আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

টিপাইমুখে বাঁধ হলে বাংলাদেশের পরিবেশগত কী ক্ষতি হবে?পর্ব-১



টিপাইমুখী বাঁধ নির্মাণ হলে ভাটির দেশ হিসেবে বাংলাদেশ মারাত্মক ভাবে ক্ষতিগ্রস্থ হবে। বিপর্যস্ত হবে অত্র অঞ্চলের পরিবেশগত অবস্থা। টিপাইমুখ বাঁধের পরিবেশ গত প্রভাব নিম্নে আলোচনা করা হলোঃ- বাংলাদেশের উত্তর পূর্বাঞ্চলের ছোট থেকে মাঝারিসহ বড় আকারে বন্যার প্রকোপ মারাত্মক ভাবে বৃদ্ধি পাবে। সুরমা কুশিয়ারা কালনি এবং মেঘনা নদীতে পানি প্রবাহ কমে যাবে। শুষ্ক মৌসুমে পানি প্রবাহ সর্বনিম্ন পর্যায়ে পৌঁছাবে।

সুরমা, কুশিয়ারা, কালনি এবং মেঘনা নদীতে পলি বৃদ্ধি পাবে অতিমাত্রায়। ফলে সুরমা-কুশিয়ারা কালনি এর মেঘনা নদীর গতিপথ বাধাগ্রস্ত হবে। নদীগুলোর গঠনগত মৌলিক পরিবর্তন সাধিত হবে। যার ফলে নদীগুলোর গতি এবং পানি প্রবাহের দিক পরিবর্তিত হয়ে যেতে পারে। ঐ নদীগুলো (সুরমা-কুশিয়ারা কালনি এবং মেঘনা নদীর) পানির গুণাগুণ নষ্ট হবে মারাত্মকভাবে।

নদীতে পানির স্তর এবং নদীতে তীরবর্তী ভূগর্ভস্থ পানির স্তর আশংকাজনক হারে হ্রাস পাবে। প্রথম পর্যায় সুরমা এবং তার উপনদী এবং শাখা নদী সংহায়িত হবে। পরবর্তীতে কুশিয়ারা কালনী মেঘনা এবং এর শাখা প্রশাখা লয় প্রাপ্ত হবে। টিপাইমুখ বাঁধ চালুর প্রথম পর্যায়ে বাংলাদেশের উত্তর পূর্বাঞ্চলের সিলেট, মৌলভীবাজার কিশোরগঞ্জ, নেত্রকোনা ব্রাহ্মণবাড়িয়া এবং নরসিংদী জেলায় মরুকরণ শুরু হবে। মেঘালয়ে লবণাক্ততা দেখা দিবে মিঠা পানির অভাবে, যার ফলে উক্ত এলাকায় মাটির উর্বরতা হ্রাস পাবে।

কৃষি ও পানীয় জলের মারাত্মক সমস্যা দেখা দিবে এবং সংশ্লিষ্ট অঞ্চলের ফসল উৎপাদন আশংকাজনক হারে হ্রাস পাবে। হাওর অঞ্চলের জলাভূমিতে বিরুপ প্রভাব পড়বে যার ফলে প্রাণী, উদ্ভিদ, পাখি, মৎস্য এবং জলজ বৈচিত্র বিলুপ্ত হবে। ফলে অতিথি পাখি আগমন বাধা প্রাপ্ত হবে। ঐ নদীগুলো নাব্যতা হ্রাস পাবে যার ফলে উক্ত অঞ্চলের জলপথ ক্ষতিগ্রস্থ হবে। পানি সম্পদ ধ্বংস প্রাপ্ত হবে।

ভূগর্ভস্ত পানির স্তরে পূর্নাবরন ক্ষতিগ্রস্থ হবে। মিঠা পানির অভাবে জলজ জীব বৈচিত্র বিলুপ্ত হবে। অত্র অঞ্চলে আর্সেনিক দূষণের মাত্রা বৃদ্ধি পাবে। মাটিতে পানির পরিমাণ কমে যাওয়ার ফলে উপরিভাগ ক্ষতিগ্রস্ত হবে পরিণতিতে বৃক্ষ, গুল্ম, শাক-সবজির উৎপাদন হ্রাস পাবে। বিশ্বের বৃহত্তম মিঠা পানির উৎস মেঘনা ও তার শাখা-প্রশাখা হারিয়ে যাবে।

নদীর চর, নদীর মোহনা, নদীর তীর, ডেলটা এবং উপকুলীয় জীব বৈচিত্রের ক্ষেত্রে সামগ্রিক পরিবতর্ন আসবে। বিশের্ব বৃহত্তম গ্রাম ও বিশ্ব সংস্কৃতির অংশ হবিগঞ্জের বানিয়াচং গ্রামের প্রাকৃতিক সৌন্দর্য ও জীব বৈচিত্র্য লুপ্ত হবে। হাকালুকি ও টাঙ্গুয়ার হাওরের প্রাকৃতিক মৎস্য প্রজনন বিলুপ্ত হবে। সিলেট অঞ্চলের চা বাগানগুলি মারাত্মক ভাবে ক্ষতিগ্রস্থ হবে। কৃষিকাজে ও গৃহস্থালীর পানি সরবরাহ ব্যবস্থা বিপর্যস্থ হবে।

লু হাওয়া (উষ্ণ জলবায়ু) তীব্র হবে। সিলেট এবং অত্র এলাকার মানুষের স্বাস্থ্যগত ক্ষতি সাধিত হবে। টিপাই বাঁধটি সিসমিক ফল্ট লাইনে অবস্থিত হওয়ার কারণে যে কোন সময় বড় আকারের ভূমিকম্পের প্রাদুর্ভাব হতে পারে বাংলাদেশের উত্তর পূর্বাঞ্চলে।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.