সবাইকে মাহে রমজানের শুভেচ্ছা। রমজান আসে আমাদের জীবন বদলের বার্তা নিয়ে। আর আমরা তো সবাই বর্তমানে জীবন বদলের কথা বলছি। বলছি মানুষের মন ও মননের পরিবর্তনের কথা । বিভিন্ন দিক থেকে বিভিন্ন ভাবে এই কথা উঠছে।
এবং স্বতস্ফুর্তভাবে মানুষ এই বিষয়ে তাদের সমর্থনের কথা বলছে। বোঝা যাচ্ছে জীবন পরিবর্তনের এই মিছিলে সবাই সামিল হতে চায়। কিন্তু কিভাবে এই জীবন বা জীবন চেতনাকে বদলে ফেলা যায় তা হয়তো সবার কাছে পরিস্কার নয়। আমরা বদলাতে চাই । আমরা বলছি আগে পরিবর্তন করতে হবে নিজেকে ।
কিন্তু নিজেকে কিভাবে বা নিজের কি পরিবর্তন করবো ? আমার মনে হয় আমরা যদি একটা বিষয় নিশ্চিত করতে পারি যার মাধ্যমে আমাদের জীবন বদলে যেতে পারে তাহলে খুব ভালো হয়। অর্থ্যাৎ সামগ্রিক বিষয়টাকে আমরা একটা নির্দিষ্ট ছকে গেঁথে ফেলতে পারি। এমন একটা আচরন কথা বা কাজ যা আমাদের দৈনন্দিন জীবনকে প্রভাবিত করবে বা জীবনের প্রতিটা ক্ষেত্রে কাজে লাগবে।
আমার কাছে এমনি একটি বিষয় মনে হয়েছে সদাচারণ । সদাচারণ কি? সদাচারণ মানে হচ্ছে সৎ আচরণ বা ভালো আচরণ।
অর্থ্যাৎ আমাদের জীবনের সর্বক্ষেত্রে আমাদের যে আচরণ সেটা সুন্দর এবং সবার জন্য মঙ্গলজনক হলেই আমরা তাকে সদাচারণ বলতে পারি। আমরা যদি শুধুমাত্র সদাচারী হতে পারি, জীবনের সবক্ষেত্রে সদাচারকে গ্রহন করতে পারি তাহলেই আমরা নিজেদেরকে পরিবর্তনের সেই মিছিলে একাত্ম করতে পারবো, এবং আমরা পারবো আমাদেরকে বাস্তবিক অর্থেই বদলে ফেলতে। কারণ সদাচারণ কোন চিন্তার বিষয় নয়। এটা বাস্তবিক অর্থেই একটা প্রাকটিকাল ব্যাপার। আপনি সদাচারি হতে চাচ্ছেন তো আপনাকে বাস্তবে তা প্রয়োগ করতে হবে।
আপনি মনে মনে বললেন যে আমি সদাচারী কিন্তু বাস্তবে মানুষের সাথে খারাপ ব্যবহার করলেন, তাহলে তো কিছুই হলো না ।
এখন প্রশ্ন হলো, নিজেকে বদলানোর জন্য সদাচারী কেন হবো? আমার নিজের আচার ব্যবহার চিন্তা ভাবনা এত সহজে কি ছাড়া সম্ভব? এছাড়া কি অন্য কোন উপায় নেই? এবাদাত বন্দেগী , দান খয়রাত ইত্যাদীর মাধ্যমেও তো করতে পারি। আমি তো পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ পড়ি, তাহলে আমি ভালো হবো না কেন? একটা উদাহরণ দেখুন, ধরুন এক ব্যক্তি সবসময় রোজা নামাজ ঠিকমত পড়েন, ধর্মীয় উপদেশ আদেশও ঠিকমত দেন, কিন্তু তিনি তার কর্মচারীদের সাথে ইচ্ছেমত রাগারাগী করেন , বকাবকি করেন, তাদের সাথে তার আচরণ যথেষ্ট মন্দ। তাহলে ঐ ব্যক্তির ইবাদাত কি তাকে শুদ্ধ করতে বা বদলাতে পেরেছে? তিনি কি সমাজ পরিবর্তনে কোন ভূমিকা রাখতে পারবেন? না নিজের পরিবর্তন করতে পারবেন- না অপরের। অপরদিকে সদাচারী, মিষ্টভাষী লোকদের কাছে আমরা যেতে চাই, তার কথা শুনতে চাই তার কাছে গিয়ে পরিবর্তন হতে চাই।
সুতারং সদাচারণই মূল । সদাচারই আপনাকে ধার্মিক বানাবে অথবা আপনার ধার্মিকতাকে সুশৃঙ্খল ও কল্যাণকামী করে তুলবে। সদাচারণ আপনার ভেতরের ভালো সত্ত্বাটাকে জাগ্রত করবে, আপনাকে পরিবর্তন করবে। তাহলে আসুন আমরা আমাদের পরিবর্তনের জন্য সদাচারণ নিয়ে ভাবি। আমাদের আচার আচরণে ছোট ছোট পরিবর্তন আমাদেরকে অনেক বড় পরিবর্তনে সাহায্য করতে পারে।
আমরা নিজেদেরকে রাতারাতি বদলে ফেলতে পারবো না । তবে চর্চা ও প্রচেষ্টা আমাদেরকে সেদিকে যেতে সাহায্য করবে।
আগামী কয়েকদিন আমরা আমাদের দৃষ্টিতে দেখা সদাচারণের বিভিন্ন ক্ষেত্র নিয়ে চিন্তাভাবনা ও মতবিনিময় করবো ।
ধন্যবাদ সবাইকে।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।