.................।
তখন ও বুয়েটের হলে থাকি, মাঝে মাঝে হলের ছাদে গিয়ে(ইলেকট্রিসিটি না থাকলে) পাশব'তী হলের উদ্দেশ্য মধুব'ষন করি। বৃস্টি হলে নিচ তলায় মামুর ছোট দোকানে চা/কফি খেয়ে বৃস্টি এনজয় করতে বাহির হয়ে পড়ি।
হলের গেস্ট রূমে ১/২ জোড়া কাপলদের নিয়ে যখন ব্লকে রসালো আলাপ তাতে অংশগ্রহণ করি। মাঝে উদাস হয়ে রাতের ১-২টায় বুয়েট ক্যাম্পাসের আশে-পাশে একা একা হাটা দেই অথবা বন্ধুদের নিয়ে রাতের বেলায় রিক্সা টুরে বাহির হই,সেই স্মৃতিমাখা মধুময় জীবনের গল্প এটি।
আমার রুমমেট ছিল কঠিন প্রেমিক। সে নিজেই বলতোঃ
আমি হলাম এই ব্লকের আ'দশ প্রেমিক। তাকে বুয়েটের আইল্যান্ডে
প্রেমিকার সাথে ঝগড়ার পর ট্রাফিক কন্ট্রোল করতে দেখা গিয়েছে।
আমার সেই রুমমেট দোস্ত তার বড় বোনের বিয়ের ২ দিন আগে হলে মন খারাপ করে বসে আছে। এখানে বলে রাখা ভাল - আমার ঐ দোস্তের বাসা ঢাকাতেই।
আমি তাকে বললাম
আমিঃ কিরে তোর মুখ পাতিলের তলার মতো কালো করে রেখেছিস কেন?
আমার দোস্তঃ আমার বোনের বিয়ে এত মজা হবে বাট আমি
ইমু(ছদ্ম নাম-আমার দোস্তের গা'ল ফ্রেন্ড)কে নিতে পারবো না কারণ আমি যদি তাকে বাসায় নিয়ে যাই, আম্মা বুঝতে পারলে বিয়ের আনন্দ মাটি করে দিবে সবার। আমারতো কিছুই করতে ইচ্ছে করছে না। চিন্তা করছি বিয়ের হলুদ এবং বিয়েতে যাব ও তোদের মত খেয়ে চলে আসব।
আমিঃ এটা কি বলিস? তোরে ধরে গাছে লটকাই পিটান ও উচিত। ইমু কি বলে?
আমার দোস্তঃ ও আমাকে বলছে যাওয়ার জন্য বাট আমার মন তাকে ছাড়া কোন আনন্দ করতে ইচ্ছে করছে না, সবকিছু মাটি মাটি মনে হবে।
এখানে আরেকটা কথা বলে রাখা ভালো- আমার ঐ দোস্তের পীরিতের কথা আমার দোস্তের ফ্যামিলি জানত যথারীতি আমার দোস্তের গা'ডিয়ানদের কথা আমাদের ছেলের তুলনায় ওই মেয়েতো কিছু না, ইত্যাদি ইত্যাদি। বাট ঐ মেয়েকে তারা কখনো ফেস টু ফেস দেখে নাই।
এবং আরেকটা জিনিস হল আমার ঐ দোস্তের বাসার লোকজন আমাকে ভালোই পছন্দ করতো।
আমি বুঝলাম আমার ঐ দোস্ত হয়তো যাবে বিয়েতে বাট অলটাইম মনমড়া করে থাকবে। তাই আমি বললাম-
আমিঃ শোন মন খারাপ করিছ না বিয়ের অনুষ্ঠানে যা তুই বড় ছেলে তাই যাওয়া উচিত ।
আর ইমুকে আমি আমার সাথে নিয়ে যাব।
আমার দোস্তঃ মানে??? কেমনে নিবি তুই।
আমিঃবলবো আমার মামাতো বোন। বাকিটা আমার ব্যাপার। তারপর আমি আমার টোটাল প্ল্যান আমার দোস্তকে খুলে বল্লাম।
আমার দোস্তঃ চল আলম ভাই এর দোকানে(আউলার পিছনের দোকান, তখন সব হলের দোকানের মধ্য আলম ভাই এর দোকান বেস্ট ছিল)
আমিঃ কেন?
আমার দোস্তঃ তোরে দুই লিটার কোক খাওয়ামু। (ব্লকে কোকখোর নামে আমার ব্যাপক সুনাম ছিল)
এক ঘন্টা পড়ে আমার দোস্ত বাসায় চলে গেল এবং যাওয়ার আগে ইমুকে সব ইনফ'ম করে গেল.
বিয়ে ছিল দুপুরের দিকে।
১/২ টার দিকে ইমু আমার হলে আসল। আমি আমার কিছু হলের ফ্রেন্ড ও ইমুকে নিয়ে আমার দোস্তের বাসার উদ্দেশ্য রওনা দিলাম। আমার সংগী-সাথী দোস্তদের ও আমি আমার প্ল্যান সম্প'কে বললাম আর তাদের বললাম তোরে কেউ হাসিস না চুপ থাকবি।
বিয়ে বাড়ীতে পৌছানোর সাথে সাথেই আমি আমার দোস্তের ছোট বোনের মুখামুখি।
আমার দোস্তের ছোট বোনঃ ভাইয়া উনি আপনার মামাতো বোন?
আমিঃ হ্যা। কেন দেখতে আমার মত খারাপ তাই দেখেই বুঝলা আমার মামাতো বোন।
আমার দোস্তের ছোট বোনঃ কি যে বলেন ভাইয়া। উনি অনেক কিউট।
আমিঃ যাউকগা বিপাশার মত বল নাই, তা নাহলে মাসুদ(আমার দোস্তের নাম) এর চোখ এড়ানো যেত না। তোমার ভাই এর চয়েস তো জানোই মমতা টাইপ মেয়ে।
ইমু ফিক করে হেসে দিল।
১~২ ঘন্টা ঘুরাঘুরি হল। কনের স্টেজে ইমুকে নিয়ে গিয়ে কনের(দোস্তের বড় বোন) সাথে পরিচয় করিয়ে দিলাম।
দোস্তের বোনের বিদায়ী কান্নাকাটির পর আমি,ইমু এবং অন্য দোস্তরা একটা রুমে বসে আছি। এই সময় আন্টির আগমন রুমে।
আন্টি: বাবারা তোমরা কিছু মনে কইরো না, তোমাদের সাথে কথা বলার সময় পেলাম না। বুঝেইতো মেয়ের বিয়ে।
আমার অন্য দোস্তঃ না আন্টি কি যে বলেন।
আমাকে টা'গেট করে আন্টি বললঃ কই তুমি নাকি তোমার কাজিন নিয়া আসছ। পরিচয় করাই দিলা নাতো?
ইমু তখন ছোট্র করে একটা সালাম দিল।
আমি বললামঃ আন্টি ঢাকায় আসল ছয় মাসের মত। হলে থাকে তো সবসময় বলে যে আমি কেন কোথায় নিয়ে যাই না। ঢাকায় আমাদের তেমন কোন রিলেটিভ নাই সেটা তো জানেন. তাই আজ চান্স পাইলাম তাই নিয়ে আছলাম।
আপনি আবার কিছু মনে করেন নাই তো.
আন্টি: ওমা মেয়েটা কত লক্ষী, কিউট। তুমি এখন থেকে যখন আমাদের বাসায় আসবা ওকে নিয়ে আসবা।
আন্টি এবার ইমুকে বললঃ কি নাম তোমার??
ইমুঃইমু।
আন্টি: তুমি কিন্তু কোন লজ্জা পাবা না। ওর(আমার) সাথে মাঝে মাঝে আমাদের বাসায় এসে ঘুরে যাবা।
আন্টি এবার বিদায় নিল, তার কিছুক্ষন পরে আমরা ও দোস্তের বাসা থেকে বিদায় নিলাম।
ঐ ঘটনার পর থেকেই মাঝে মাঝে আমার অন্য দোস্তরা খেপায়ঃ কিরে তোর মামাতো বোন কেমন আছে?
এই হল আমার এক্সরুমমেটের ব'তমান স্ত্রীর তাদের বাসায় প্রবেশের প্রথম দিন।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।