আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

উপসংহারে জনশক্তি রপ্তানী : প্রাসঙ্গিক বিজ্ঞাপন কৌশল।।

হাম্বালীগ হৈলে অফ যা। রাজাকার হৈলে গদাম।

ভার্সিটি পেরনোর কিছুদিন আগ থেকেই সবার মনে ভাল একটি চাকরি পাওয়ার প্রত্যাশা আত্মবিশ্বাসে রূপ নেয়। আমি দেখেছি, আমার কিছু বন্ধু বিভিন্ন কোম্পানীতে সিভি ড্রপ করেছে। খুব ভাল লাগে ওদের স্বপ্ন দেখা দেখে।

আবার ব্যথা অনুভব করি এটা জেনে যে, ওদের মাঝে যাদের কোন ব্যাক-আপ লিংক নেই, তাদেরকে অপেক্ষা করতে হবে বেশ কিছু দিন। ততদিনে ওরা আবার হতাশ না হয়ে পড়ে! সিনিয়র অনেক বড় ভাইদের দেখেছি এভাবে হতাশ হয়ে যেতে। সাইকোলজি তখন এমন দাড়ায় যে তারা বাইরে যেতেও নিরাপত্তাহীনতায় ভোগেন। যদি ফ্রড কেসের খপ্পরে পড়তে হয়! আমি সরকারকে একচেটিয়া দোষারোপ করব না নিয়োগে দুর্নীতির দায়ে। আমার কাছে এর কারণ, আমাদের বেশ কিছু অরাজনৈতিক এবং অল-দ্য-ইয়ার রাউন্ড প্রভাবশালী ব্যক্তিরাই এজন্য দায়ী।

প্রত্যেক সরকারই চায় এদেরকে নির্মূল করতে। কিন্তু কোন এক রহস্যময় ক্ষমতাবলে এরা প্রশাসনকেও প্রকৃষ্টরূপে শাসন করে। নিয়োগের বেলাও তারা পরোক্ষভাবে প্রত্যক্ষ ভূমিকা পালন করে থাকেন, এটাই স্বাভাবিক। আর বিসিএস পরীক্ষার বিতর্ক নিয়ে না হয় না-ই বললাম। আমার কাছে বিসিএস পরীক্ষা মানে ‌‌‍"হয়রানির কয়েকটা বছর" এবং ফলাফল "স্রষ্টার খেয়াল খুশী"।

তো ঠিক হ্যায়। সরকার তার নির্ধারিত ও সীমিত সংখ্যক চাকরির বাইরে যেহেতু অতিরিক্ত কর্মসংস্থানের সুযোগ তৈরি করে দিতে পারছে না, তাহলেই চলে আসে দু'টি সেক্টর। এক. প্রাইভেট প্রজেক্ট ও দুই. জনশক্তি রপ্তানী। প্রাইভেট সেক্টর নিয়ে আমি দেখেছি, মোটামোটি আশি ভাগ মানুষই তুষ্ট। কাজ করব, স্যালারি ড্র করব।

টিকতে হলে নিজেকে আপগ্রেড করব। লাইফ এভাবেই চলুক- সরকারী চাকরির চেয়ে প্রাইভেট চাকরির পক্ষের ভাইরা বলেন, "আমার ভবিষ্যত দরকার নাই, বর্তমান ভালভাবে চলুক। সরকারী চাকরীর পেনশন উঠাতে অডিট সেকশনে ঘুষ খাওয়ানোর চেয়ে বর্তমানের কিছু পয়সা শেয়ারবাজারে ইনভেস্ট করাটাই বেটার.." জনশক্তি রপ্তানী সেক্টর নিয়ে বলতে গেলে অনেক কথা। দালালরা নাকি কাকরাইলের ঐ অফিসের ভিতরে থেকেই খদ্দের যোগানোর ওপেন বিজনেস করে। জড়িত কারা তা সবাই বোধ করি কম-বেশী জানেন।

প্রশ্নটা এখানেই, জনশক্তি ও কর্মসংস্থান প্রশিক্ষণ ব্যুরোর কর্মকর্তাদের কতটুকু যোগ্যতা- তা নিয়ে। সুস্পষ্টতার মাঝে অস্পষ্ট স্ট্রাইপ দিয়ে চলছে আবহমান বাংলার এ প্রতিষ্ঠানটি। এ পর্যন্ত কতজন এ প্রতিষ্ঠানের হাত ধরে বাইরে গিয়েছেন বনাম কতজন ট্রাভেল এজেন্সি ও দালালদের মাধ্যমে গিয়েছেন এ পরিসংখ্যানটা দেখলে আমি ট্রাভেল এজেন্সি ও দালালদেরকেই ধন্যবাদ জানাই। প্রশ্ন দাড়ায়, তাহলে জনশক্তি ও কর্মসংস্থান প্রশিক্ষণ ব্যুরোর পেছনে সরকার তার বাজেট রাখছেন কেন? প্রসঙ্গে এসে যায়, বিদেশে নিযুক্ত এদেশের রাষ্ট্রদুতদের ভূমিকা নিয়ে। প্রতি সপ্তাহে তারা যদি একটি ইনভাইটেশন পার্টিতে না গিয়ে বিদেশী সুন্দরীদের না দেখে ঐ সময়ে সেদেশে বাংলাদেশীদের জন্য কর্মসংস্থানের নেটওয়ার্কিং করেন, এদেশের জন্য হয়ত ভাল হত।

তাদের উচ্চহারে বেতন ও অত্যাধুনিক সুযোগ-সুবিধা প্রাপ্তি অন্তত হালাল হত। বিদেশে কর্মসংস্থানের জন্য নিয়োজিত প্রাইভেট এজেন্সিগুলোকে দেখলাম না ভালো মানের লোক বাইরে নেয়ার জন্য বিজ্ঞাপন দিয়েছেন। উদাহরণস্বরূপ, আজকের পত্রিকাগুলো খুললেও হয়ত আপনি দেখবেন মধ্যপ্রাচ্যের কোন একটি দেশে লোক নেয়া হচ্ছে নিম্নস্তরের কিছু শ্রমিক পদে। অথচ দেখবেন না, বিএসসি বা ডিপ্লোমা প্রকৌশলীদের উৎসাহ দেয়া হচ্ছে বা তাদের জন্য ভাল কোন বিজ্ঞাপন। কারণ হিসেবে অনেকেই বলেন যে এই সমস্ত প্রতিষ্ঠানের মালিকদেরই যোগ্যতা নিম্নস্তরের শ্রমিকসম।

উচ্চপদে কর্মসংস্থানের লবিং করবে তারা কোথা থেকে? আরেকটি প্রচলিত কথা হচ্ছে, শিক্ষিতদের সাথে এই প্রাইভেট এজেন্সিগুলো কোন ডিল করতে ভয়ও পায় কেননা দুই নম্বরি করতে গেলে তো .. যাই হোক। আমি এখানে কোন কঠিন যুক্তি উপস্থাপন করিনি। তথ্যও দেইনি। কেবল সবার জানা প্রচলিত সব আর্গুমেন্ট দিয়েই পোস্ট লিখলাম। আমি জানি, এ ব্লগে অনেক জার্নালিস্ট ভাই আসেন নিয়মিত।

আপনারাও একটু ভাবুন এগুলো নিয়ে। অন্যান্য পাঠকরাও চলুন ভাবতে থাকি কিভাবে জনশক্তি রপ্তানী করা যায় নিরাপদে ও অধিক সংখ্যায়। এদেশের সচিবদের মাথায় যা আছে, তার চেয়ে শতগণে গঠনমূলক চিন্তা-ভাবনা আছে জনসাধারণের মাথায়। শেয়ার করতে তো প্রবলেম নেই। পত্রিকায় লীড কলাম না আসলেও আমরাই কিন্তু পারি নিজেরা নিজেদের অধিকার নিয়ে সচেতন হতে এবং অন্যদেরকে সচেতন করতে।

কি বলেন?


এর পর.....

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।