অভিলাষী মন চন্দ্রে না পাক, জ্যোৎস্নায় পাক সামান্য ঠাঁই
পৃথিবীতে সবচেয়ে সুন্দর জিনিস কি?! কেউ উত্তরে হয়ত বলবে, ফুল, নীল আকাশ, প্রজাপতি, কিংবা বিশাল সাগর। এইগুলোও কম সুন্দর না। কিন্তু কোন জিনিসটা মানুষের মুখে হাসি ফুটায়? কি দেখলে মানুষ তার সব কষ্ট ভুলে যেতে পারে? কি দেখলে মানুষ তার জীবনের জটিলতা ভুলে গিয়ে একটু খানি নিঃষ্পাপ পাগলামী করতে পারে?
আমার মতে, এই সব প্রশ্নগুলোর উত্তর হলো ছোট্ট শিশু। আজকে আমি কিছু এ্যান্জেল আমার ব্লগে নিয়ে আসলাম।
এই বাবুটা আমার আম্মুর ক্লাসের এক মেয়ের।
কয়েকদিন আগে আমাদের বাসায় এসেছিলো। একদম শান্ত শিষ্ট গুদুগুদু বাবুটা। প্রথম প্রথম একদম চুপ করেই বসেছিলো। অনেকক্ষন পরে, আম্মু দেয়ালে ছবি ঝুলাবে এই জন্য হাতুড়ি দিয়ে দেয়ালে পিন লাগাছিলো। সে আবার চোখ বড় বড় করে সেই দৃশ্য দেখেছে।
একটু পর হাতে রিমোট নিয়ে টিভির উপর বাড়ি মারা শুরু করলো, ভাব এমন সে কোন এক মহৎ কাজ করে ফেলেছে। ওর আম্মু এসে হায় হায় করা শুরু করলো। পিচ্চির আর কি দোষ, আম্মুকে দেখেছে পেরেক লাগাচ্ছে দেয়ালে সেও দেখা দেখি টিভিতে পেরেক লাগানো শুরু করেছে।
আমি যখন কুকি খেতে দিলাম পিচ্চিকে মা বলে আদর দিতে আমাকে। ওলে, এসে আমাকে একটা পাপ্পি দিলো! আমি পুরাই কাইত
এইগুলো আমার কাজিনের বাচ্চা কাচ্চা।
যেটা কালো রঙে পান্জাবী পড়ে আছে, ওর নাম ফারদিন। আমি যখন দেশে ছিলাম তখন সে একদম পিচ্চি ছিলো। আমি যখন মাঝে মাঝে বিছানার উপর আধশোয়া হয়ে টিভি দেখতাম, আর সে যদি খাটের উপর না থাকতো-সে এসে আমাকে উ উ শব্দ করে ডাক দিয়ে বিছানার উপর দুহাত রেখে রেখে আমাকে বুঝিয়ে দিতো যে সে খাটের উপর উঠতে চায়। আর আমি যেনো উকে কোলে করে তোলে দেই। আমিও ছিলাম অনেক পাঁজি, এত সহজে কিছু ছাড়াই পিচ্চিকে আমি খাটে তুলে দিবো?! একদম না।
আমি ওকে আমার গাল দেখিয়ে বলতাম পাপ্পি দাও। ফুপ্পিকে আদর দাও তাহলে তুলে দিবো। সেও নাছোড়বান্দা আমাকে আদর দিবো না, আমিও কম না...আমিও ওকে বিছানায় তুলবো না। এরপর বাধ্য হয়ে আমার গালে ছোট্ট করে একটা চুমো খেতো। ওরেএএএএএএএএ আমিতো পুরা ফিদা।
তারপর মানিকটাকে কোলে নিয়ে বিছানার উপর তুলে দিতাম। আর আদর করতে করতে অর্থেক খেয়ে ফেলতাম।
ফারদিন পিচ্চি বেলা থেকেই কোক আর ডিম পছন্দ করতো। ফ্রিজ খুলে মুখের দিকে আঙুল পয়েন্ট করে বলতো কোক, ডিম। মানে বুঝিয়ে দিতো যে সে ডিম/কোক খেতে চায়।
এই তিনটা জান-ই আমার বড় ভাইয়ার জন্য পাগল। ভাইয়া বাহির থেকে আসলেই খোঁজে খোঁজে ভাইয়ার কাপড়/গামছা এইসব নিয়ে আসতো।
****আর যেই পিচকিটা কানে ফোন ধরে ভাব ধরেছে ওটা আমার খালাতো বোনের প্রথম ছেলে, মাহি। এইটার জন্মের আগে আমি ছিলাম সবার চোখের মনি। আমার খালা, মামার ছেলে মেয়েদের মধ্যে আমিই সবার ছোট, এজন্য সবার এত্ত এত্ত আদর পেতাম।
মাহি হবার পরে সবাই দেখি আমাকে আর পাত্তা দেয় না। মাহিকে নিয়েই উঠে পড়ে লেগেছে!!!
যাইহোক, আপু যখন দুপুরে মাহি আর ফাহিমকে(ছবির মাঝখানের বাবুটা) ঘুম পাড়াতো আমি তখন বসে থাকতাম, কারন আমি না থাকলে চিল্লা পাল্লা করতো। আপু জুড়ে জুড়ে হাত দিয়ে ধাক্কায় দিয়ে দিয়ে ঘুম পাড়াতো আর ঘুম পাড়ানি ছড়া বলতো। আর মাহি পাজি না ঘুমিয়ে মুখের মধ্যে বুড়ো আঙুল নিয়ে চোখ বড় বড় করে তাকিয়ে থাকতো।
মাহিকে যদি কেউ বলে যে, মাহি হাসো তো, ছবি তুলবো।
ওমনি সে সবগুলো দাঁত বের করে দারুন একটা ভাব নিতো।
এই পরীটার নাম জেসিকা। আমার উপরের ম্যানেজারের মেয়ে। ঘুম থেকে উঠেই পাগলী হয়ে চলে এসেছে। আমি বললাম যে আসো চুল ঠিক করে দেই, ওমা! সেই ওর বাইক নিয়ে দৌড়! আমি যখন বললাম যে ছবি তুলবো তাকাও ক্যামেরার দিকে, এই ছবিটা উঠলো।
এইটাকে আমি পিচ্চি বেলা থেকেই দেখেছি। কালকে নতুন একটা সেন্টেনস বললো "do you understand?" ঠিক মত এখনো কথা বলতে পারে না। আধো আধো কথা বলে। জবেই আমরা সবাই ওর সাথে লুকোচুরি খেলি। আমি যখন বলি যে, "where's Jesica? I can't fine Jesica" আমার সামনে ঝড়ের গতিতে এসে ওর বুকের মধ্যে আঙুল দিয়ে বলবে This is Jesica. ঐদিন আমরা ছবি দেখছিলাম, ছবির মধ্যে আমিও ছিলাম।
সে ছবিটা হাতে নিয়ে আমার কাছে দৌড়ে এসে বলে Janifa... Janifa...
ছবির মধ্যে সে আমাকে আঙুল দিয়ে দেখিয়ে দিচ্ছে।
ঐদিন আমরা খেতে বসলাম। সেও বসলো আমাদের সাথে। টেবিলে আমার খাবার রেখে আমি গেলাম ওর জন্য জুস আনতে। এসে দেখি ডান হাত বাম হাত দিয়ে আমার প্লেট থেকে খাবার নিচ্ছে।
আর আমি যে পানি খাচ্ছিলাম সেই গ্লাস থেকে সেইম স্ট্র দিয়ে পানিও খেয়ে ফেলছে!!!!
প্রথম প্রথম মেজাজ খারাপ হলো, ধুর জেসিকার হাত ধুয়া না কিচ্ছু না তার উপর আমার স্ট্র দিয়ে পানি খেলো!!! পরে ভাবলাম এইগুলো তো এক একটা পরী, আমার নিজের বাবু হলে তো আমি কত্ত আদর করে খাওয়াবো। মাঝে মাঝে জেসিকার জন্য খুব খারাপ লাগে, বাপ মা থাকে ব্যাস্ত। ডে কেয়ারেও দেয় না টাকার ভয়ে, এইটারে টেইক কেয়ার করার মত কেউ নেই।
একদিন এইটার উপর রাগ করেছিলাম। অনেক জ্বালাচ্ছিলো।
প্রথমে বললো, পানি খাবে। পানি দিলাম পানি চায় না। সফট ড্রিং চায়। সফট ড্রিং দেয়া যাবে না। সে লাগালো চিল্লা পাল্লা।
এর পরে আমি সফট ড্রিং দেই নি বলে আমাকে আলতো হাতে হাতের মধ্যে মারলো। এর পরে আমি আর কথা বলি না ওর সাথে। অনেকক্ষন পিছু পিছু ঘুড়লো। ওর নানীকে গিয়ে শুধু বলে "জানিফা...জানিফা" আর কিছুই বলতে পারে না। কিছুক্ষন পরেও আমার কাছে আবার এসে নিজের গলা থেকে একটা মালা খুলে আমার হাতে দিলো আমার রাগ ভাঙানোর জন্য।
(আমার মনে হয় কথা বলতে পারলে ঠিকই সরি বলতো) হাউ সুইট!!!
এই কিউটিটা আমার জবে এসেছিলো। ভাগ্যিস সেদিন ক্যামেরা সাথে ছিলো। আমি কাছে গিয়ে যখন বললাম যে তোমার নাম কি? তুমি কি খাচ্ছো? ওরে আল্লাহ, মাথা নিচু করে (লাজুক ভাব) আমার হাতে কেন্ডি দিয়ে ফেললো।
(এই রকম একটা কিউট মেয়ে বাবু আমি চাই)
*****
আরেকটা পিচ্চি এসেছিলো। অনেক ছোট।
বাবা মা কাগজ কলম দিয়ে রেখেছে আকি-ঝুকি করার জন্য। কাগজের এই মাথায় একটা টান দিয়ে ঐ মাথায় যায়। যাবার সময় ওর বাপ বলে, আমার ছেলে তোমাকে কিছু দিতে চায়! যাবার সময় পিচ্চির আকিঁ ঝুকি আমাকে দিয়ে গেছে। ছবিটা দেয়ার ইচ্ছে ছিলো কিন্তু আমার স্কেন মেশিন নষ্ট
******আরেকটা পিচ্চির কথা বলি, ওটা একদম জানেমান ছিলো। অনেক কিউট।
দাদী আর মার সাথে এসেছিলো। আমার যথারীতি পিচকি দেখে নিজেকে সামলাতে পারলাম না। কাছে গিয়ে বাবু বাবু কথা বলতে লাগলাম। এক পর্যায়ে পিচ্চি আমার কনে আঙুলে ধরে ফেললো। আমি যখন বললাম যে-"তুমি আমাকে ধরে রাখলে কি করে যাবো!" পিচ্চি লাজুক লাজুক হাসে।
পিচ্চির মা বলে , "oh you get a beautiful girlfriend" যাবার সময় অনেক কেঁদেছিলো। ওরে জানটা! যাবার সময় আমাকে হাগ দিয়ে গেলো। আর আসে নাই আমার বয় ফ্রেন্ডটা
এই পোষ্টে পিচ্চিদের বর্ননা শেষ হবার না। তবুও আজকে থামি। এই লেখাটা যখন লিখতে শুরু করি তখন আমার মনটা ভীষন খারাপ ছিলো, লিখতে লিখতে একদম মন ঝিলমিল হয়ে গেলো।
এই লেখাটা সব বাচ্চা পাগলদের জন্য সাথে অনন্তকে দিলাম যে মন খারাপ করা লেখা দিয়ে সবার মন খারাপ করে দিয়ছে।
(এই পিচ্চিকে কোথায় পেয়েছিলাম মনে নেই)
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।