আমাদের বর্তমান ক্যলিগুলার অশ্ব ক্যাবিনেটের হালচাল দেখুন আর প্রাণ ভরে উপভোগ করুন রম্য বিনোদন..(একদম ফ্রী
-- সম্প্রতি অদক্ষ হিসেবে চিহ্নিত করে ১৭ মন্ত্রী ও প্রতিমন্ত্রীর তালিকা পাঠানো হয়েছে প্রধানমন্ত্রী কার্যালয়ে। একটি গোয়েন্দা সংস্হা এ তালিকা তৈরি করেছে বলে প্রধানমন্ত্রী কার্যালয় সুত্রে জানা গেছে।
৭ নং ভবনের একজন মন্ত্রীর অদক্ষতার চিত্র তুলে ধরে ওই মন্ত্রণালয়ের আমলারা বলেন, ফাইল বোঝা তো দুরের কথা, তিনি ফাইলই পড়তে জানেন না। স্কুলের বাচ্চাদের যেভাবে বোঝাতে হয়, তাকেও সেভাবে বোঝাতে হয়। কিছুদিন আগে ওই মন্ত্রী শ্রমিক লীগ নেতাদের একটি তদবির জরুরি ভিত্তিতে তৈরি করে আনার জন্য নির্দেশ দেন সচিবকে।
সচিব সংশ্লিষ্ট ডেস্কের কর্মকর্তাকে ডেকে মন্ত্রীর নির্দেশের কথা জানান। সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তা জানান, রুলসঅব বিজনেস অনুযায়ী এটা আমরা করতে পারি না। মন্ত্রীকে একথা জানানোর পর তিনি জবাব দেন, এখানে ‘বিজনেস’ পেলেন কোথায়? সুচতুর সচিব মন্ত্রীকে বোঝানোর জন্য বলেন, ম্যাডাম রুলস অব বিজনেস হচ্ছে প্রশাসন পরিচালনার কার্যবিধিমালা। ‘এখানে স্পষ্ট বলা আছে...। ’ এ সময় মন্ত্রী কিছুটা লজ্জিত হন বলে সেখানে উপস্হিত এক কর্মকর্তা আমার দেশকে জানান।
কিছুদিন আগে ভুমিমন্ত্রী একটি ফাইল পাঠিয়ে দেন প্রধানমন্ত্রী দফতরে। প্রধানমন্ত্রী কার্যালয়ে এ ফাইল দেখে সেখানকার কর্মকর্তারা বিস্মিত হন। এ ব্যাপারে কারণ জানতে চেয়ে প্রধানমন্ত্রী কার্যালয় ভুমি মন্ত্রণালয়কে চিঠি লেখে। ভুমি মন্ত্রণালয় সুত্রে জানা যায়, মন্ত্রীর নির্দেশে সচিব ফাইলটি প্রধানমন্ত্রী কার্যালয়ে পাঠান।
মহাজোট সরকারের ৩৮ মন্ত্রী-প্রতিমন্ত্রীর মধ্যে ১৭ জন কোনো দক্ষতার পরিচয় দেখাতে পারেননি।
তারা হলেন শ্রম ও কর্মসংস্হান প্রতিমন্ত্রী বেগম মুন্নুজান সুফিয়ান, প্রাথমিক ও গণশিক্ষা প্রতিমন্ত্রী মোঃ মোতাহার হোসেন, গৃহায়ন ও গণপুর্ত প্রতিমন্ত্রী আবদুল মান্নান খান, ধর্ম প্রতিমন্ত্রী মোঃ শাহজাহান মিয়া, যুব ও ক্রীড়া প্রতিমন্ত্রী আহাদ আলী সরকার, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যাডভোকেট সাহারা খাতুন, মৎস্য ও পশুসম্পদমন্ত্রী আবদুল লতিফ বিশ্বাস, শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদ, নৌপরিবহনমন্ত্রী আফসারুল আমিন, পানিসম্পদমন্ত্রী রমেশ চন্দ্র সেন, সমাজকল্যাণমন্ত্রী এনামুল হক মোস্তফা শহীদ, ভুমিমন্ত্রী রেজাউল করিম হীরা এবং স্হানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রী সৈয়দ আশরাফুল ইসলাম।
মৎস্য ও পশুসম্পদমন্ত্রী আবদুল লতিফ বিশ্বাস মন্ত্রী হিসেবে গত ছয় মাসে কোনো দক্ষতারই পরিচয় দিতে পারেননি। তিনি এক সময় ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ছিলেন। এরপর একবার উপজেলা চেয়ারম্যান নির্বাচিত হন। এবার এমপি নির্বাচিত হয়ে মন্ত্রীর দায়িত্ব পান।
তাও আবার পুর্ণমন্ত্রী। মন্ত্রী হওয়ার আগে তিনি তেমন ঢাকায় আসতেন না। তার চলাফেরা সাধারণ মানুষের সঙ্গে। পুর্ণমন্ত্রীর দায়িত্ব পাওয়ার খবর শুনে সিরাজগঞ্জের মানুষই বিস্মিত হন। উপজেলা নির্বাচনের সময় তিনি ভোট কেন্দ্র দখল করে বিতর্কিত হন।
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যাডভোকেট সাহারা খাতুন গত ছয় মাসে কোনো সাফল্য দেখাতে পারেননি। বরং তার রোষানলে পড়ে প্রতিমন্ত্রী তানজিম আহমদ সোহেল তাজকে বিদেশ চলে যেতে হয়েছে। এ মন্ত্রণালয়ে ফাইলের ওপর ফাইল স্তুপ হয়ে থাকলেও মন্ত্রী কোনো সিদ্ধান্ত দেন না। পুলিশ বিভাগ থেকে গত ছয় মাসে বেশকিছু ফাইল পাঠানো হয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে। ফাইলগুলো চাপা পড়ে আছে দীর্ঘদিন ধরে।
পানিসম্পদমন্ত্রী রমেশচন্দ্র সেনের যোগ্যতা ও দেশপ্রেম নিয়ে ইতোমধ্যে প্রশ্ন উঠেছে। ভারতের টিপাইমুখ বাঁধের বিরুদ্ধে যখন বাংলাদেশের জনগণ সোচ্চার, তখন এই মন্ত্রী ভারতের পক্ষে সাফাই গেয়ে বিতর্কিত হন। একবার তিনি বলে বসলেন, ‘আগে ভারত বাঁধ নির্মাণ করুক, এরপর ক্ষতি হয় কিনা তা আমরা বুঝতে পারব। ’ তার এ ধরনের অদুরদর্শী বক্তব্যের কড়া সমালোচনা করেন দেশের বুদ্ধিজীবী মহল। শুধু তা-ই নয়, সম্প্রতি তিনি সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে বলেন, টিপাইমুখ বাঁধ নিয়ে বিরোধীদলীয় নেত্রী প্রধানমন্ত্রীকে কোনো চিঠিই দেননি।
অথচ বাজেট অধিবেশনে প্রধানমন্ত্রী নিজেই বলেছেন, বিরোধীদলীয় নেত্রী আমার কাছে টিপাইমুখ বাঁধ নিয়ে একটি চিঠি দিয়েছেন। আমি এখনও চিঠি পড়িনি। চিঠিটি পড়ে এর জবাব দেবো।
পানিসম্পদ মন্ত্রণালয় সুত্রে জানা যায়, এর আগে এ মন্ত্রণালয়ে যারা দায়িত্বে ছিলেন, তাদের সবাই ছিলেন অত্যন্ত দক্ষ ও দুরদৃষ্টিসম্পন্ন। সে তুলনায় বর্তমান মন্ত্রী কোনো দক্ষতারই পরিচয় দিতে পারছেন না।
স্হানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায়মন্ত্রী সৈয়দ আশরাফুল ইসলাম সাধারণত দুপুর ১২টার আগে অফিসে যান না। অফিসে গেলেও ঠিকমতো ফাইল দেখেন না। ফলে মন্ত্রণালয়ে ফাইল জট হয়ে আছে।
গৃহায়ন ও গণপুর্ত প্রতিমন্ত্রী অ্যাডভোকেট আবদুল মান্নান খানও গত ছয় মাসে কোনো দক্ষতার পরিচয় দিতে পারেননি। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে দায়ের করা মামলার বাদী নুর আলীর সঙ্গে তার অতিমাত্রায় মাখামাখিকে ভালো চোখে দেখছে না প্রধানমন্ত্রী কার্যালয়।
জানা যায়, তিনি প্রায়ই হোটেল ওয়েষ্টিনে গিয়ে নুর আলীর সঙ্গে জমিজমা নিয়ে বৈঠক করেন। ওইসব বৈঠকে রাজউক কর্মকর্তাদের ডেকে পাঠান। সম্প্রতি রাজউক চেয়ারম্যান নুরুল হুদাকে মন্ত্রী ফোন করে নুর আলী সাহেবের হাউজিংয়ের সব ফাইল নিয়ে হোটেল ওয়েষ্টিনে হাজির হওয়ার নির্দেশ দেন। এতে আপত্তি জানান রাজউক চেয়ারম্যান। তিনি মন্ত্রীকে জানিয়ে দেন যে, নেত্রীর বিরুদ্ধে যিনি মামলা করেছেন তার হোটেলে আমি ফাইল নিয়ে যেতে পারি না।
বিষয়টি প্রধানমন্ত্রী কার্যালয় পর্যন্ত জানাজানি হয়ে গেছে।
ভুমিমন্ত্রী রেজাউল করিম হীরার বিরুদ্ধে শুধু অদক্ষতাই নয়, নানা অনিয়মের অভিযোগ রয়েছে। মন্ত্রীর ছেলে নিয়মিত মন্ত্রণালয়ে গিয়ে বিভিন্ন কাজের তদারকি করেন। কোথায় কাকে পোষ্টিং দিতে হবে এসব ঠিক করেন মন্ত্রীপুত্র।
মন্ত্রী-সচিবরা কার্যবিধি মানছেন নাঃ অধিকাংশ মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী ও সচিব কার্যবিধিমালা মেনে কাজ করছেন না।
সরকারি সিদ্ধান্ত গ্রহণ ও ফাইল মুভমেন্টের ক্ষেত্রে আন্তঃমন্ত্রণালয় যোগাযোগ ও নিয়ম মানা হচ্ছে না। মন্ত্রী ও সচিবদের রুলস অব বিজনেস সম্পর্কে অজ্ঞতার কারণে এমনটি হচ্ছে বলে সংস্হাপন মন্ত্রণালয় সুত্রে জানা গেছে। মন্ত্রী এবং সচিবদের কেউ কেউ এর জন্য দায়ী করেন সংস্হাপন মন্ত্রণালয়কে। তারা বলেন, ছয় মাস ধরে রুলস অব বিজনেসের একটি কপি চেয়ে পাঠিয়েছি সংস্হাপন মন্ত্রণালয়ে। কিন্তু তারা এখনও রুলস অব বিজনেসের কপি দিতে পারেননি।
আবার অনেক সচিব রুলস অব বিজনেস না মানার জন্য মন্ত্রীদের দায়ী করেন। তারা বলেন, মন্ত্রীরা আমাদের রুলস অব বিজনেস অমান্য করতে বাধ্য করেন। আমরা এ প্রসঙ্গটি তুললে মন্ত্রী বলেন, আপনি ফাইল তৈরি করে আনেন, বাকিটা আমি দেখব। কিন্তু মন্ত্রীরা বলছেন ভিন্ন কথা। তাদের বক্তব্য হলো, কার্যবিধিমালায় কী আছে সেটা দেখে ফাইল তৈরি করার দায়িত্ব সচিবের।
গত ছয় মাসে রুলস অব বিজনেস না মানার বেশকিছু ঘটনা ঘটেছে মন্ত্রণালয়ে। একপর্যায়ে বাধ্য হয়ে ২৬ এপ্রিল অর্থ মন্ত্রণালয় চিঠি দিয়ে রুলস অব বিজনেস মেনে চলার নির্দেশ দেয় সচিবদের। এতেও কোনো কাজ না হওয়ায় ৭ মে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ থেকে দ্বিতীয় দফা একই চিঠি দেয়া হয়। বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ের সচিবরা মন্ত্রিপরিষদ সচিবকে জানান, মন্ত্রীদের কারণে তারা কার্যবিধিমালা মেনে কাজ করতে পারছেন না। এরপর সর্বশেষ ২৭ মে মন্ত্রী ও প্রতিমন্ত্রীদেরও কার্যবিধিমালা মেনে চলার পরামর্শ দিয়ে চিঠি পাঠানো হয়।
সচিবদের পাঠানো ওই চিঠিতে কার্যবিধিমালা মেনে চলার জন্য সংবিধানের ৫৫(৬) অনুচ্ছেদের কথা স্মরণ করিয়ে দেয়া হয়। সংবিধানের এ অনুচ্ছেদের ক্ষমতাবলেই রুলস অব বিজনেস বা কার্যবিধিমালা প্রণয়ন করা হয়েছে। এর বিভিন্ন ধারা অনুযায়ী সরকারের যেসব বিষয়ের সঙ্গে এক বা একাধিক মন্ত্রণালয় ও বিভাগ জড়িত, সে সংক্রান্ত প্রস্তাব চুড়ান্ত অনুমোদনের আগে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়গুলোর মতামত গ্রহণ করতে হয়। এজন্য কোন বিষয়ে কার সঙ্গে পরামর্শ করতে হবে, সে ব্যাপারে রুলস অব বিজনেসে সুস্পষ্ট দিকনির্দেশনা দেয়া আছে।
চিঠিতে বলা হয়, কার্যবিধিমালার ১০ অনুচ্ছেদ অনুযায়ী যেসব বিষয়ে এক বা একাধিক মন্ত্রণালয় ও বিভাগ জড়িত, সে বিষয়গুলো প্রধানমন্ত্রীর কাছে অথবা মন্ত্রিসভায় উপস্হাপনের আগে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ের মতামত গ্রহণ করা আবশ্যক।
এছাড়া ১৩ অনুচ্ছেদে কতগুলো সুনির্দিষ্ট আর্থিক বিষয়ে অর্থ বিভাগের সঙ্গে পরামর্শ করার বিধান রয়েছে। কিন্তু লক্ষ্য করা যাচ্ছে, অর্থ বিভাগের সঙ্গে পরামর্শ করা আবশ্যক- এমন অনেক বিষয় অর্থ বিভাগের পরামর্শ বা মতামত গ্রহণ ছাড়াই প্রধানমন্ত্রী বা মন্ত্রিসভার বৈঠকে পেশ করা হচ্ছে। অসম্পুর্ণ ফাইলটি প্রধানমন্ত্রী কার্যালয় বা মন্ত্রিপরিষদ বিভাগে যাওয়ার পর তা প্রধানমন্ত্রীর সামনে বা মন্ত্রিসভার বৈঠকে উপস্হাপন করা সম্ভব হয় না। ফলে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে আলোচনা করে ফাইলটি প্রধানমন্ত্রী বা মন্ত্রিপরিষদ বিভাগে পাঠানোর অনুরোধ করে এটি আবার ফেরত পাঠানো হচ্ছে নির্দিষ্ট মন্ত্রণালয়ে। এতে দীর্ঘ সময় ব্যয় হচ্ছে।
রুলস অব বিজনেস লঙ্ঘনের ক্ষেত্রে বড় নজির স্হাপন করেছে যোগাযোগ মন্ত্রণালয়। অর্থ মন্ত্রণালয় ও পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়কে কিছুই না জানিয়ে গত ১৩ এপ্রিল যোগাযোগমন্ত্রী সৈয়দ আবুল হোসেন বিভিন্ন প্রকল্পের জন্য অর্থ চেয়ে চীনের প্রধানমন্ত্রীকে চিঠি লেখেন। অর্থ মন্ত্রণালয় এ ধরনের চিঠি চালাচালির ব্যাপারে ঘোরতর আপত্তি তোলে। কিন্তু যোগাযোগমন্ত্রীর দাবি, তিনি প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে কথা বলে এ চিঠি দিয়েছেন। ]
সূত্র : Click This Link
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।