দেশের শেয়ারবাজারে এখন সুনির্দিষ্ট কোনো কারণ ছাড়াই এক দিন সব ধরনের শেয়ারের দরপতন ঘটছে তো আরেক দিন ঠিক এর উল্টো চিত্র লক্ষ করা যাচ্ছে। ২০১০ সালের ধসের আড়াই বছর পরেও বাজারে এভাবে অকারণ ওঠানামা অব্যাহত রয়েছে।
কারণ ছাড়াই সূচকের পতন আবার কারণ ছাড়াই তার উল্লম্ফনের এই প্রবণতাকে বিশ্লেষকেরা বাজারের অস্বাভাবিক আচরণ বলে অভিহিত করেছেন।
টানা তিন দিন দরপতনের পর গতকাল সোমবার শেয়ারবাজারের মূল্যসূচক ঘুরে দাঁড়িয়েছে। প্রধান শেয়ারবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) সাধারণ সূচক এদিন ৬৪ পয়েন্ট বা ১ দশমিক ৬৪ শতাংশ বেড়েছে।
নতুন সূচক ডিএসইএক্স বেড়েছে ৬৪ পয়েন্ট বা পৌনে ২ শতাংশ।
অপর শেয়ারবাজার চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জের (সিএসই) সার্বিক মূল্যসূচক ২০৮ পয়েন্ট বা ১ দশমিক ৮২ শতাংশ বেড়েছে। তবে দুই স্টক এক্সচেঞ্জে সূচকের বড় ধরনের উত্থান হলেও আগের দিনের চেয়ে লেনদেন বেড়েছে সামান্য।
জানতে চাইলে পুঁজিবাজার বিশ্লেষক ও ইউনাইটেড ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির বাণিজ্য অনুষদের শিক্ষক মোহাম্মদ মূসা প্রথম আলোকে বলেন, গত কয়েক দিনে সূচকের যে উত্থান-পতন ঘটছে, এর যৌক্তিক কোনো কারণ নেই। বাজারের এই আচরণকে অস্বাভাবিকই মনে হচ্ছে।
দেশের রাজনৈতিক অঙ্গনের থার্মোমিটারের মতো বাজারের সূচকেরও উত্থান-পতন ঘটছে। অথচ বাজার বর্তমানে যে পর্যায়ে নেমে এসেছে, তাতে এ ধরনের অস্বাভাবিক আচরণের যৌক্তিক ভিত্তি নেই।
ডিএসইর তথ্য পর্যালোচনায় দেখা যায়, ঢাকার বাজারে গতকাল লেনদেনের সিংহভাগজুড়েই ছিল মূলত চারটি খাত—ওষুধ ও রসায়ন, ব্যাংক, বস্ত্র এবং বিদ্যুৎ-জ্বালানি। মোট লেনদেনের প্রায় অর্ধেকই ছিল এই চার খাতের।
কসমোপলিটন ফিন্যান্সের তথ্য অনুযায়ী, একক খাত হিসেবে গতকাল লেনদেনের শীর্ষে ছিল ওষুধ ও রসায়ন খাত।
এ খাতের কোম্পানিগুলোর সম্মিলিত লেনদেনের পরিমাণ ছিল প্রায় ৩০ কোটি টাকা, যা ডিএসইর মোট লেনদেনের ১৬ শতাংশের মতো। একক কোম্পানি হিসেবে এদিন লেনদেনের শীর্ষস্থানে ছিল ওষুধ খাতের কোম্পানি ওরিয়ন ফার্মা। ডিএসইর মোট লেনদেনের মধ্যে ১০ শতাংশই (১৮ কোটি টাকা) ছিল এই কোম্পানির।
কসমোপলিটন ফিন্যান্সের প্রতিবেদন অনুযায়ী, সোমবার ডিএসইর সূচককে ঊর্ধ্বমুখী রাখতে বড় ভূমিকা রেখেছে গ্রামীণফোন, বিএটিবিসি, তিতাস গ্যাস, আইসিবি ও ইসলামী ব্যাংক।
ঢাকার বাজারে সোমবার ২৭৪টি কোম্পানি ও মিউচুয়াল ফান্ডের লেনদেন হয়।
এর মধ্যে আগের তুলনায় ২৪৫টিরই দাম বেড়েছে, কমেছে ২২টির আর অপরিবর্তিত ছিল সাতটির। এদিন ডিএসইতে মোট লেনদেনের পরিমাণ ছিল প্রায় ১৮৭ কোটি টাকা, যা আগের দিনের চেয়ে ২১ কোটি টাকা বেশি।
অপরদিকে চট্টগ্রামের বাজারে এদিন ১৮২টি কোম্পানি ও মিউচুয়াল ফান্ডের লেনদেন হয়। এর মধ্যে আগের তুলনায় ১৫৯টিরই দাম বেড়েছে, কমেছে ১৫টির আর অপরিবর্তিত ছিল আটটির। সিএসইতে এদিন মোট লেনদেন হয় ২০ কোটি টাকার, যা আগের দিনের চেয়ে এক কোটি টাকা বেশি।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।