ইরানের পরমাণু কর্মসূচি নিয়ে বর্তমানে যুক্তরাষ্ট্রসহ পশ্চিমা বিশ্ব নানা প্রশ্ন তুললেও এর শুরুটা হয়েছিল যুক্তরাষ্ট্রের সরাসরি সহায়তায়। ইরানের পরমাণু তৎপরতা শুরু হয়েছিল দেশটিতে ইসলামী বিপ্লবের অনেক বছর আগে। ১৯৫৬ সালে তেহরান বিশ্ববিদ্যালয়ে একটি পরমাণু গবেষণাকেন্দ্র প্রতিষ্ঠা করা হয়েছিল। এ গবেষণা কেন্দ্রের কাজ এগিয়ে নেয়ার জন্যে ইরান ও যুক্তরাষ্ট্র সে বছরই একটি চুক্তি স্বাক্ষর করে। এর ১১ বছর পর যুক্তরাষ্ট্র তেহরান বিশ্ববিদ্যালয়ে ৫ মেগাওয়াট শক্তির একটি ছোটখাট পারমাণবিক চুল্লি নির্মাণ করে।
যদিও শিক্ষা ও গবেষণাই ছিল এ কেন্দ্র নির্মাণের উদ্দেশ্যে, কিন্তু তা সত্ত্বেও এ চুল্লিটি নির্মাণের সময় ইরানের প্রকৌশলীদের উপস্থিতি বা তাদের সহযোগিতার ব্যাপারে কঠোর সীমাবদ্ধতা আরোপ করা হয়। বিভিন্ন তথ্য প্রমাণে দেখা যায়, ইরানের বিজ্ঞানীরা যাতে এ প্রযুক্তির ব্যাপারে ধারণা অর্জন করতে না পারে সেজন্যে তেহরান বিশ্ববিদ্যালয়ে এই চুল্লির যন্ত্রপাতি সংযোজন ও চুল্লির কাজ শুরু করার সময় কোনো ইরানী বিজ্ঞানীকে উপস্থিত থাকতে দেয়া হয়নি।
১৯৭১ সালে ইরানের শাহ সরকার পাশ্চাত্যের কয়েকটি দেশের সাথে পরমাণু বিষয়ে বেশ কয়েকটি চুক্তি স্বাক্ষর করে। এ চুক্তিগুলোর মধ্যে ইরানের বুশহরে পারমাণবিক চুল্লি নির্মাণের জন্যে জার্মানীর সাথে করা চুক্তিসহ দারখুইনে অন্য একটি পরমাণু চুল্লি নির্মাণের জন্যে ফ্রান্সের সাথে চুক্তি, পারমাণবিক চুল্লিগুলোর জন্যে জ্বালানী সরবরাহ করতে আমেরিকার সাথে চুক্তি ও অর্ডিফ কোম্পানির শেয়ার ক্রয়ের ঘটনা ছিল বিশেষভাবে গুরুত্বপূর্ণ। কিন্তু ইরানে শাহ সরকারের পতনের মধ্য দিয়ে ইসলামী বিপ্লব বিজয়ী হওয়ার পর পশ্চিমা সরকার ও পশ্চিমা কোম্পানিগুলো পরমাণু বিষয়ে ইরানের সাথে সহযোগিতা অব্যাহত রাখতে রাজি হয়নি।
ফলে ইরান পরমাণু জ্বালানী চক্রের প্রযুক্তি অর্জন ও পারমাণবিক চুল্লিগুলোর নির্মাণ-কাজ সম্পন্ন করার জন্যে অন্যান্য দেশের শরণাপন্ন হয়। কিন্তু অধিকাংশ দেশ পাশ্চাত্য ও যুক্তরাষ্ট্রের চাপের মুখে পরমাণু ক্ষেত্রে ইরানের সাথে সহযোগিতা মাঝপথে ব করে দেয় অথবা এ সহযোগিতা খুবই সীমিত পর্যায়ে অব্যাহত রাখে।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।