ঈশ্বরই সেই মানুষের অবস্থার তখনই পরিবর্তন করেন যখন সে নিজে তাঁর অবস্থার পরিবর্তন করে।
এম বি ফয়েজ। । ১ সেপ্টেম্বর : সিরিয়ার বিদেশি মদদপুষ্ট বিদ্রোহীরা দেশটির রাজধানী দামেস্কের কাছে "আল-ঘৌথা" শহরে গত ২১ আগস্টের রাসায়নিক হামলার দায়িত্ব স্বীকার করেছে। তারা বলেছে, সৌদি আরব তাদেরকে যে রাসায়নিক অস্ত্র সরবরাহ করেছিল তা ভুলভাবে ব্যবহার করতে গিয়ে ওই বিপর্যয় ঘটেছে।
বিদ্রোহীরা বার্তা সংস্থা এপি’কে এ তথ্য জানিয়েছে।
আমেরিকা ও তার কিছু পশ্চিমা মিত্র যখন গত সপ্তাহের ওই রাসায়নিক অস্ত্র হামলার জন্যে প্রেসিডেন্ট বাশার আসাদ সরকারকে দায়ী করে সিরিয়ার ওপর সামরিক হামলার প্রস্তুতি নিচ্ছে, তখন বিদ্রোহীরা মার্কিন বার্তা সংস্থা এসোশিয়েটেড প্রেসের (এপি) সাংবাদিক ডেল গ্যাভলাককে এ তথ্য জানালো।
রাসায়নিক অস্ত্র হামলার স্থান সিরিয়ার দক্ষিণাঞ্চলীয় পূর্ব গুথা এলাকার বিদ্রোহীদের পরিবারের পাশাপাশি ‘ডক্টরস উইদাউট বর্ডার’-এর কর্মীদের সাথে অন্তরঙ্গ আলোচনা থেকে সুস্পষ্ট প্রমাণ পাওয়া গেছে যে, সৌদি গোয়েন্দা প্রধান প্রিন্স বান্দার বিন সুলতান বিদ্রোহীদেরকে ওই রাসায়নিক অস্ত্র দিয়েছিলেন। বিদ্রোহীরা ওই অস্ত্রের সঠিক ব্যবহার না জানার কারণেই দুর্ঘটনাটি ঘটেছে। আর এর ফলে প্রাণ হারিয়েছে নারী ও শিশুসহ শত শত মানুষ।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক বিদ্রোহী গ্যাভলাককে বলেছেন, তাদেরকে রাসায়নিক অস্ত্র ব্যবহার করার যথাযথ ট্রেনিং দেয়া হয় নি। ওই বিদ্রোহীর নামের প্রথম অক্ষর ইংরেজি ‘জে’। তিনি বলেন, “আমরা এই অস্ত্র সম্পর্কে ভীষণ কৌতূহলী ছিলাম। অপ্রত্যাশিতভাবে আমাদের কেউ কেউ না জেনেও রাসায়নিক অস্ত্রের ব্যবহার করতে গেলে বিস্ফোরণটি ঘটে। ”
একই ধরনের বক্তব্য দিয়েছেন অপর এক নারী বিদ্রোহী।
তার ভাষায়-“তারা আমাদেরকে বলেনি এগুলো কী ধরনের অস্ত্র ছিল কিংবা কীভাবে এগুলো ব্যবহার করতে হয়। এগুলো যে রাসায়নিক অস্ত্র ছিল সেটা আমরা জানতাম না। আমরা ভাবতেও পারিনি এগুলো রাসায়নিক অস্ত্র ছিল। ” নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এই নারী বিদ্রোহীর নামের প্রথম অক্ষর ইংরেজি ‘কে’।
তবে এক তাকফিরি বিদ্রোহীর বাবা আবু আব্দেল মোনেম অস্ত্রগুলোর বাহ্যিক বর্ণনা দিয়ে গাভলাককে বলেছেন, অস্ত্রগুলোর কিছু কিছু ছিল টিউবের মতো, আবার কিছু ছিল গ্যাসের সিলিন্ডারের মতো।
তিনি আরো বলেন, সৌদি সন্ত্রাসী আবু আয়েশা অস্ত্রগুলো নিয়ে এসেছিল।
এপি’র সংবাদদাতা গ্যাভলাক অন্তত ১২ বিদ্রোহীর সাক্ষাতকার নিয়েছেন। এসব সাক্ষাতকারে তারা বলেছেন, তাদের বেতন-ভাতা সৌদি সরকার বহন করে।
গ্যাভলাকের এসব তথ্য প্রমাণিত হলে সিরিয়ার ওপর আমেরিকার হামলার পরিকল্পনা পুরোপুরি ভেস্তে যাবে। কারণ, মার্কিন সরকার দাবি করেছে, তাদের কাছে সুস্পষ্ট প্রমাণ আছে, বাশার আসাদ সরকারই ওই রাসায়নিক অস্ত্র ব্যবহার করেছে।
এপি’র সাংবাদিক ডেল গ্যাভলাক যথেষ্ট বিশ্বস্ত এবং নির্ভরযোগ্য সাংবাদিক হিসেবে পরিচিত। তিনি গত ২০ বছর ধরে এসোশিয়েটেড প্রেসের মধ্যপ্রাচ্য প্রতিনিধি হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন। একইসঙ্গে তিনি আমেরিকার ন্যাশনাল পাবলিক রেডিও (এনপিআর)এর জন্যও কাজ করেছেন এবং বিবিসি, পিবিএস এবং স্যালন ডটকমে তিনি লেখালেখি করেছেন।
সিরিয়ার "আল-ঘৌথা" শহরে সিরিয় বিদ্রোহীরা যে রাসায়নিক অস্ত্রের আক্রমন চালিয়ে হাজার খানেক মানুষের প্রান কেড়ে নিয়েছে তার সত্যাসত্যি প্রমানে একটি ভিডিও ইতিমধ্যে প্রকাশ পেয়েছে। ঐ ভিডিওটিতে দেখা যাচ্ছে বিদ্রোহীরা যেন রাসায়নিক অস্ত্রের পরিচালনা সম্পর্কে সম্যক ধারনাটি পর্যন্ত খুজে পাচ্ছে না।
এমতাবস্থায় অঘটন ঘটে যাওয়া অতি স্বাভাবিক।
(আই আর আই বি)
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।