আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

সুন্দরীদের প্রতি করুনা আর এক চিলতে উদাসীনতা

আসেন দুর্নীতি করি। আর এই দুনিয়াটাকেই খুচাই!

গতকালের স্বপ্নটা কেমন ছিলো, পার্কে বসে ভাববার বয়সটা বেশ ভালো ভাবেই এগুচ্ছে। রেগুলার প্রাকটিসের মার্ক আপটা আজকে ছুতে বেশ কস্ট হলো। কি করা আর, বয়সের ব্যাপারটা ইগনোর করাটা বুদ্ধিমানের কাজ নয়। টেবিলে পড়ে থাকা সাদা এনভেলপটা হাতে নিয়ে কিছুক্ষন জানালার পাশে দাড়িয়ে আছি।

রাস্তার ওপারের বিল্ডিংএ ৬ তলায় একটা মেয়ের রোজ পায়চারী দেখতে ভালোই লাগে। এ সময়টায় দেখা যায় হাতে একটা বই আর কানে হেডফোন। কাছ থেকে দেখা হয়নি, জানা হয় নি তার নাম। এনভেলপটা খুলে দেখার দরকার, দেখি আজকে কি পয়গাম। মোট ছয়টা মেয়ের ছবি।

তিনজন খুব সুন্দর, ছবির পেছনে সিভি আকারে লেখা কিছু তথ্য। পড়াশুনায় ভেরেন্ডা, রূপে ক্লিওপেট্রা। বাকি তিনটা আগের গুলোর মতো অতো সুন্দর না, তবে কোয়ালিফিকেশন আমার চেয়ে কম না। এই নির্যাতন শুরু হয়েছে বছর তিনেক আগে থেকে। একদিন সকালে জীম থেকে এসে দেখি বাবা লাঠি হাতে বসে।

শুক্রবার দিন বাবা ঢাকার বাইরে ব্যবসায়িক কাজে যান সাধারনত, কিন্তু সেদিন যাননি। সেদিন না গিয়ে আমার রূম সার্চ দিয়েছেন। বোঝা গেলো বোনটা জাসুসি করেছে। পাওয়ার মধ্যে পেয়েছে জাজীমের নীচে তিনটা চটি আর ড্রয়ারে ২ টা এ্যডাল্ট ডিভিডি। সেদিন মার খেয়ে কিছুদিনের জন্য বাসা থেকে উধাও হয়ে যাই।

দুদিন পর বাসায় এসে দেখি পুলিশ বসে আছে। আমাকে দেখে কড়া ধমক দিয়ে কিছু কাগজে সিগন্যাচার নিয়ে চলে গেলো, বাবা আগের দিন হাসপাতাল থেকে ফিরেছেন। ৩-৪ ঘন্টা আত্নীয় স্বজনের জেরার পর ছাড়া পেলাম। ওদিকে সকল শয়তানীর মূলে থাকা বোনটি দুটো এনভেলপ ধরিয়ে দিয়ে বললো," এত নাটক শিখেছো কোথা থেকে?" আমি সব সময়ই কথা কম বলি। এনভেলপ দুটোর একটা ছিলো বর্তমান চাকরীর জয়েনিং লেটার আর দ্বিতীয়টা ছিলো ৬ টা মেয়ের ছবি।

হাত গুণে বলে দেয়া যায় ১১৪ টা মেয়ের ছবি গত ৩ বছরে দেখা হয়ে গেছে। প্রতিবার এনভেলপে ৬ টা ছবি নতুন নতুন মেয়ের, কিন্তু আফসোস ছবির পিছনে তাদের কারো ফোন নম্বর পাইনি। বাবা একবার বলেছিলো," সমস্যাটা কি? এই ঢং কয়দিন চলবে? কোনো সমস্যা থাকলে ফারুকের কাছে চলো। সব চেকআপ করায় আনি, চিকিৎসা করাই। বদ অভ্যাসের ক্ষতি কতখানি হইছে সেটার চিকিৎসা দরকার।

" আমি বরাবরই নির্বিকার। আমার কাজিনরা শুনে বলে," আপনার বৈরাগ্য কিসের জন্য?" আমি ভাবতে বসি আসলেই কিসের জন্য? ছ্যাক খেয়েছি বলে মনে পড়েনা। একবার মনে পড়ে বন্ধুদের সাথে বাজী ধরে একটা মেয়েকে হাত ধরে বলেছিলাম," ফেয়ার এন্ড লাভলী মাখলে আরো সুন্দর লাগতো তোমায়। " মেয়েটি তখন আমার দিকে এমন ভাবে তাকালো মনে হলো আমি বিশাল এক দৈত্য। হাত ছুটে বেশ জোড়ে দৌড় দিতে দিতে বললো," বাচাও! বাচাও!" আমি অবস্হা বেগতিক দেখে উল্টো দিকে দৌড়ালাম।

আশে পাশের পাবলিক একটু দোটানায় পরে গেলো। আমি কি আসলেই ভয়ে ভাগছি নাকি দলবল আনতে যাচ্ছি। দু'য়েকটা ছেলে পেলে এক পা রাস্তায় দিয়ে আবার পিছিয়ে গেলো। যতদূর মনে পড়ে মেয়েটা ভেবেছিলো আমি বোধ হয় ফেয়ার এন্ড লাভলী না দিয়ে এসিড মারতে গিয়েছিলাম। অফিসটা ভালোই কাটে।

সারাদিন দুয়েকটা প্রেজেন্টেশন সাথে একটা মিটিং, ব্যাস। নিশ্চিন্ত সব কাজ, শুধু ডিসিশন দিতে হয় ফোরসাইট অনুযায়ী। একবার বস ডাকলেন রূমে, তখন রাত বাজে ৯:০০ টা। আসলে আমি বিকেলের দিকে একটা মুভী দেখতে বসেছি আর খেয়াল হয়নি যে বাসায় যেতে হবে। বস ফোন দিয়ে বললো," একটু রূমে আসতো।

" রুমে ঢুকতেই বসতে বললো। : বলো তোমার কি খবর? : এইতো ভাইয়া, প্রোজেক্টগুলোর গান্ট চার্ট টেকনিক্যালের সাথে বসে ফাইনাল করে ফেলেছি। : আরে সেটা না, তোমার বাসার কি খবর? : এ্যাজ ইউজুয়াল। : তা তোমার বিয়ে শাদী নিয়ে কি কিছু ভাবছে? : (একটু চিন্তা করে) উমম..জিজ্ঞেস করা হয়নি। : এই এনভেলপটা নিয়ে যাও, বাসায় তোমার মাকে দেখাও।

দেখে আমার সাথে যেনো কথা বলে। আবারও এনভেলপ! একটা দীর্ঘনিঃশ্বাস ছেড়ে চলে আসলাম বাসায়। ভাবলাম পাড়ায় যাই। রাত ১০টায় ঢাকা শহরে হাটার মজাই আলাদা। তখন বোঝা যায় আসলে ঢাকা শহর কত উন্নত একটা জনপদ।

কি নেই এখানে! পার্ক, লেক, স্কাইক্রেপারস, আবেগ, বন্ধন, ভালোবাসা, প্রযুক্তি সবই আছে। তবু আমরা শান্তিতে নাই। দিনের বেলায় এখানে দোজখ বিরাজ করে আর রাতের বেলা একটা নীরব জান্নাত। ছোটবেলা থেকেই শখ ছিলো একটা অন্যরকম কিছু করবো, সেই অন্যরকমের সংজ্ঞা কি হবে সেটা ডিফাইন কোনো দিনও করতে পারিনি। জীবন তো একটাই, গতানুগতিক নিয়মে চলে গেলে হয়তো সুখি হবো গতানুগতিক ধারায়।

কিন্তু গতানুগতিক নিয়মটা আমার মোটেও পছন্দ না। তবে খোজ পাইনা সেই অন্যরকম অনুভূতির। মাঝে মাঝে এমন কিছু এসেছিলো জীবনে যেখানে ছিলো শুধু হাতছানি, কিন্তু ছিলো না সম্ভাবনা। সম্ভাবনাহীন পথ আমার নয়। যেখানেই হাত দিয়েছি সেখানেই সাফল্য হাতের মুঠোয় এসেছে।

ব্যার্থতা আমার নয়, তাই বিশ্বাস জন্মেছে অন্যরকম জীবনের ছোয়া অবশ্যই নাগালে পাবো। দিনের বেলা মল চত্বরের কৃষ্ঞচূড়ার সারিতে আগুন লেগে যায়। আর রাতের বেলা সব নীরবতার মায়ায় নিজেকে সপে দেয় গভীর স্বপ্নিল জগতে! আমি ওদের নীরবতা দেখতে মাঝে মাঝেই নিশাচর হই। এনভেলপটা খুলি, দেখি আরেকটা মেয়ের চেহারা। কি অদ্ভুত তাই না, মেয়েগুলো নিশ্চিত জীবনের আশায় সফল ছেলেদের সাথে নিজেকে সপে দিতে চায়।

অথচ এই মেয়েগুলো জীবনে পরাজিত কোনো ভালো মানুষকে নিজের স্বামী হিসেবে দেখতে চায় না। এই সব মেয়েদের প্রতি আমার করুনা হয়। এরা শুধু ভালোবাসে এক নিশ্চিৎ জীবন। কখনো কি এরা সুখ পায়? নিজেরা কখনোই ছুটে না সাফল্যের পিছনে। সাফল্য করার মতো মেধা থাকলেও এরা কস্ট করতে চায় না, তাহলে রুপের খোলসে মোড়া আসল চেহারা বের হয়ে যাবে।

নাহ...এসব পোশাকী মেয়েদের খুব বড় জোড় করুনা করা যায়, বিয়ে নয়। ডাস্টবিনটায় আবারও ভরবার চেস্টা করি আমার করুনার পাত্রীকে। রুপের বেসাতী সাজানো কাউকে আমার দরকার নাই। আমার দরকার একটু অন্যরকম জীবন, যেখানে থাকবে বুক ভরা জুনুন, ভিন্ন এ্যাঙ্গেলে দেখার সুযোগ। জানি সময় আসবে আমাদের কাছে, তখন বদলাবো একটা প্রজন্ম যারা দেখে শিখবে এই আমাদেরকেই।

তাহলেই তো অন্যকিছু পাওয়া হলো, তাই না! তবে মহাপুরুষ আমি নই!

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.