সারা বিশ্ব উন্নয়নের জোয়ারে ভাসুক
মাঝে মধ্যে বাবাকে খুব গালি দিতে ইচ্চা করে। জানো বাবা কিন্তু মুক্তিযুদ্ধ করেনি। আবার রাজাকারী ও করেনি। আরে ব্যাটা বাপ কইরলা কি? এ প্রশ্নের জবাবে বাবা বললেন ৭০ এর বন্যায় আমার দাদা মারা যায়..ফলশ্রুতিতে একাদশ শ্রেণীতে অধ্যায়ন রত বাবার শিক্ষা জীবনের সমাপ্তি ঘটল। সেবারের বন্যায় বৃহত্তর নোয়াখালি অঞ্চলের ব্যাপক ক্ষয়খতি হয়।
দুরযোক ব্যবস্থাপনা ব্যুরো হয়তো আরো ভাল বলতে পারবে। কৃষি প্রধান দাদার পরিবার সেবার খুব ভালভাবে বিপর্যস্ত হয়। একদিকে সদ্য বিধবা দাদী,নব বিবাহিতা আমার মা ...বিভাহ উপযুক্ত আমার ফুফু....খামখেয়ালীপনা আমার ছোট চাচা..সহ ৭ সদস্য বিশিষ্ট পরিবারের ভরণ পোষন সহ একটি পরিবার কে অনিবার্য ধ্বংশের হাত থেকে রক্ষা করাই বাবর প্রধান দায়িত্ব বলে তার কাছে বিবেচিত হয়েছে। এমতা বস্থায় তুমি কি করতে বন্ধূ ? কিন্তু আমি মেনে নিতে পারলামনা । কেননা সেদিন খামখেয়ালীপনা,পরিবারের অবাধ্য,চরম দায়িত্বে অবহেলা কারী ছোট চাচা বয়োবৃদ্দ দাদীর সাথে রাগ করে তার কয়েকজন সমমনা বন্ধূদের নিয়ে গ্রাম থেকে চলে গেলেন।
বাবার মতে তখন ৭১এর সেপ্টেম্বর মাস। ১৬ ডিসেম্বর দেশ হানাদার মুক্ত হল আর ২৮ ডিসেম্বর চাচা বাড়ীতে ফিরে আসল। বলে বেডাচ্চে সে মুক্তি যুদ্ধে অংশ গ্রহন করেছে। সে এবং তার ব্ন্ধূদের অবদানে দেশ স্বাধীণ হল। দাদুর কাছে বিরত্বের সাথে বলল সে ফেণী সীমান্ত পার হয়ে ভারতে ট্রেনিং নিল ।
এর মধ্যে আডাই মাস অতিক্রান্ত হল। ততদিনে দেশ স্বাধীণ হল। কিন্তু চাচার যুদ্ধে অংশ গ্রহণের প্রয়োজন হলনা। তারপর ও চাচা মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণে নাম লিখিয়েছেন বলে তিনি একজন মুক্তিযোদ্ধা। যে মহৎ কাজটি আমার জন্মদাতা করতে পারেন নি।
ফলশ্রুতিতে বাবা সহ আজও আমি এবং আমার সহোদররা খেসারত দিয়ে যাচ্ছি। বাবাকে নিয়ে গর্ব করে বলতে পারছিনা আমার বাবা একজন মুক্তিযোদ্ধা...। ৭০ এর বন্যার পর হাড়ভাঙ্গা খাটুনি করে সংসার চালানো বাবাকে এখনো সংগ্রাম করতে হচ্চে পরিবারের অার্থিক নিরাপত্তা বিধান করতে। কিন্তু চাচা মুক্তিযোদ্ধা, এই আলা দিনের চেরাগের বলে সে সরকারের প্রিয়ভাজন...সরকারের মতই চাল ছলন। বিশ্বাস কর সরকার তাকে কত্ত সুবিধা দিচ্ছে।
ছোট বেলা থেকেই অনেকের ধারণা আমি পড়াশোনায় ভাল মনোযোগী। অভশ্য রেজাল্ট ও ভাল ছিল । আমার প্রচেষ্টার ও ঘাটতি ছিলনা। ঢাকা বিশ্বিবিদ্যালয়ে ভর্তি পরীক্ষায় ৩৪১ তম অবস্থানে থেকেও পড়তে পারছিনা সারা জীবনের স্বপ্ন আইন বিভাগে। একই সাথে অামার চাচাতো ভাই,চাচা মুক্তি যোদ্ধা....৩৭১৭তম অবস্থানে থেকেও একই বিশ্ববিদ্যালয়ে আইন বিভাগে পড়ছে।
সারাটি ছাত্র জীবন যে আমার সাহচর্য লাভ করতে প্রত্যাশী ছিল আজ সে আমার ছেয়ে অনেক বড় হয়ে গেছে। কিছু দিন আগে সে বলল তার চাকুরী পাওয়া সময়ের ব্যাপার। কেননা তাকে সরকার বিশেষ প্রক্রিয়ায় (কোটা) নিয়োগ দিবেন। বিশ্বাস কর বাবাকে খুব গালি দিতে ইচ্চা করে ...খুউব...। কেন সে শুধু একটি বার নাম লিখালেনা মুক্তিযুদ্ধের খাতায়।
কিন্তু মনকে মানাতে পারছিনা...আচ্ছা বলতো বাবা না হয় যুদ্ধ করেনি। অন্যায় করেছে। চরম অন্যায়। কিন্তু আমি কি দোষ করেছি। আমার কাজিনই বা কি মহাপুণ্য করেছে।
এ কেমন বিচার? কেমন প্রতিদান?
দুই:
পুর্বেই বলেছি আমি মুক্তিযোদ্ধার সন্তান নই আবার রাজাকারের ও নই। যে প্রসঙ্গে বলা গত দিন কয়েক হল জাতীয় সংসদ কতৃক যুদ্ধাপরাধীদর বিচারের আইন গৃহীত হল। আশা করছি প্রকৃত অপরাধীদের চিহ্নিত করা হবে। সে জন্য সরকার কে অভিনন্দন জানাচ্ছি। কেননা এটা প্রকৃতির দাবী।
অপরাধীকে কৃতকর্মের শাস্তি ভোগ করতে হবে। প্রকৃতির রাজ্যে সকল অন্যায়ের বিচার হতে হবে। আবার ও বলছি সকল অন্যায়ের বিচার হতে হবে। তাই যুদ্ধাপরাধীর বিচার হওয়া অত্যবশ্যক। শুধু তাই নয় বিচার হওয়া অত্যবশ্যক স্বাধীন বাংলাদেশে যারা গনতন্ত্র কে হত্যা করে এক নায়ক তন্ত্র প্রতিষ্টা করেছে,বাক,সংবাদ পএ, মোল মানবাধিকার যারা হরণ করেছে।
বিচার হওয়া উচিত শেখ মুজিবুর রহমানের হত্যা কারীদের....জিয়াউর রহমানের হত্যাকারীদের....সামরিক ও সৈর শাসক এরশাদের এবং যারা তাকে আশ্রয় দিচ্ছে...বিচার হওয়া উচিত ২১ আগষ্টের গ্রেনেড় হামলার...বিচার হওয়া অত্যবশ্যক ২০০৬ সালের রাজ পথের লগি বৈঠা সন্ত্রাসীদের ...যারা কেড়ে নিল ৬ টি তাজা প্রাণ। যা হার মানায় মধ্যযুগীয় বরবরতাকে। বিচার হতে হবে ১/১১ নায়কদের.....বিড়িআর হত্যাকান্ড সহ জাতীর প্রত্যাশীত সব অপরাধের। তাই শূধূ মাত্র যুদ্ধাপরাধীদের বিচার নয় সব অপরাধের বিচার করতে হবে। নইলে প্রকৃতির বিচার বড়ই নির্মম।
সে দিন খুব বেশী দুরে নয়। যে দিন প্রহসন নয় প্রকৃত অপরাধীদের বিচার হবে।
সাবিত ভাই বকতাছে ঘূমাতে যাবো....আর স্বপ্ন দেখবো প্রকৃত অপরাধীদের বিচার হচ্ছে। কোন বিশেষ গোষ্টী কতৃক নয় বরং আইনের দ্বারা চিহ্নিত দের শাস্তি হবে। ন্ইলে ঘুম থেকে জেগে উঠব হুংকার ছেড়ে।
রক্ষা করবো নির্দোষ মানবতাকে। তুমি স্বাক্ষ্য রইলে বন্ধু । এ আমার শপথ। তুমি ও তৈরি থেকো। কারণ আমরা সত্য পথে প্রতিষ্ঠিত।
তাই বিজয় আমাদের অনিবার্য।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।