বিশ্ব অর্থনৈতিক মন্দার প্রভাব বাংলাদেশের ওপর তেমন না পড়ায় চলতি ২০০৯-১০ অর্থবছরের মোট দেশজ উৎপাদন (জিডিপি প্রবৃদ্ধি) লক্ষ্যমাত্রায় পরিবর্তন আনা হবে বলে জানিয়েছেন অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত।
এদিকে মন্দা কেটে যাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে বাংলাদেশ যাতে জনশক্তি ও পণ্য রপ্তানির নতুন নতুন বাজার দখল করতে পারে, সেজন্য বিদেশে বাংলাদেশের মিশনগুলোকে শক্তিশালী করার জন্য করণীয় ঠিক করতে সরকারের পাঁচ মন্ত্রী এক জরুরি বৈঠকে বসছেন রোববার।
শনিবার বিকেলে বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে অর্থমন্ত্রী এ সব তথ্য জানিয়ে বলেন, "বিশ্বমন্দার বিষয়টি বিবেচনায় রেখে চলতি অর্থবছরের জিডিপি প্রবৃদ্ধির লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছিল। কিন্তু সার্বিক পরিস্থিতি বিচার বিশ্লেষণ করে এখন মনে হচ্ছে বিশ্বমন্দার প্রভাব আমাদের ওপর তেমন একটা পড়বে না। এ কারণেই জিডিপি প্রবৃদ্ধির লক্ষ্যমাত্রা বাড়ানো (রিভিউ) হবে।
"
কী পরিমান বাড়ানো হবে -এ প্রশ্নের উত্তরে অর্থমন্ত্রী বলেন, "সেটা এখনও ঠিক করা হয়নি। আরও তিন-চার মাস যাক, তারপর সার্বিক পরিস্থিতি বিচার বিশ্লেষণ করে ঠিক করা হবে। "
চলতি বাজেটে জিডিপি প্রবৃদ্ধির লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ৫ দশমিক ৫ শতাংশ থেকে ৬ শতাংশ।
২০০৮-০৯ অর্থবছরে ৫ দশমিক ৮৮ শতাংশ জিডিপি প্রবৃদ্ধি অর্জিত হয়েছিল।
অর্থমন্ত্রী বলেন, "আমরা প্রতিনিয়ত বিশ্বপরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করছি।
ইতিমধ্যে অনেক দেশ মন্দার প্রভাব থেকে বেরিয়ে আসতে শুরু করেছে। এটা ভালো লক্ষণ। আগামী তিন-চার মাসের মধ্যে বিষয়টি আরও ভালোভাবে বোঝা যাবে। "
তিনি আরও বলেন, "আমরা (সরকার) দায়িত্ব নেওয়ার পর অর্থমন্ত্রণালয় থেকে বার বার বলে আসছি বিশ্বমন্দার প্রভাব আমাদের ওপর তেমন একটা পড়বে না। কিন্তু আমাদের সুশীল সমাজের প্রতিনিধিরা বলেছিল, মন্দায় আমাদের সবকিছু শেষ হয়ে যাবে।
"এখন দেখা যাচ্ছে অর্থমন্ত্রণালয় থেকে আমরা যা বলেছিলাম তাই হচ্ছে। "
অর্থমন্ত্রী বলেন, বিশ্বমন্দা মোকাবিলার জন্য করণীয় ঠিক করতে যে টাস্কফোর্স গঠন করা হয়েছে তার দ্বিতীয় বৈঠক আগামী মাসের প্রথম সপ্তাহে অনুষ্ঠিত হবে।
ওই বৈঠকে মন্দা মোকাবিলার জন্য নতুন করে করণীয় ঠিক করা হবে বলে জানান তিনি।
এছাড়া বাজেটে মন্দা মোকাবিলার জন্য বরাদ্দ পাঁচ হাজার কোটি টাকা তা কোন খাতে কিভাবে ব্যয় হবে তা টাস্কফোর্সের দ্বিতীয় বৈঠকে ঠিক করা হবে বলে জানান আবুল মাল আবদুল মুহিত।
রোববারের পাঁচ মন্ত্রীর বৈঠক প্রসঙ্গে অর্থমন্ত্রী বলেন, "মন্দা কেটে গেলে কিভাবে বিশ্বের বিভিন্ন বাজারে জনশক্তি রপ্তানি বাড়ানো যায় সে ব্যাপারে আমাদের মিশনগুলো যাতে কার্যকর পদক্ষেপ নেয় তা নিয়ে আলোচনা করতে ওই বৈঠক আহ্বান করা হয়েছে।
"
এছাড়া মিশনগুলো যাতে দেশের রপ্তানি বাড়াতেও ভূমিকা রাখে সে বিষয়টি নিয়েও আলোচনা হবে বলে জানান তিনি।
রোববার দুপুর একটায় অর্থমন্ত্রণালয়ে এ বৈঠক হবে।
অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিতের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠেয় ওই বৈঠকে বাণিজ্যমন্ত্রী ফারুক খান, প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থানমন্ত্রী খন্দকার মোশাররফ হোসেন, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী সাহারা খাতুন ও পররাষ্ট্রমন্ত্রী দীপু মনি উপস্থিত থাকবেন।
এতে পাঁচ মন্ত্রণালয়ের সচিবরাও উপস্থিত থাকবেন।
বৈঠক প্রসঙ্গে বাণিজ্যমন্ত্রী ফারুক খান শনিবার বিকেলে বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, "মূলতঃ বিদেশে আমাদের মিশনগুলোকে শক্তিশালী করার লক্ষ্যে করণীয় ঠিক করতেই রোববারের বৈঠকে বসছি আমরা।
"
গত ২০০৮-০৯ অর্থবছরে প্রবাসী বাংলাদেশীরা ৯ দশমিক ৬৯ বিলিয়ন ডলারের রেমিটেন্স দেশে পাঠিয়েছেন।
আর বিভিন্ন দেশে বিভিন্ন ধরনের পণ্য রপ্তানি থেকে এসেছে ১৫ দশমিক ৫৬ বিলিয়ন ডলারের বৈদেশিক মুদ্রা।
বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম/এআরএইচ/এসএইচ/এমআই/২০৩০ ঘ.
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।