গল্প-(১)...
ছেলেটির নাম আজাদ ।
অত্যন্ত ধনী পরিবারের ছেলে ছিল আজাদ ।
মুক্তিযুদ্ধ করতে গিয়ে রাজাকারদের সহযোগিতায় পাকি বাহিনীর হাতে ধরা পড়ে আজাদ ।
আজাদের উপর অকথ্য নির্যাতন চালানো হয় তার সহযোগীদের খবর জানার জন্য । কিন্তু আজাদ তার সহযোগীদের তথ্য জানাতে অস্বীকৃতি জানায় ।
পাকি বাহিনী তথ্য জানার জন্য ভিন্ন কৌশল নেয় । তারা আজাদের মাকে আজাদের সাথে দেখা করার সুযোগ দেয় এই শর্তে যে, আজাদ যদি তার সহযোগীদের তথ্য জানায় তাহলে তাকে ছেড়ে দেয়া হবে ।
বন্দী অবস্থায় আজাদ তার মাকে জিজ্ঞেস করে, মা আমি কি তথ্য জানাবো ??
আজাদের মা দৃপ্ত কন্ঠে বলেন, ওরা যদি তোকে মেরেও ফেলে তারপরও ওদেরকে কিছু বলবি না ।
আজাদ ওর মাকে বলে, মা প্রায় এক সপ্তাহ হলো ভাত খাই না । এরপর যখন দেখা করতে আসবে ভাত নিয়ে এসো ।
সহযোগীদের তথ্য না দেয়ায় পাকি বাহিনী আজাদকে মেরে ফেলে ।
এরপর আজাদের মা আরো ১৪ বছর বেঁচে ছিলেন কিন্তু তিনি কোনদিন ভাত খাননি ।
গল্প-(২)...
নারায়ণগঞ্জের এক মুক্তিযোদ্ধা যুদ্ধে শহীদ হন ।
এরপর তার লাশ সহযোগীরা তার বাড়িতে নিয়ে আসে ।
সেই মুক্তিযোদ্ধা ছিল তার মা-বাবার একমাত্র সন্তান ।
তার লাশ দেখার পর তার বাবা কাঁদতে ছিলেন ।
সবাই বলাবলি করছিল একমাত্র ছেলে কষ্ট তো বেশি হবেই ।
তখন সেই মুক্তিযোদ্ধার বাবা বলেছিলেন, ও আমার একমাত্র ছেলে সেই জন্য আমি কাঁদছি না । আমি কাঁদছি আমার আর কোন ছেলে নাই কেন ??
থাকলে সেইটাকেও আমি এখনই যুদ্ধে পাঠাতাম ।
এমন হাজারো করুন গল্প রয়েছে ৭১ এর ।
রয়েছে অজস্র আত্মত্যাগ ।
পাকিরা ৭১-এ যে হত্যাযজ্ঞ চালিয়েছে তার সিংহভাগের সহযোগী হিসেবে ছিল এদেশেরই কিছু কুলাঙ্গার ।
রাজাকার, আল-বদর, আল-সামস এদের সহযোগিতাতেই পাকিরা ঘটিয়েছিল নারকীয় হত্যাযজ্ঞ ।
এদেশের এই কুলাঙ্গার গুলা যদি পাকিদের সাহায্য না করত তাহলে ইতিহাস হয়তো অন্যভাবে লেখা হতো ।
তাই এদের ফাঁসি ছাড়া অন্য কোন শাস্তি হতেই পারে না ।
আজ দেশের মানুষ জেগেছে ।
দেশকে চূড়ান্ত ভাবে কলঙ্ক মুক্ত করার এখনই সময় । ।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।