শুরুতেই কবুল করে নেওয়া ভালো, আমি শৈশব থেকে ব্রাজিলের সমর্থক। ম্যারাডোনার ভক্তও নই। তারপরও আগামী কাল বাংলাদেশ সময় ভোর ৪টা ৫৫তে অনুষ্ঠেয় বাছাই পর্বের শেষ ম্যাচে আমি আর্জেন্টিনার জয়ের জন্য ওপরওয়ালার কাছে প্রার্থনা করি। কারণ এটা আর্জেন্টিনা এবং প্রতিপক্ষ উরুগুয়ে উভয়ের জন্য ফাইনাল। যে জিতবে সেই চলে যাবে চূড়ান্ত পর্বে।
দক্ষিণ আমেরিকা থেকে বিশ্ব কাপে সরসরি খেলতে পারবে ৪টি দল। আরেকটিকে যেতে হবে প্লে-অফ ম্যাচ জিতে। ব্রাজিল, প্যারাগুয়ে ও চিলি চূড়ান্ত পর্বে খেলার টিকেট পেয়ে গেছে। রইলো বাকী (সরাসরি) এক ! সেটারই ফয়সালা হবে কালকের ওই ম্যাচে।
যদি 'ঈশ্বরের হাত' ওয়ালা হেরে যান ( তাঁর ঈশ্বর না করুন) তাহলে যেতে হবে প্লে-অফের মামলায়।
কিন্তু সেটা সহজ মামলা নয়। সেখানে প্রতিদ্বন্দ্বী অনেক। আছে বহু হিনাব নিকাশ। এই ম্যাচের হারু পাট্টির সাথে প্লে-অফে আসবে ইকুয়েডর, ভেনেজুয়েলা।
উরুগুয়ের সাথে আর্জেন্টিনার একটা বহু পুরনো হিসাব আছে।
প্রথম বিশ্বকাপ ফাইনালে ১৯৩০ সালে মুখোমুখি হয়েছিলো উরুগুয়ে ও আর্জেন্টিনা। এখনকার মতো ফিফা তখন এডিডাস,নাইকির বাণিজ্যের কাছে জিম্মি ছিলো না। তাই খেলায় অংশ নেয়া দলের দেশে তৈরি ফুটবল ব্যবহারের বিথান ছিলো। কথা উঠলো কোন দেশের বল দিয়ে খেলা হবে? নানা বিতণ্ডার পর ঠিক হলো প্রথমার্ধ হবে আর্জেন্টিনার বলে দ্বিতীয়ার্ধ হবে উরুগুয়ের বলে। প্রথমার্ধে আর্জেন্টিনা নিজেদের দেশে তৈরি বলে খেলে ২-০ গোলে এগিয়ে থাকলো।
দ্বিতীয়ার্ধে উরুগুয়ে নিজেদের দেশে তৈরি বলে খেলে ৪ গোল দিলো। ফলাফল উরুগুয়ে ৪-২ গোলে জয়ী। প্রথম বিশ্বকাপ চলে গেলো উরুগুয়ের ঘরে। ( নাম ছিলো জুলে রিমে ট্রফি যেটা ব্রাজিল ১৯৭০ সালে তৃতীয়বারের মতো জিতে চিরকালের জন্য নিজেদের করে নিয়েছে। বর্তমান কাপটির নাম হ্যাভেলান্জ ট্রফি।
সাবেক ফিফা সভাপতি ব্রাজিলের জোয়াও হ্যাভেলান্জের নামে। )
আবার একটা ডু অর ডাই ম্যাচে মুখোমুখি হচ্ছে দু'বারের বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন উরুগুয়ে (১৯৩০ ও ১৯৫০) এবং দু'বারের বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন আর্জেন্টিনা (১৯৭৮ ও ১৯৮৬)। হিসাবটা সহজ ভাবা যাচ্ছে না। কারণ ১৯৩০ বিশ্বকাপ ফাইনালে হেরে আর্জেন্টিনাকে বিশ্ব কাপ জয়ের জন্য অপেক্ষা করতে হয়েছিলো মাত্র ৪৮ বছর !
আবারো প্রার্থনা আর্জেন্টিনার জন্য। আর্জেন্টিনার মতো আকর্ষণীয় দল না থাকলে বিশ্ব কাপের আকর্ষণ কিছুটা হলেও কমবে।
ম্যারাডোনাকে মাঠের পাশের বেঞ্চিতে দেখার একটা আলাদা আনন্দও তাহলে সবাই মিস করবে। ব্রাজিল সমর্থক হয়েও এটা আমি চাইনা।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।