আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

বিশ্বাস অবিশ্বাসে ভূত ও ভৌতিক - ( প্রথম অধ্যায় )



বিষয় টা নিয়ে অনেক দিন ধরে লিখব লিখব করছিলাম, আজ সময় পেয়ে ভাবলাম লিখেই ফেলি...তবে যেটা লিখছি তা মোটেই মিথ্যা নয়, আমার জীবদ্দশায় এক গুচ্ছ ঘটনা...। জানি না আপনারা কে বিশ্বাস করবেন কে করবেন না...। তবে বাস্তবে ও ব্যক্তিগত উপলব্ধি ছাড়া বিজ্ঞানের যুগে গ্রহন যোগ্যও নয় । আমি এতেও বিশ্বাসী অবশ্য । আমি জোড় করে কাউকে বিশ্বাস করতেও বলছি না।

যা লিখলাম তা সম্পূর্ন সত্য। শিশুকাল থেকেই আমি ছিলাম খুব ভীতু। গল্প বইয়ে , বাড়ী্র আত্মীয় ও বড়োদের মুখে ভুতের গল্প শুনে ছোটবেলায় খুব ভুতের ভয় পেতাম। বিশেষতঃ সন্ধ্যা হলেই আমার বুক শুকিয়ে আসতো। মায়ের আঁচল ধরে থাকতাম।

খাটে বসে থাকতাম, ভয়ে খাটের নীচে পা ও ঝোলাতাম না যদি ভুতে পা টেনে ধরে। এই রকম আর কি। বড়ো হলাম স্কুলে এলাম -ভয়টা তখনও ছিল। কেউ মারা গেলে ভয়ে সেই দিকেই যেতাম না। কলেজ লাইফ এলো- তখন একটু সাহস এলো ।

তখন থেকে মনের মধ্যে খালি ঘুরতো ভুত কি , এরা কি করে , কোথায় থাকে -এ সব জানার। এসব নিয়ে খুব ই চিন্তা করতাম। যোগার করলাম ভুত - প্রেত - আত্মা সম্বন্ধীয় বিভিন্ন বই। লেখক সুদিন মিত্রের - " অবিশ্বাস্য সত্য" , স্বামী অভেদানন্দের - " মরনের পাড়ে" আরো আরো কত। যোগার করলাম - প্ল্যানচেট সম্পর্কিত বই।

জানলাম অনেক তথ্য। কিছুটা বিশ্বাস এলো মনে। কিন্তু ভুত তো দেখলাম না। শুরু করলাম রাত জাগা... বাড়ীর সকলের অলক্ষ্যে গভীর রাতে ছাদে উঠে লক্ষ্য রাখতাম এ দিক ও দিক তীক্ষ্ণ নজরে। অনেক অনেক রাত গেছে এই ভাবে -কিন্তু কোনদিন ই পাই নি দেখা।

হটাত একদিন রাতে-- আমার এক বন্ধুর বোনের অষ্টমংগলার নিমন্ত্রন খেতে যাচ্ছি - ঠিক রাত আট টা সাড়ে আট টা হবে । বাড়ীর সামান্য দূরে এগিয়েছি - রাস্তায় কেউ ছিল না তখন। হালকা টর্চের আলো ফেলে কদম বাড়াচ্ছি এমন সময় দেখি ঠিক আমার থেকে মাত্র তিন/চার হাত দূরে এক জন হেঁটে যাচ্ছেন কালো প্যান্ট ও কালো জুতো পড়ে। খুব সুন্দ্ র এক পারফিউমের গন্ধ ছড়িয়ে পরছে তাঁর থেকে। কিন্তু তাঁর কোমরের উপরের অংশ দেখা যাচ্ছে না।

ভদ্রতা বশতঃ আমি তাঁর গায়ে টর্চ ও মারতে পারছি না। সামান্য কিছু দূর যাওয়ার পর আমি আর তাঁকে দেখতে পেলাম না। আমি থমকে দাঁড়িয়ে গেলাম। রাস্তার দুই পারে ছিলো উঁচু পাঁচিল। কিভাবে সেকেন্ডের মধ্যে উধাও হয়ে গেল বুজলাম না।

তবে যিনি যাচ্ছিলেন আমার আগে তিনি আর কেউ নন , আমার পাড়ার সম্পর্কিত দাদু ছিলেন এটা আমি ১০০% সিওর। তখন তিনি বছর দুই আগে মৃত। এটা কি করে সম্ভব আমি জানি না। দ্বিতীয় ঘটনা -ঃ ১৯৯৪ সেবার মারাদোনার শেষ বিশ্বকাপ, খেলাটা ছিল নাইজিরিয়ার সাথে। দশহরা'র রাত।

খেলা দেখছিলাম পাড়ার এক বাড়ীতে। সেখানে পাড়ার সবাই এক সাথে দেকছিলাম। খেলার অর্ধেক হয়ে গেছে। রাত তখন দুটো - একটু দূরে পুকুর পাড় ও ছোট্টমাঠ সেখানে আমি ও আমার এক বন্ধু গেছি প্রাকৃতিক কর্ম করতে - হাতে ছিলো টর্চ। হটাত দেখি - জমিদারদের কাছারী বাড়ী থেকে লোহার গেট খুলে বেড়িয়ে এল বিরাট এক শুওর ( গরুর আকৃতির ) ।

দেখে দুজনেই ভয় পেয়ে গেলাম। চিতকার করে উঠলাম দুজনে। বন্ধু আমায় বল্লো - সুমন পালিয়ে আয়... এটা অন্য জিনিষ। এই কথা টা শোনা মাত্র আমার কৌতুহলী মন লাফিয়ে উঠল- এই তো এর জন্য আমি কত রাত জেগেছি, কত মুল্যবান সময় নষ্ট করেছি। আর তার দেখা ( আগে অনেকের মুখে শুনেছিলাম এখানে একটা এই রকম জন্তু থাকে , সে মাঝে মাঝে গভীর রাত্রে ওখান থেক বের হয়, ওটি অনেক দূর পর্যন্ত ঘোরাফেরা করে - অনেকেই দেখেছে ) আজ তার মুখোমুখি।

ওটি অত বড়ো শুওর হ্য় আমি জন্মেও শুনি নি - দেখিও নি। মনে পড়ে গেল আগে শোনার কথা টি। ওটি দৌড়াতে শুরু করল। আমাদের দিকে ফিরে তাকালোও না। আমিও দেখবো বলে ওর পিছু পিছু দৌড়াতে শুরু করলাম।

ঠিক আগের মতোই কিছু দূর জাওয়ার পর উধাও হয়ে গেলো। আমি ভ্যাবাচাকা খেয়েগেলাম। ইতি মধ্যে আমার বন্ধু দৌড়ে গিয়ে আরো লোকজন ডেকে আনল। কেউ কিছুই দেকতে পেল না। এত তারাতারি যে কোন প্রানী দৌড়ে চলে ্যেতে পারে তা অসম্ভব।

আমি ওর পিছু পিছু দৌড়ানোর সময় টর্চ জ্বেলেই ছিলাম ও দেখতে পাচ্ছিলাম। কি ভাবে হটাত ভ্যানিশ হয়ে গেলো সেটাই আমায় আরো অবাক করেছিল। আজ ও তার উত্তর পাই নি। পরবর্তী কালে আমি আরো কিছু অবিশ্বাস্য ঘটনার মুখোমুখি হয়েছিলাম তা পরের লেখায় জানাবো... আজ সময় না থাকার কারণে এখানেই ইতি টানলাম...। ভালো থাকুন সকলে..................।

। ( লেখাটি চলবে - "বিশ্বাস অবিশ্বাসে ভূত ও ভৌতিক" - এই শিরোনামে )

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.