আমরা বাংলাদেশের মহান মুক্তিযুদ্ধ দেখিনি কিন্তু মুক্তিযুদ্ধের চেতনা আমাদের শরিরের প্রতিটা শিরায়-উপশিরায় প্রবাহিত। আমরা বাংলাদেশের কোন রাজনৈতিক দলের সাথে সম্পৃক্ত নই। হ্যাঁ, আমরা শুধু একটা শব্দই বুঝি আর বুঝি আর বুঝতে চাই তা হল ”বাংলাদেশ”। যে প্রত্যয় আর আদর্শকের সামনে রেখে আমাদের একটি মুক্তিযুদ্ধ হয়েছিল সেই আদর্শিক চেতনার উপর আমরা নতুন প্রজন্মরা বিশ্বাস রাখতে চাই, আস্থা রাখতে চাই। আমরা বুঝে ফেলেছি বাংলাদেশের চলমান রাজনীতি হল ভোটের রাজনীতি, ক্ষমতায় যাওয়ার নোংরা রাজনীতি আর কিছুই নয়।
আমরা এই রাজনীতিতে বিশ্বাস করি না। যারা আদর্শের কথা বলে বেড়ায় আবার প্রগতিশীলতার ধূয়া তুলে রাতের অন্ধকারে আদর্শের গলা টিপে ধরে আমরা সেই সুবিধাবাদী রাজনীতিকে ঘৃনা করি। আমরা মনে করি বাংলাদেশ কে নিয়ে নাটক করার অধিকার কারো নেই, কোন দলের নেই। এই সোনার দেশটাকে পেতে আমাদের অনেক ত্যাগ স্বীকার করতে হয়েছে। ত্রিশ লক্ষ প্রাণের বিনিময়ে আমাদের এই বাংলাদেশ, দু লক্ষ মা- বোনের ইজ্জতের বিনিময়ে আমার এই প্রিয় মাতৃভূমি বাংলাদেশ।
স্বাধীনতার বিয়াল্লিশ বছরের ব্যবধানে আমরা আমাদের মুক্তিযোদ্ধাদের এই মহান ত্যাগের কথা ভুলতে পারি না।
হায়রে আমার দুখী বাংলাদেশ! স্বাধীনতার বিয়াল্লিশ বছর হয়ে গেল আর এখনো আমাদের যুদ্ধ অপরাধীদের বিচারের দাবীতে মাঠে নামতে হয়! হায়রে আমার দুখী বাংলা, এখনো তোর চোখে দেখি বেদনার অশ্রু, এখনো গায়ে তোর মলিন কাপড়, হাড্ডিসার একি তোর চেহারা! এখনো পাকিস্তানের সেই দোসর শকুনেরা তোকে নিত্য নতুন ধমক দেয়ার সাহস পায়! ভয় দেখায়! জানি, অনেক অভিমান তোর আমাদের দিকে। আমরা তোর সুবিধাবাদী সন্তানেরা তোকে দুঃখ ছাড়া আর কিছুই দিতে পারি নাই। ভাবতেই অবাক লাগে আজ তোর বুকের উপর দিয়েই দাপটের সাথে হেটে বেড়ায় সেই সব জামাত-রাজাকারেরা যারা আমাদের মুক্তিযুদ্ধের মত পবিত্র যুদ্ধেও বর্বর পাকিস্তানিদের সহযোগিতা করেছিল। যাদের আজ বাংলার সীমানার বাইরে থাকার কথা ছিল সেই রাজাকাররদের কেউ এই দেশের মন্ত্রী হয়ে বাংলার মাটি অপবিত্র করেছে, তাদের গড়িতে নির্লজ্জভাবে আমাদের লাল সবুজের গর্বিত পতাকাটি উড়িয়ে এর মান ভুলন্ঠিত করেছে।
জানি, এর চেয়ে লজ্জার, বেদনার আর কোন ঘটনা হতে পারে না। জানি, তোর হয়তো এখন আর এইসব নোংরামো সহ্য করার মত গায়ে কোন শক্তি অবশিষ্ঠ্য নেই। কিন্তু হে মা মাতৃভুমি আমার, তোর নতুন প্রজন্মদের দিকে একবার চোখ তুলে তাকা। শাহবাগ এখন গোটা বাংলাদেশের নাম। শাহবাগের চত্বর এখন নতুন প্রজন্মদের দখলে।
আমার বাংলা মা রে, তুই তাকিয়ে দেখ, এই নতুন প্রজন্মরা সুবিধাবাদী রাজনীতি বিশ্বাস করে না, এরা অন্তত: তোকে বিক্রি করার সাহস দেখায় না। তুই আমাদের উপর বিশ্বাস রাখ। এই আমরা নতুনরাই রাজাকার মুক্ত দেশ গড়ব।
যে দেশে একটি মহান মুক্তিযুদ্ধ হতে পারে, যে দেশে ভাষার অধিকার রক্ষায় তরুনরা রাজপথে রক্ত দিতে পারে, যে দেশে নূর হোসেনরা জীবনের বিনিময়ে গণতন্ত্রকে রক্ষা করে সেই দেশ আমাদের প্রিয় বাংলাদেশকে নিয়ে আমরা গর্বিত এবং আশাবাদি। আমাদের মুক্তিযুদ্ধের ফসল সে দেশে উঠতে বাধ্য।
অতিতের ইতিহাস ঘেটে আমর দেখেছি, বাংলাদেশের সাথে ষড়যন্ত্র করে কেউ কোন দিন টিকতে পারে নি, কোন ষড়যন্ত্রই টেকেনি। আমরা বিশ্বাস করি এই বাংলাদেশ হিন্দু, মুসলমান,বৌদ্ধ, খৃষ্টানসহ সব ধর্মের দেশ। আমাদের এই সাম্যবাদী দৃষ্টিভঙ্গী আমাদের অহংকার, আমাদের আদর্শের মুল মন্ত্র। যারা আজ বাংলাদেশকে আরেকটি তালেবান রাষ্ট্র তৈরি করার ঘৃণ্য ষড়যন্ত্রে লিপ্ত, যারা ধর্মকের ব্যাবহার কে বাংলাদেশের সাম্যবাদী চেতনাকে ভাংতে চায় আমরা নতুন প্রজন্মরা তাদের এই কার্যকলাপকের মনে প্রাণে ঘৃনা করি এবং প্রতিবাদ জানাই। আমরা দৃঢ়তার সাথে বলতে চাই বাংলাদেশের এই নতুন প্রজন্মরাই আমাদের মহান মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় উদ্দীপ্ত হয়ে সবুজ সুন্দর এক ধর্মনিরপেক্ষ বাংলাদেশ গড়ে তুলবে।
বাংলাদেশ থেকে রাজাকারদের সমুলে উৎপাটন করেই এই নতুন তরুন বিপ্লবীরা শাহবাগ থেকে ঘরে ফিরবে। তার আগে নয়। আমাদের এই বিজয় এখন শুধু সময়ের দাবী মাত্র।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।