আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

চেনা সুমনের অচেনা গান (বুড়ো গাইলেন বুড়োর গান!!)

যুদ্ধাপরাধীদের বিচার চাই । কাদঁতে আসিনি ফাসিঁ দাবী নিয়ে এসেছি ।
সেই ১৯৯৬!! ইঞ্জিনিয়ারিং ইনস্টিটিউট, সুমন গাইলেন ১৩ বছর পর, জীবন থেকে ১৩ বছর হারিয়ে যাবার গভীর বেদনা অনুভব করি । ঠিক ১৩ বছর আগে ১৯৯৬ সালে কলেজ জীবনের সেই উদ্দাম দিনগুলোতে প্রথম সুমন এলেন আর সেই প্রথম কনসার্ট!! অসাধারণ একটা স্মৃতি । সেবারের কনসার্টের আয়োজক ছিল "মুক্তিযুদ্ধ যাদুঘর" ।

তাদের ফান্ড রাইজ এর জন্য সুমনের গানের আয়োজন । সেবার টিকেট ছিল ৪০০ টাকা । আর শিক্ষার্থীদের পরিচয়পত্রের বিনিময়ে মূল্য আরো একটু কম (কত?? ভুলে গেছি) । তখন নটরডেম এ পড়ি । কলেজ থেকে আমরা বিশাল বাহিনী (কলেজের আরো অন্য কলেজের বন্ধুরা মিলে) টিকিট কিনতে বের হলাম ।

বেইলি রোড থেকে মুক্তিযুদ্ধ যাদুঘর কোথাও টিকিট পেলাম না । আজিজ এ । সব শেষ!! এখনও ?? আমাদের সবার মাথায় হাত । কিন্তু গান তো শুনতে হবে .... যদি কোন সুযোগ হয় সেই ভরসায় আমরা হাজির হলাম ভেন্যুতে ... আমাদের মতোন হাজার শ্রোতার ভিড়, যারা টিকিট পাননি । আমাদের মতো সবারই হয়তো প্রত্যাশা... যদিও!!! শুরু হয়ে অনুষ্ঠান, গান.. শুরু হলো হতাশ শ্রোতাদের হাঙ্গামা... পুলিশের মৃদু লাঠিচার্য, সেই ভয়ে সবার ইতিউতি দৌড়, আমরা পিছনের দিকটা নিরাপদ ভেবে চেপে আছি হঠাৎ সেখানে ভয়ংকর কোহিনুরের আগমন (পুলিশ!!) আমরা কোনিদক যাবো ভাবছি , দেখি পাশের কলাপশিপল গেট (বাথরুমের পাশে) ভাঙ্গা আমরা গলা ঢুকিয়ে দিলাম, দেখি পৌছেঁ গেলাম অডিটোরিয়ামের বাথরুমে , আমাদের আর পায় কে!! আস্তে আস্তে অডিটোরিয়ামে ঢুকে গেলাম, যেন বাথরুমে সেরে আসলাম আর কী!! কিন্তু ভিতরে তো বসার জায়গা নেই , আমরা ৬ বন্ধু শেষে বসে পড়লাম দরজার পাশে যে কাঠের দেয়াল সেই স্লপে... ততোক্ষনে মাত্র শুরু হলো...সব আমাদের জন্য!!! মাত্র ৩য় গান ।

আহা কী সুখ!! কী আনন্দ !!! এই ২০০৯!! ধানমন্ডি ২৭ এর দেয়াল এ চোখ এ পড়ল সুমনের গান পোস্টার, আকার নক্সা কোনটাই আকর্ষনীয় নয় স্রেফ নামটা ছাড়া , সুমন !!। দেখতে যাবো কিনা বুঝতে পারছি না ! বৌয়ের ইচ্ছা যাবে । শেষ পর্যন্ত বন্ধুদের কল্যাণে যাওয়া, টিকিট করে বলল সময় মতো চলে আসতে । ভেন্যুতে পৌঁছে দেখি সব আমরা আমরা !! নতুন কোন দর্শক (আমাদের মতন একটু বয়স্ক সবাই) দেখলাম নাহ, আরো বেশি দামের টিকিট এর সব এলিট দর্শক ছাড়া । আমরা যারা দর্শক সবাই সম্ভবত সুমনের একনিষ্ঠ ভক্ত, যারা প্রথম এ্যালবাম থেকেই সুমনের ভক্ত ।

অনুষ্ঠান শুরু হলো, ইঞ্জিনিয়ারিং ইনস্টিউট এর খুব করুণ দশা, সিট থেকে শুরু করে সব কিছু, আমরা ২য় তলায় , সুমনের চিকচিক মাথাটা ছাড়া আর কিছূ ভালোভাবে দৃষ্টিগোচর হয়না । তারপরো হতাশ না হয়ে অপেক্ষা, আয়োজক ছোকড়ার সেই নাট্যব্যক্তিত্বদের সমকক্ষ হবার অহমিকা, সংহিত দেখিয়ে বিশ্ব শান্তিতে আগামীতে নোবেল পাবার বাসনা প্রকাশ বিরক্ত করল (একবারো ভেন্যু বদল করে শ্রোতাদের এমন বিপদে ফেলার জন্য দুঃখ প্রকাশ কিংবা ক্ষমা চাওয়ার বিনয়টুকুও প্রকাশের সৌজন্যতা শেখেনি )। গান শুরু হলো, এতো নির্লিপ্ত সুমন (মনে হলো মন ভালো নেই) সব নতুন গান, নিজেদের খুব বুড়ো মনে হলো, ব্যাকেডেটড মনে হলো (আসলেই সুমনের ইদানিংকার গান গুলো তো শোনা নয় কারো) , নাহ পড়ে দেখি আমরা যারা তার ভক্ত তারা সবাই সেই পুরোন গানের ভক্ত । আর বারে বারে বুড়ো(সুমন) ঢুকে পড়ছিল বুড়োর গানে ... মানে রবীন্দ্র সংগীতে.. সেই গান গুলো পরিচত বলে মন্দ লাগেনি । দু-চারটা পুরোনো গান আর অনেকগুলো পুরোনো মুখের সাথে কিছুক্ষনের মিলন-আড্ডা এবং সেই ১৩ বছর আগের সুমনের গানের স্মৃতি নিয়েই ঘরে ফেরা ।

আয়োজক চিরকুটকে বলবো আরো একটু পরিনত হতে, মনে আর মননে । (চোখে লাগে এমন নির্লজ্জ ব্যবসা!! সুমনের গান ৩০০০ টাকা তাও ই.ই-এ ?? উইন্টার গার্ডেন হলে ও কথা ছিল) "রাহা "
 

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.