এইতো! প্রচলিত ধারণাকে সন্দেহ করার মাধ্যমেই প্রকৃত জ্ঞান অর্জন সম্ভব। সন্দেহ বা সংশয় জ্ঞান অর্জনের প্রথম ধাপ; এর মাধ্যমে মনে যে প্রশ্ন তৈরি হয় তা সমাধাণের জন্যই বিজ্ঞান ও দর্শন। বিজ্ঞানের বিকাশে এই সন্দেহ মোক্ষম কাজ করেছে। মানুষের মনে সন্দেহ নামক সম্পদটি না থাকলে আমাদেরকে অন্যান্য বন্য প্রাণীর মতোই জীবন অতিবাহিত করতে হতো। সন্দেহবাদী কিংবা সংশয়বাদী ধারণাটি আমরা প্রথম পাই প্রাচীন গ্রিক দার্শনিক প্রোটাগোরাসের লেখায়।
প্রচলিত ধারণাকে সন্দেহ করার খেসারত হিসাবে তাঁকে প্রাণভয়ে গ্রিস ছেড়ে পালাতে হয়েছিলো। পরবর্তীতে সন্দেহকে জ্ঞান আহরণের পদ্ধতি হিসাবে প্রতিষ্ঠিত করেন দার্শনিক ডেকার্টে। তিনি বলতেন, চিন্তা থেকেই সন্দেহের উৎপত্তি, আর সন্দেহ থেকে উৎপত্তি হয় জ্ঞানের। একমাত্র সন্দেহ করার প্রবণতা ছাড়া আর সব কিছুকেই তিনি সন্দেহ করতেন। cogito erogo sum (আমি চিন্তা করি, তাই আমি আছি), dubito erogo sum (আমি সন্দেহ করি, তাই আমি আছি) তাঁর দুটি বহুল প্রচলিত বচন।
জন লক, ডেভিড হিউম সন্দেহবাদকে পরিপূর্ণতা দিয়েছেন। ইন্দ্রিয়লব্ধ জ্ঞানের মূল কারণ নিয়ে তারাও ছিলেন সন্দিহান। এর উত্তর দিয়েছে বিজ্ঞান। বিজ্ঞান বলেছে, ইন্দ্রিয় তথা মানুষের সহজাত ধর্ম মূলত বস্তু সমষ্টিরই ধর্ম। এতো কথার মূল কথা হলো, সন্দেহ-সংশয় ইত্যাদি থেকেই জ্ঞানের শুরু; যা ধারাবাহিক প্রক্রিয়ার মাধ্যমে মানব কল্যাণে ব্যবহৃত হয়ে থাকে।
হায়! অবোধ বাঙ্গালি পুরুষ জ্ঞানের সন্দেহ নয়, শুধু বউকেই সন্দেহ করতে শিখলো। বাঙালি কেবল ভাব আর ভাবীর কাঙাল হয়েই থাকলো। সেই রবীন্দ্রনাথ থেকে শুরু। ভাবে মরলো, ভাবী কাদম্বরিও মরলো। তবু বাঙালি পুরুষ আর উৎরাতে পারলো না।
বিশ্বাসের তুলতুলে নরম বালিশে অব্যহৃত মস্তকটি রেখে ভাবালুতার নকশী কাঁথা গায়ে চাপিয়ে বেঘোরে ঘুমানোই সামাজিকভাবে কাক্ষিত এখানে। সন্দেহবাদী মৌলিক ভাবনা আমাদের স্নায়ুর কর্ম নয়—এ বিষয়ে আমার বিন্দুমাত্রও সন্দেহ নেই!
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।