আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

আহাম্মক

...ক্ষুদ্র আশা নিয়ে রয়েছে বাচিয়া,সদাই ভাবনা, যা কিছু পায়, হারায়ে যায়, না মানে স্বান্তনা...
আমার কানের পাশ দিয়ে একটা গুলি চলে গেলো। সামনের দেয়ালের খানিকটা পলেস্তারা খসিয়ে দিয়ে সেটা কোথাও পড়ল মনে হয়। আমি সাথে সাথে নিচু হয়ে নিজেকে বাঁচালাম। হারামজাদা পেছনের টাওয়ারটার পেছনে কভার নিয়েছে। কখন যে এতো কাছে এসে পড়েছে টের পাইনি।

আমি হামাগুড়ি দিয়ে সামনের ড্রাম গুলোর পেছনে চলে গেলাম। এইবার বাবা একটিবার মাথাটা বের করো, একগুলিতে তোমার ঘিলু উড়িয়ে দিবো। আমি আমার হাতের লেজারগানটা লোড করে নিলাম। ভেতরে দুইটা পাওয়ার টিউব আছে। আরো ঘন্টাখানেক চলবে।

আমি জানি আমার শত্রু আর বেশীক্ষন টিকবে না। বেশ কয়েকবার গুলি খেয়েছে। এখনো সে আহত। একটিবার নাগালে পেলেই বেটাকে উড়িয়ে দেবো। লেজার গানের গুলির আওয়াজ পাওয়া গেলো।

ব্যাটা ড্রামগুলোকেই গুলি করছে। বোঝাই যাচ্ছে মহা আহাম্মক। আমি জানি ওর লেজার গানে তেমন পাওয়ার টিউব থাকার কথা না। ঘন্টা তিনেক ধরে আমার পেছনে ঘুরছে। একবারো নতুন পাওয়ার টিউব পায় নি।

সুতরাং আর বেশীক্ষন হলে মিনিট বিশেক চলবে ওর পাওয়ার টিউবটাতে। তারপরই আমি তাকে বাগে পাবো। আমি গুড়ি মেরে সামনের লিফটের দিকে এগিয়ে গেলাম। ব্যাটা এখনো ড্রামগুরিকে গুলি করে যাচ্ছে। এইসব রাম ছাগল যে কেন আমার পেছনে লাগে।

ফালতু সময় নষ্ট। ঘন্টা তিনেক ধরে ঘুর ঘুর করছে পেছনে। একটা গুলিও লাগাতে পারি নি আমার গায়ে। উল্টো পায়ে গুলি খেয়ে নিজেই এখন লেংচে লেংচে চলছে। লিফটে করে একবার যদি উপরে উঠে যেতে পারি, তাহলে উপরের ব্যালকনি থেকে ব্যাটাকে একগুলিতেই সাবার করে ফেলা যাবে।

লিফটের কাছে প্রায় পৌঁছে গেছি। ব্যাক্কলটা এখনো একনাগারে ড্রামগুলোকেই গুলি করে যাচ্ছে। লিফট টা চলে এসেছে। আমি লিভারটা চেপে দিলাম। লিফট উপরে উঠে যাচ্ছে।

অল্প সময়েই আমি পরের ফ্লোরে এসে গেলাম। হঠাৎ করে ব্যাটার গোলাগুলি বন্ধ হয়ে গেছে। মনে হয় লেজার গানের পাওয়ার টিউবের শক্তি শেষ। এবার খুব সুন্দর ভাবে ব্যাটাকে মারবো। তিন ঘন্টা ধরে আমাকে নাজেহাল করে বেড়াচ্ছে।

আমি উপরের ফ্লোরের ব্যালকনি থেকে নীচে তাকালাম। নীচের ফ্লোরটা পুরোই দেখা যাচ্ছে এখান থেকে। টাওয়ারটার দিকে তাকালাম। এতক্ষন ব্যাটা ওখানেই ছিলো। এখন আর নেই।

লেজার গানের পাওয়ার শেষ বলে মনে হয় গা ঢাকা দিয়েছে। যাবে কোথায়। আমি টিকই খুজে বের করবো। আমি ব্যালকনী ধরে খুজতে খুজতে এগোলাম ব্যাটাকে। এমন সময় হঠাৎ করে মনে হলো আমার বা হাতে কিছু একটা এসে লাগলো।

পুরো বা হাতটা মনে হলো কেউ যেন কেটে নিয়ে যাচ্ছে। আমি ঘুরে দাড়ালাম। আমার সামনে দাড়িয়ে আছে ব্যাটা। কিন্তু, কিভাবে ওপরের ফ্লোরে এলো। ওপরের ফ্লোরে আসার একটাই উপায়।

ওই লিফট। আর ওটাকে কভার করেই তো এগোলাম এতোক্ষন। তাহলে এই ব্যাটা উপরে এলো কিভাবে। আর তার হাতে অত্যাধুনিক মেগা ব্লাষ্টার। এটা তো ওর হাতে থাকার কথা না।

এটা ওর পাবার কথা আরো পরে। আমিই এখনো মেগা ব্লাষ্টার ব্যবহারের মতো পর্যায়ে যাই নি। প্রচন্ড যন্ত্রনা হচ্ছে, এর মধ্যে কিছু ভাবতেও পারছি না। আমি অনেক কষ্টে আমার ডান হাতে লেজার গানটা তুলে নিলাম। ব্যাটা একটা আহাম্মক এটা আমি আগেই জানতাম।

যেভাবেই সে উপরের ফ্লোরে উঠুক, আর যেভাবেই মেগা ব্লাষ্টার বগলদাবা করুক না কেন, ব্যাটার মধ্যে ক্ষীপ্রতা বলে কিছু নেই। ভারী মেগা ব্লাষ্টারটা সামলাতেই হিমশিম খাচ্ছে। আমি বুঝে গেলাম ওর মৃত্যু আসন্ন। আমার হাতেই। বাম হাতে প্রচন্ড ব্যাথা নিয়েও আমি আমার লেজার গানটা ওর দিকে তাক করলাম।

এক হাতে এইম করে ওর মাথা বরাবর ট্রিগার চেপে দিলাম। আহাম্মকের আহম্মকী শেষ করা দরকার তাড়াতাড়ি। আমি খুবই অবাক হলাম। মাথায় শক্তিশালী লেজার গানের গুলি খেয়েও খেয়েও ব্যাটার কিছুই হলো না। সে এখনো তার মেগা ব্লাষ্টার সামলাতে ব্যাস্ত।

আমি আবারো ঠিক মাথা বরাবর গুলি করলাম। কিছুই হলো না তার। জীবনে এই ঘটনা আমি আমি এই প্রথম দেখলাম। এই ব্যাটা তো আহম্মক না। রীতিমতো অমর।

এর সাথে আমি কিভাবে লড়বো। সে অনেক কষ্টে তার মেগা ব্লাষ্টার টা ওপর তুললো। আমি এখন কই যাবো। প্রাণপণে দৌড়ুতে লাগলাম। পেছন থেকে আমার শক্র গুলি করছে।

আমাকে বাঁচতে হবে। ----------**----------------------**----------------------**----------- সাতবার গুলি মিস করে আটবারের মাথায় গেমটার ভিলেন ডিরাক দি টেররকে মেগা ব্লাষ্টার দিয়ে গুলি করে মেরে আট বছর বয়সের কাব্য অবশেষে তার কম্পিউটার থেকে উঠলো। ডিরাক দি টেরর খুবই দুর্ধর্ষ ভিলেন। গেমের এই লেভেলটাতে কিছুতেই কাব্য ডিরাককে মারতে পারছিলো না। কয়েকদিন ধরে সে যতবারই ডিরাকের সামনে যায়, অল্প সময়ের মাঝেই ডিরাক তাকে মেরে ফেলে।

শেষে বন্ধু অন্তুর কাছ থেকে চিটকোড নিয়ে আজ চিটকোড দিয়ে গড মুড নিয়ে খেলতে বসেছিলো। ডিরাক কে মারতে পেরে কাব্যর দারুন লাগার কথা। কম্পিউটার স্ক্রীনে বড় করে লেখা ‘গেম ওভার’ টা দেখেও কাব্যর কেন যেন ততটা আনন্দ হলো না। যদিও আট বছরের কাব্য কারনটা ঠিক ধরতে পারলো না। নির্ঘন্ট: চিটকোড: কম্পিউটার গেমের এক বিশেষ প্রকার কোড যা দিয়ে নানা রকম মুডে যাওয়া যায়।

যেমন গড মুড। এই মুডে গেমের খেলোয়ার কোন ভাবেই মারা যাবে না। এছাড়াও আছে অল অ্যামো মুড। যাতে সব অস্ত্র আর গোলাবারুদ এক সাথে পাওয়া যায়। সাধারনত চিটকোড তৈরী করা হয় গেম ডেভেলপার আর টেষ্টারদের জন্য।


 

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.