্রতি। তার চোখের দিকে তাকিয়ে আমি অন্যরকম এক গভীরতায় ডুবে যাই।
মনে হয় ওই চোখের ওপাশেই আমার পৃথিবীর শুরু। সেখানেই আমার পৃথিবীর শেষ। কিন্তু বাধা দেয় সমাজ। বিঘ্নের সমাজ, আচার আচরণ, আর কিছু সম্পর্কের বেড়াজালে আবদ্ধ আমি সেই চোখ প্রবেশ করতে পারি না। বাইরেই থেকে যাই।
তার হাত দুটি ধরে বলতে পারি না। কোথাকার সব দ্বিধা এসে জমা হয় আমার চারপাশে। সেও বলতে পারে না আমায় কোন কারণে। কিন্তু আমি বুঝে যাই সে কেন আমায় বলতে পারে না। কারণ সে তার গঠনতান্ত্রিক নিয়ম অনুযায়ী বয়ে বেড়ায় এক নিয়ম।
যেই মূহুর্তে সে আমাকে সেই কথাটি বলবে সেই মূহুর্তেই সে আবার পরিণত হবে পাথরের আপ্সরায়। যখনই আমি তাকে স্পর্শ করবে তখনই আবার সে আগের সেই শুভ্র পাথরে পরিণত হবে। সে আবার পরিণত হবে পাথরের মূর্তিতে। তার উপরে আছে এক নিষেধাজ্ঞা এ ব্যাপারে। তাই অপারগ সে কেবল আমার চোখের দিকে তাকিয়ে থাকে।
আমি তার হাতখানি ধরতে চাই কিন্তু পারিনা। কোথা থেকে যেন উপলব্ধি করি তা ঠিক হবে না। মন চায় তার হাতদুটি ধরে তার চোখদুটির দিকে তাকিয়ে থাকি। মনে হয় তাকিয়ে থাকি চিরকাল। তার কাজলরাঙ্গা কাল আপাত ভীত, আপাত ছলছল চোখদুটির দিকে আমার কেবলি তাকিয়ে থাকতে ইচ্ছে হয়।
আমি জানিনা কখন সে আমাকে ছেড়ে যাবে। তার চলে যাওয়া আমার জন্য মেনে নেওয়া সম্ভব নয়। এক বোবা যন্ত্রণায় আমার মন স্থবির হয়ে যায়। ভোতা আঘাত গুমরে গুমরে প্রকাশ দেয় আমার ভিতরে।
আমার মন খারাপ সেই অপ্সরার জন্য।
প্রেমে বোধহয় মানুষ এভাবেই পড়ে। কিভাবে পড়ে তা আমি জানিনা। শুধু হঠাৎ একদিন মনে হয় প্রেমে পড়ে গিয়েছি। এর মধ্যে কোন কামভাব নেই আবার আছেও। তবে কামভাব ছাড়িয়ে সেই ভালবাসার মানুষকে কাছে পাবার, কাছাকাছি থাকার আগ্রহই বড় হয়ে ওঠে।
কোন নিয়ম কানুন মানতে চায় না মন। তবুও নিয়মের আবদ্ধে গুমরে মরে, কষ্ট পায়।
আমিতো পারি না তারে ধরতে বা ছুতে, কাছে টেনে নিতে। সে বোবা হয়ে থাকে। বলতে পারে না কিছু মুখ ফুটে।
কারণ তাতে যে তার ঘটবে সর্বনাশ। আবার সে হয়ে যাবে প্রস্তর মূর্তি।
এইবার এইডার শানে নূজুল কইঃ
প্রথমত স্বপ্নটা ছিল শব্দহীন। পুরা বোবা। সেখানে শুধু কিছু অনুভূতির উপস্থিতি দেখা গেছে।
এই জিনিসটা আসলে স্বপ্নে দেখছি। যেই কমপ্লেক্সের কারণে এই স্বপ্নটা দেখছি তাও আমি বাইর করছি। আসলে আমার উপ্রে অনেক চাপ। কোন প্রকার সম্পর্কে জড়ানোর মত অবস্থা আমার নাই। কিন্তু বয়সের দুষ বইলা একটা জিনিস আছে।
একটা বয়সে মাইনষের মনে চায় সঙ্গী হিসাবে কাউরে পাইতে। তা সেইটা অবচেতন বা চেতন যে কোন মনেই এই চাওয়াটা ঘটতে পারে। এইখানে চাওয়া বলতে শারিরীক নয় মানসিক চাওয়া বুঝাইতাছে। আমার চেতন মনে না হইলেও সম্ভবত অবচেতন মনে এই ব্যাপারটা আছে।
দ্বিতীয়ত কিছুদিন আগে ইউটিউবে এক শ্যামলা, সুনয়নার নাচ দেখিয়াছি।
যতদূর সম্ভব ঐ সুনয়না ক্যাটালিষ্ট হিসাবে কাম করছে।
সঙ্গী দরকার অথচ নিজের উপরে বর্তানো দায়িত্বের কারণে কিছু করতেও পারি না। এই দ্বন্দই দ্বিধার সৃষ্টি করছে তার তার ফলস্বরুপ এই ভজঘট মার্কা স্বপ্ন। স্বপ্নের অপ্সরারে আমি ছুইতেও পারি নাই। কারণ আমার বর্তমান জীবনের নীতি তারে ছুইতে দেয় নাই।
মাথা থিকা কিছু হরমোন বাইর হইছে আর তার ফলস্বরুপ কিছু অনুভূতির দেখা পাইছি স্বপ্নটাতে। এই অনুভূতিগুলানই মনে হয় দেহাতীত ভালবাসার অনুভূতি। খ্রাপ না।
ভালবাসার গুষ্টি কিলাই।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।