ভালোকিছুর সন্ধানে নিরন্তর হেঁটে চলা পথের এক ক্লান্ত পথিক ... আমি।
ব্যাঙ কি সত্যিই মানুষের কাজে আসে? অনেকেরই ধারণা, ক্ষুদ্র্র এ প্রাণীটির এমন কী শক্তি আছে, যার মাধ্যমে মানুষ উপকৃত হতে পারে? হ্যাঁ, ব্যাঙ সত্যিই মানুষের জন্য মঙ্গলদায়ক একটি প্রাণী। সম্প্রতি প্রাণিবিজ্ঞানীরা গবেষণা করে দেখেছেন, ১৫০ মিলিয়ন বছর ধরে বিশ্বে বিভিন্ন প্রজাতির ব্যাঙ বসবাস করছে এবং নানাভাবে মানুষের উপকার করে আসছে। যেমন, ব্যাঙ অত্যন্ত সহজ ও সঠিকভাবে আবহাওয়া নির্ণয় করতে পারে। আর তাই ব্যাঙকে বলা হয় আবহাওয়া নির্ণয়ের ব্যারোমিটার।
কিন্তু এই নিরীহ প্রাণীটি নিয়ে আমাদের কারও কোনো ভাবনা নেই। যেখানে-সেখানে তাই ব্যাঙ অসুস্থ হয়ে পড়ে থাকলে কিংবা মারা গেলে তা সুস্থ করে তোলা তো দূরের কথা, একটু নিরাপদ স্থানে পেঁৗছে দিতেও সহযোগিতা করি না। তবে সব মানুষই তো আর এক রকম নয়। জীবের প্রতি অকৃত্রিম ভালোবাসার নিদর্শন হিসেবে একদল ব্যক্তি সম্প্রতি অস্ট্রেলিয়ার কুইন্সল্যান্ডে নির্মাণ করেছেন একটি হাসপাতাল, যেখানে কোনো মানুষের চিকিৎসা করা হয় না; সেখানে কেবল চিকিৎসা করা হয় ব্যাঙের! ১৯৯৮ সালের আগস্টে শুরু হওয়া এ হাসপাতাল থেকে বিপুলসংখ্যক অসুস্থ ও আহত ব্যাঙের চিকিৎসাসেবা দেওয়া হয়েছে। এ হাসপাতালে সাধারণত পা ভাঙা এবং অন্যান্য রোগাক্রান্ত ব্যাঙের চিকিৎসা দেওয়া হয়।
অস্ট্রেলিয়ায় প্রায় দুইশ' প্রজাতির ব্যাঙ রয়েছে। আর হাসপাতালটিও এ পর্যন্ত প্রায় দুই হাজার ব্যাঙের সুচিকিৎসা দিয়েছে। এক জরিপে দেখা গেছে, এসব ব্যাঙের মধ্যে বেশিরভাগই কুকুর কিংবা বিড়ালের কামড়ে আহত ছিল। কিছু কিছু ব্যাঙ ছোট ছোট ছেলেমেয়েদের লাঠিপেটা এবং ফুলগাছের টব কিংবা অন্য কোনো কিছুর নিচে চাপা পড়ে আহত হয়েছিল। কয়েক বছর আগে কুইন্সল্যান্ডের কিছু ব্যাঙের ত্বকে দেখা দিয়েছিল ক্যান্সারের মতো জটিল রোগ এবং অনেক ব্যাঙের শরীরে দেখা গিয়েছিল টিউমার।
তবে এসব অসুস্থ ব্যাঙগুলোর মধ্যে মাত্র কিছুসংখ্যক ব্যাঙকে ভালো করা সম্ভব হয়েছিল। ব্যাঙের জন্য নির্মিত এই হাসপাতালটি এতদিন সম্পূর্ণভাবে জনগণের দেওয়া অর্থের মাধ্যমে পরিচালিত হয়ে আসছিল। কিন্তু বর্তমানে এ ব্যাপারে জনগণের আগ্রহ কমে যাওয়ায় আর্থিক সমস্যা দেখা দিয়েছে এবং এর ফলে ব্যাঙের জন্য নির্মিত একমাত্র হাসপাতালটি বন্ধ হয়ে যাওয়ার উপক্রম হয়েছে। গবেষকদের মতে, অস্ট্রেলিয়ায় ব্যাঙ প্রজাতির জন্য জনগণের মধ্যে সমবেদনা অনেক লোপ পেয়েছে এবং ব্যাঙের প্রতি সহানুভূতিও কমে গেছে। আর এদের চিকিৎসাও অত্যন্ত ব্যয়বহুল।
চিকিৎসকদের ফি, ওষুধ এবং রোগী ব্যাঙের খাবার-দাবার, জীবিত পোকামাকড় সংগ্রহ_ সবকিছু মিলিয়ে প্রতিটি ব্যাঙের পেছনে খরচ পড়ে প্রায় একশ' ডলার! আর এই বিশাল খরচের ভার বহন করা হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের জন্য সত্যিই কঠিন। অস্ট্রেলিয়ার জনগণ তাই চাইছে সবার সহযোগিতা; যাতে যুগ যুগ ধরে টিকে থাকে এই হাসপাতাটি।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।