কালার বাশিঁ হলো বাম বলে শুধু রাধা নাম
রাধা-কৃষ্ণের বৃন্দাবনে আজ নেই মলয় হাওয়া, অভিসার ভুলে দুজনই মনমরা। যমুনার কালো জলে প্রবল আলোড়ন। তুমুল স্রোতের গর্জন আজ ভেঙে দিয়েছে তাদের সোহাগ-শয্যা ।
কৃষ্ণরে রাধা ইশারায় বলে, কান পেতে শোনো স্রোতের আওয়াজ। কুঞ্চিত হয় কৃষ্ণের চোখ, তবে কী তাই সত্য! প্রেমের গহীনে মজে রাধার বিগড়ে গেছে মাথা।
স্রোতের ছলাৎ ছলাৎ, এতে আর নতুন কী আছে? তবুও প্রিয়তমা বলে কথা। রাধার মন রাখতে নিতান্ত হেলায় গর্জে ওঠা স্রোতে কৃষ্ণ কান পাতে।
আরে.. আরে.. আরে, কৃষ্ণ চমকে ওঠে। গর্জে ওঠা স্রোত আজ একি কথা বলে! স্রোতের শব্দ কই, শুনতে পায় শ্লোগান। লাখো মানুষের অহিংস হুংকার, স্বজন হত্যার বিচারের দাবীতে সোচ্চার।
রাধা বলে, প্রাণনাথ শ্যাম.. পদ্মশয্যার আলিঙ্গন আজ চলো ভুলে যাই। বৃন্দাবন ছেড়ে চলো শাহবাগ যাই। পুরাণের পাঠ আজ পরিত্যাক্ত হোক। যমুনার জলে নয় চলো জনতার স্রোতে গা ভাসাই।
মানব প্রেমের অমোঘ বানীর বাহক রাধা-কৃষ্ণের কণ্ঠেও আজ মানবতার দাবী।
মানবাধিকার লুন্ঠন করে যারা যুদ্ধের ময়দানে হাডুডু খেলার মতোই করেছে গণহত্যা, কেড়েছে নারীর সম্ভ্রম- ক্ষমা নেই সেই সব মানবতাবিরোধী পিশাচের।
রাধা তার গলার মালা ছুড়ে দিল শাহবাগের তরুণ প্রজন্মের বুকে,
অন্য এক প্রেমে তাই আজ উত্তাল তরুণ। দেশপ্রেম, দেশমাতৃকার প্রেমে মজে আছে তারা।
শাহবাগের আকাশে কৃষ্ণ ছুঁড়ে দিল তার প্রিয় রাখালিয়া বাঁশি। তারাবাতির ফুলকির মতো তরুণ-ব্লগারদের হাতে হাতে পৌছে গেল বাঁশি।
ওরা বাঁশি বাজিয়ে সবাই হয়ে গেল যেন হ্যামিলনের সেই বংশীবাদক। ওদের বাঁশিতে গর্জে ওঠলো শ্লোগান। দেশবিরোধী রাজাকারদের সর্বোচ্চ শাস্তির ন্যায্য দাবীতে তাই উছলে উঠেছে বাংলার মানুষ।
এই ডিজিটাল সময়ে গণমানুষের সংগ্রামে ব্লগার-তরুণরা হয়ে উঠেছে নুরুলদীন। ৫৬ হাজার বর্গমাইলের ১৬ কোটি মানুষ আজ শুনতে পাচ্ছে সেই আওয়াজ - 'জাগো বাহে কুণ্ঠে সবাই'।
বৃন্দাবন ছেড়ে রাধাকৃষ্ণও এখন শাহবাগের প্রজন্ম চত্বরে। মানব-মানবীর প্রেম ভুলে গেছে তারা আজ দেশকে ভালোবেসে।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।