একমুখাপেক্ষি না হয়ে যা কিছু ভাল তা গ্রহন করা উচিৎ...
প্রশ্ন করেছিলাম, আজিমপুর কবরাস্থানে কতগুলো কুত্তা শুয়ে আছে? আলোচনার প্রসঙ্গ ছিলো ’কুত্তাগুলোর শাস্তি’। আমার প্রশ্ন শুনে অবাক হয়েছিলেন গ্রুপের এডমিন। ফেসবুকে গ্রুপটার নাম ছিলো ”আনটলারেবল কুত্তাস”
Click This Link
প্রধানত এখানে বখাটে ছেলেদেরকে ”কুত্তা” বলা হয়েছিল, যারা বিভিন্ন সময় বিভিন্নভাবে মেয়েদেরকে বিরক্ত করে থাকে। গ্রুপের এডমিন এবং অন্যান্যরা আমার প্রশ্নের মানে তখন বুঝতে পারেনি।
আলোচনার প্রসঙ্গে আমি তাদের বলেছিলাম বখাটেদের শাস্তির ব্যাপারে আমার কাছে একটা সমাধান আছে, তবে যেহেতু আপনারা শাস্তি দিতে চাচ্ছেন তাই আমি চাচ্ছি আপনারাই একটা সমাধান বের করুন।
কিন্তু যেকোনো কারণেই হোক তারা আমাকে ভুল বুঝলো এবং আমাকে নিয়ে কিছু উদ্ভট কথাবার্তা বললো। আমি তাদের ভুল ভাঙানোর কোনো চেষ্টাও করলাম না। কেননা, কেউ আমাকে ভুল বুঝলে সাধারণত আমি তাদের ভুল ভাঙানোর চেষ্টা করি না। তবে মানুষের একটা ভালো গুন হলো অন্যের তোষামোদী করে বেড়ানো, এটা আমি কখনোই করতে পারিনা, আমি যা সত্য এবং যা বলা উচিৎ তাই বলি। এক্ষেত্রে আমি সবাইকে সমান করেই দেখি।
আমার আত্বীয় অথবা পরিচিতো কেউ বলে আমি তার তোষামোদী করবো, এরকমটা আমি কখনোই পারিনা, আর এজন্য অনেকেই আমাকে পছন্দ করে না, আবার ঠিক এর উল্টোটাও . . . . .
--------------------------------------------------------------------
--------------------------------------------------------------------
যাই হোক; আমার বাবা, আপনার বাবা, আমার চাচা, আপনার চাচা, ঐ যে ফুপা, খালু দেখতে যাদের ভদ্র মনে হচ্ছে, এই যে স্যার জনাব আ. খ. ম. ফরিদ হোসেন এরা কে কোন সময় কোন মেয়েকে কিভাবে বিরক্ত করেছে তার কোনো ইতিহাস আপনাদের কাছে কি আছে?
কোথাও এসব কথা লেখা নেই এবং কোথাও এসব কথা লেখা থাকেনা। তাই বলে কি ধরে নেয়া যায় এদের কেউ কোনোদিন বখাটে ছিলেন না। যদি কেউ বখাটে থেকে থাকেন তবে তার ব্যাপারে কিন্তু কেউই জানতে পারছেন না। কিন্তু জানা উচিৎ। আর যদি জানা যেতো তাহলেইতো হিসাব করাটা সহজ হয়ে যেতো যে আজিমপুর কবরাস্থানে সত্যিকার অর্থে কতগুলো ’কুত্তা’ শুয়ে আছে।
ব্যাপারটা চিন্তা করতে হয়তো খারাপ লাগতে পারে, কিন্তু ব্যাপারটাকে তুলে ধরছি এই কারণে যে বখাটেরা আজীবন বখাটে থাকে না। আমি আমার চোখের সামনে অনেক বড় চুলকে ছোটো হয়ে যেতে দেখেছি এবং তারা আমার চেয়ে বয়সে বড়ই ছিলেন বটে।
এই যে রাস্তায় এই ছেলেটা, যে ছেলেটাকে এইমাত্র বখাটে হিসেবে চিনলো আরেকটি মেয়ে, ভবিষ্যৎ এ কোনো একদিন এই ছেলেটার একটা মেয়ে থাকতেই পারে এবং এটা একেবারেই স্বাভাবিক ব্যাপার। এই মেয়েটি একদিন বড় হবে। খুকি, কিশোরী, এরপর হয়তো কিশোরী বয়সটা পার না হতেই বিরক্ত করা শুরু করবে বখাটেরা।
মেয়ে বাবার কাছে এসে নালিশ করবে, ”বাবা, ঐ ছেলেগুলো আমাকে খুব বিরক্ত করছে”। এই বাবাই কিন্তু হচ্ছেন সেই বখাটে, যিনি কিনা তার সময়ে বখাটেদের নায়ক ছিলেন। কিন্তু মেয়েটি তা জানেন না। মেয়ের কাছে বাবা হচ্ছেন একজন আদর্শ। মেয়েটি কখনোই জানবেওনা যে তার বাবা তার অতীত সময়টা কিভাবে কাটিয়েছেন এবং কেউই সত্যিকার অর্থে জানে না, কোনো ইতিহাসে এইসব কথা লেখা থাকেনা।
এবং আবারো বলতে হচ্ছে বখাটেরা আজীবন বখাটে থাকেন না!!
প্রতিদিন জন্ম হয় অনেক শিশুর, প্রতিদিন জন্ম হয় অনেক বখাটের। প্রতিদিন কিছু কথা নালিশ হয়ে যায়। সাতদিনে একদিন ছাত্রীর কাছে শুনতে হয় ”রিক্সা করে যাবার সময় দুটো ছেলে আমাকে এটা বলেছে. . .”। পত্রিকায় মাঝে মাঝে খবর আসে বখাটেদের উৎপাতে মেয়ের স্কুল যাওয়া বন্ধ হয়ে গেছে। বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্রীর লাঞ্চনার খবর শিরোনাম হয় অথবা পত্রিকায় খবর হয়ে আসে কারো আত্বহত্যার।
------------------------------------------------------------
------------------------------------------------------------
বখাটে কারা হচ্ছেঃ
১. রাস্তার মোড়ে যেসব বখাটেদের দেখা যায় তাদের বেশরিভাগেরই বয়স ১৪-১৮ এর মধ্যে। একটা শ্রেণী আছে যারা হয়তো কলেজে পড়ে অথবা কলেজে পড়ার দ্বার প্রান্তে। আর একটা শ্রেণী আছে যারা হয়তো নবম-দশম শ্রেণীতে পড়ে। আর একটা শ্রেণী যারা হয়তো পড়াশুনা করে না। এই তিন শ্রেণীর ছেলেদের বখাটে হবার মূলে রয়েছে তাদের গার্ডিয়ান।
এই সময়টা (১৪-১৮) একটা ছেলের জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ। এই সময়ে (বিশেষ করে ১৪-১৭) ভালো খারাপ বোঝার ক্ষমতা যেমন তার কম থাকে ঠিক তেমনি খারাপের প্রতি তার আসক্তি থাকে খুব বেশী। এই ধরনের ছেলেগুলো যেনো বখাটে না হতে পারে সেজন্য তাদের গার্ডিয়ান অনেক বড় একটা ভূমিকা রাখতে পারেন। আমি এমন অনেক ছেলেকে চিনি যাদের বাবা-মা খোঁজও নেন না যে ছেলে কি করছে, ছেলে কোথায় যাচ্ছে। এসব তদারকি করলে হয়তো ছেলে ভাবেত পারে যে শাসনটা একটু বেশী হয়ে যাচ্ছে, কিন্তু তদারকি করা হলে সে অন্তত কিছু কিছু খারাপ কাজ থেকে নিজেকে বিরক্ত রাখবে, অথবা খারাপ কাজ করার আগে একবার হলেও ভাববে।
২০০০ সালের দিকে আমি নবম শ্রেণীতে পড়তাম। তখন বিডিআর এর ভেতরের সবগুলো মাঠেই খেলতে দেয়া হতো। ধীরে ধীরে সেই মাঠগুলো অফিসারদের খেলার জন্য বন্ধ করে দেয়া হয়। তবে শেষ পর্যন্ত ২০০৮ সালের দিকে পাবলিক স্কুলের সামনের মাঠটায় খেলতে দেয়া হতো (সব সময় না)। আমাদের সেই সময়টা আমরা সুযোগ পেলেই খেলাধুলা করে কাটিয়েছি।
এখন নবম-দ্বাদশ শ্রেনীর ছাত্রদের হয়তো অনেকেই খেলাধুলা করে সময় কাটায়, কিন্তু সেরকম খেলার মাঠ কোথায়। তাই হয়তো তারা রাস্তার মোড়ে দাড়িয়ে থাকে। কিন্তু একটা মেয়েকে কেনো বিরক্ত করা হবে? কেনো গার্ডিয়ানরা তার ছেলের খোঁজ করবে না? আমার মনে আছে, আমি যখন দশম শ্রেনীতে পড়ি, কোচিং ফাঁকি দিয়ে একবার ক্রিকেট খেলতে গিয়েছিলাম, আর আব্বু খোঁজ নিয়ে জানতে পেরেছিলেন। পরে যখন বাসায় আসি, তখন আমার ক্রিকেট ব্যট দিয়ে আব্বু আমাকে বারি মেরেছিলেন। স্টিলের আলমারির আয়নাটা ভেঙ্গে গিয়েছিলো।
তখন হয়তো এই ব্যাপারটা আমার কাছে খারাপ লেগেছিলো, কিন্তু এই ব্যাপারটার জন্যই আমি পরবর্তিতে কোচিং ফাঁকি দিয়ে খেলার সাহসটা পাইনি।
২. আর এক ধরনের বখাটে আছে। যাদের বয়স ১৮ এর অধিক। এদের অনেকেই হয়তো বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াশুনা করেন। সরকারী এবং বেসরকারী এবং জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে পড়া বেশীরভাগ ছাত্ররাই পরীক্ষার আগেই পড়তে পছন্দ করেন।
এইসব ছেলেদের মধ্যে সাধারণত বখাটে হয় সেইসব ছেলেরা যারা নষ্ট পোকাধরা রাজনীতির সাথে যুক্ত থাকে। তাদের একধরনের ক্ষমতা থাকে বলে তারা কোনো কাজ করতেই ভয় পায়না। তারা খারাপ কাজ করার জন্য ব্যাক-আপ পায়।
রিক্সায় উঠেছিলো ’ক’ ও ’খ’। ’ক’ এর ড্রেসের হাতাটা একটু ছোটো ছিলো।
পাশে দিয়ে যাচ্ছিল ম্যাথ ডিপার্টমেন্টের কিছু ছেলে। একজন বলে বসলো হাতটা দারুন। এইকথা ’খ’ এর কানে গেলো। ’খ’ রিক্সা থেকে নেমে গেলো এবং কেনো একথা বললো তা জানতে চাইলো। ছেলেগুলো বলতে শুরু করলো আমি কি খারাপ কিছু বলেছি? ছেলের বন্ধুরাও ওর কথায় সায় দিল।
একটা জটলা পেকে গেলো। ’ক’ রিক্সা থেকে নামলো। ’খ’ কে সরিয়ে নেয়ার চেষ্টা করলো। আমি জটলা আর ’ক’ এবং ’খ’ কে দেখে এগিয়ে গেলাম। ’ক’ কে বললাম তুমি যাও।
’খ’ তখন অনেক রেগে আছে। এরপর একটা বড় ভাই আসল। আমাদের ডিপার্টমেন্টের কয়েকজন ছেলে আসলো, আর ম্যাথ এর ১৫-২০ জন ছেলে এসে পরলো। মিটমাট কিছুই হলো না, শেষে ঐ ছেলেটা বেশ দাপটের সাথেই স্থান ত্যাগ করলো। আমি মনে মনে ভাবলাম এই ছেলে পরবর্তীতেও এই ধরনের কাজ আবারো করবে।
কেননা, সে এই ধরনের কাজ করার জন্য শাস্তি না পেয়ে উল্টো ব্যাকআপ পায়। খোঁজ নিয়ে জানা গিয়েছিলো সে নষ্ট হয়ে যাওয়া রাজনীতির সাথে সম্পৃক্ত।
-----------------------------------------------------------
আবারো বলতে হচ্ছে, ”বখাটেরা আজীবন বখাটে থাকে না. . .”
একটা সময় পার হয়ে যাওযার সাথে সাথেই সে ভদ্র হয়ে যায়। কিন্তু নষ্ট করে দিয়ে যায় কিছু সময়, নষ্ট করে দিয়ে যায় পরিবেশকে এবং হয়তো নষ্ট করে দিয়ে যায় একটি পরিবারকে. . . এজন্য তার শাস্তি পাওয়া প্রয়োজন. . . এবং অবশ্যই সেটা কঠোর শাস্তি. . . অবশ্যই দৃষ্টান্তমূলক. . .
প্রতিদিন নিত্য-নতুন বখাটের জন্ম হচ্ছে। এর একমাত্র কারণ হচ্ছে বখাটেদের শাস্তির বিধান কোথাও নেই।
বখাটেদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির বিধান যতদিন না পর্যন্ত করা হবে ততোদিন পর্যন্ত বখাটেদের উৎপাত থেকে কেউই রেহাই পাবে না, বিশেষ করে মেয়েরা। আর শাস্তির বিধান হওয়ার সাথে সাথে তাদের সংখ্যা কমতে শুরু করবে।
চোখের সামনে কোনো ছেলে যদি দেখতে পায় যে একজন বখাটের শাস্তি হচ্ছে তবে সে এই ধরনের কাজ নিজে করার আগে একবার হলেও শাস্তির কথা ভাববে। আর এভাবেই বখাটেদের সংখ্যা এবং সংখ্যার সাথে সাথে বখাটেদের উৎপাতও কমবে।
কিন্তু প্রশ্ন হলো, কি শাস্তি দেয়া যেতে পারে বখাটেদেরকে?
বখাটেরা কিন্তু আমার অথবা আপনারই ছোটো অথবা বড় ভাই. . .
কিন্তু সে যেহেতু অপরাধ করছে, তাই তার শাস্তি হতেই হবে।
হতেই হবে. . . হতেই হবে. . . শাস্তির বিধানের ক্ষেত্রে সম্পর্ককে ভুলে যেতে হবে।
অনেক ভেবে-চিন্তে শাস্তির বিধান করা প্রয়োজন তাদের জন্য। এবং অবশ্যই দীর্ঘমেয়াদী পরিকল্পনা করা প্রয়োজন।
--------------------------------------------------------------
--------------------------------------------------------------
আমি খুব বেশী ভাববার সময় পাইনি, তবে যতক্ষন ভেবেছি ততক্ষনে তাদের শাস্তির একটি বিধান করে ফেললাম। বখাটেদের জন্য নিন্মোক্ত শাস্তির বিধানটি আমি প্রজন্মের জন্য রেখে যাচ্ছি. . . (এবং ভুল থাকলে অথবা সমস্যা থাকলে সেগুলো নিজেই সংশোধন করার চেষ্টা করবো, এটা পরীক্ষামূলক এবং চুড়ান্ত নয়)
শাস্তির বিধানঃ
১. বখাটেদের শাস্তি হবে এলাকাভিত্তিক।
প্রতিটি এলাকায় বখাটেদের শাস্তি দেয়ার জন্য একটি নির্দিষ্ট জায়গা থাকবে। যেখানে সরাসরি সূর্যের আলো পড়বে এবং জায়গাটি অবশ্যই একটি উন্মুক্ত জায়গা হতে হবে।
২. বখাটেদের শাস্তি দেয়ার জন্য একটি নির্দিষ্ট বাহিনী থাকবে। এই বাহিনী নতুনভাবে গঠন করতে হবে সরকারকে। ধরে নিলাম এই বাহীনির নাম ”ব” এদের আলাদা কমান্ডিং লাইনআপ থাকবে।
যদি এরা ভুল করে তবে একজন নির্দোষ হয়তো বিনা কারণে শস্তি পেতে পারেন। সেক্ষেত্রে যে ভুল শাস্তি দেয়ার জন্য দায়ী থাকবে তার শাস্তি হবে সর্বাধিক। কেননা, যারা শৃঙ্খলা রক্ষার দায়িত্বে থাকেন তাদেরকেই সবচেয়ে বেশী সতকর্তা অবলম্বন করা উচিৎ। এবং সে যদি ভুল করে বসে তবে তার জন্য তার ভুলের শাস্তি সর্বাধিক হওয়া উচিৎ। আর এই ত্বত্তটি আমাদের দেশের আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর উপরও প্রয়োগ করা খুবই প্রয়োজন।
(কেননা, যারা রক্ষক, তারা যদি ভক্ষক হয়ে উঠেন তবে তাদের শাস্তি অবশ্যই সর্বাধিক এবং জনসমুক্ষে হওয়া প্রয়োজন, যেনো এইধরনের শাস্তি দেখে শিওরে উঠেন সবাই। ) সর্বাধিক শাস্তি কি হতে পারে তাও ঠিক করতে হবে। আমি অবশ্যই বলবো সর্বোচ্চ শাস্তি ফাঁসি না হয়ে তিলে তিলে জনসমুক্ষে তাকে আঘাত করা যেতে পারে। খেয়াল রাখা উচিৎ এইসব শাস্তির স্থানগুলোতে শিশু, বৃদ্ধ এবং দুর্বল হার্টের মানুষদেরকে প্রবেশাধিকার দেয়া যাবেনা।
৩. ”ব” বাহিনীর কাছে কেউ যদি নালিশ করে তবে তাদের প্রথম কাজই হবে যার নামে নালিশ করা হয়েছে তার উপর কয়েকদিন নজর রাখা।
এক্ষেত্রে কাজ করবে ”ব” বাহিনীর গোয়েন্দা বিভাগ। এবং তারা অবশ্যই সিভিল পোশাকে ঐ ছেলেটির প্রতি নজর রাখবে। এভাবে সাতদিন সাতজন গোয়েন্দা কর্মকর্তা তাকে অবজার্ভ করবে এবং সাতদিনই সাতজন ঐ ছেলেটির ব্যাপারে তাদের লিখিত বক্তব্য একটা কাগজে লিখে রাখবে। কাগজে লেখা ঐ সাতটি ডকুমেন্টের উপর নির্ভর করে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে সে বখাটে কি না। যদি সে বখাটে হিসেবে চিহ্নিত হয় তবে তাকে ধরে নিয়ে আসা হবে।
আর যদি সে বখাটে প্রমানিত না হয় তবে এখানেই খেলা শেষ হয়ে যাবে না। কেননা বখাটেরা এক্ষেত্রে চালাকির আশ্রয় নিতে পারেন এবং হয়তো এই সাতদিন সে নিজেকে ভালো ছেলে হিসেবে এলাকায় অথবা প্রতিষ্ঠানে উপস্থাপন করতে পারেন। তাই তাকে মাঝে মাঝেই অবজার্ভ করা হবে এবং যদি প্রমাণিত হয় যে সে ভালো ছেলে এবং এলাকায় অথবা প্রতিষ্ঠানে তার কোনো খারাপ রেকর্ড নেই তবে তার বিরুদ্ধে যে নালিশ করেছিলো তাকে জবাবদিহিতা করতে হবে। এবং সেক্ষেত্রে তার জন্যও শাস্তির ব্যাবস্থাও করতে হবে। এই শাস্তির মাত্রা কম হবে।
--------------------------------------------------------------
যে বখাটে বলে প্রমানিত হবে তার বয়সের উপর নির্ভর করে তাকে শাস্তি দেয়া হবে।
বয়সভিত্তিক শাস্তিঃ
১. তার বয়স যদি ১৪-১৬ এর মধ্যে হয় তবে তার বাবা-মা অথবা গার্ডিয়ানকে প্রথমে সতর্ক করে দেয়া হবে এবং তার ছেলের দেখাশুনার দায়িত্ব তাকে নিতে বলা হবে। এক্ষেত্রে একজন ছেলে দুইবার শাস্তির হাত থেকে বেঁচে যাবে। তবে তৃতীয়বার তাকে কঠোর শাস্তি দেয়া হবে। কঠোর শাস্তি উপরের বর্নিত নির্দিষ্ট স্থানে হবে, সবার চোখের সামনে এবং তার গার্ডিয়ানকেও সেখানে উপস্থিত রাখা হবে।
প্রাথমিক অবস্থায় তাকে ঘন্টাখানেক বেঁেধে রাখা হবে এবং তার গার্ডিয়ানকে দাঁড় করিয়ে রাখা হবে। [আমি মনে করি এই বয়সের একটা ছেলে বখাটে হওয়ার পেছনে গার্ডিযানের যতœ এবং খোঁজখবরের অভাবই বেশী কাজ করে, তাই এখানে গার্ডিয়ানও কিছুটা শাস্তি ভোগ করবে]। এরপর জনসম্মুখে তার হাতে ও পায়ে বেত দিয়ে ৫০-১০০ বার আঘাত করা হবে। (এই ধরনের শাস্তি হয়তো বেমানান অথবা হাস্যকর মনে হতে পারে, কিন্তু এইধরনের শাস্তির দ্বারা একজন ১৩-১৬ বছরের কিশোরকে যথেষ্ঠই অপমান করা হবে। আর অপমান মৃত্যুও চেয়েও ভয়ংকর[অনেকের কাছে])
২. শাস্তি ভোগ করার পর দ্বিতীয়বার যদি আবারও এই ছেলে বখাটে বলে প্রমাণিত হয়ে তবে শাস্তির মাত্রা বাড়বে এবং তৃতীয়বার প্রমাণিত হলে ”বখাটে” লেখাটা তার শরীরে সিল মেরে দেয়া হবে (লোহা গরম করে)[মাত্রাটা একটু বেশী এবং এই শাস্তির ফলে একটা মেয়ে অথবা সন্তান জানতে পারবে যে তার বাবা বখাটে ছিলেন কিনা।
]
৩. যাদের বয়স ১৭+ হবে তাদেরকে সাথে সাথেই দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দেয়া হবে। সেক্ষেত্রে সে একবার নিজেকে শোধরানোর সুযোগ পাবে। তারপর উপরের বর্নিত শাস্তিটিই তার উপর প্রয়োগ করা হবে।
৪. বিশ্ববিদ্যালয়ে অথবা কোনো শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের অধীনে যদি কেউ বখাটে বলে প্রমাণিত হয় তবে সেসব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানেই তাদের উপরের বর্নিত শাস্তি দেয়া হবে। এখানে উল্লেখযোগ্য যে প্রতিটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে বখাটেদের শাস্তি দেয়ার জন্য নির্দিষ্ট স্থান থাকতে হবে এবং সেই স্থানটি অবশ্যই উন্মুক্ত স্থান হতে হবে।
যেনো অন্যান্য ছাত্ররা বখাটেদের শাস্তি দেখে শিহরিত হয়। প্রতিটা শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের জন্য ”ব” বাহিনী থাকবে।
৫. কেউ বারবার বখাটে হিসেবে চিহ্নিত হলে তাকে কারাগারে পাঠানো হবে।
বখাটেদের শাস্তির আরও গুটিকয়েক পর্যায় থাকতে পারে। আমি হয়তো আবার কোনো একদিন এই শাস্তির বিধানকে বিস্তারিত করবো।
আর কারাগারে পাঠানোর জন্যও কিছু নিয়মকানুন প্রতিষ্ঠা করতে হবে। সময়ের অভাবে এখন এটা নিয়ে ভাবতে পারছি না।
--------------------------------------------------------------
বিঃ দ্রঃ যেকোনো নতুন আইন প্রণয়ণ করার পূর্বেই প্রয়োজন বিস্তারিত গবেষণার এবং আইন প্রণয়নের পর গনমাধ্যমে তার প্রচারের জন্য ব্যবস্থা করা প্রয়োজন, যেনো সবাই আইনটির ব্যাপারে স্পষ্টভাবে জানতে পারেন।
শেষে আমি বলবোঃ শাস্তির বিধানের সময় কঠোর হওয়া প্রয়োজন। সেক্ষেত্রে ভুলে যেতে হবে কিছু কিছু ব্যাপার যা মানুষকে আবেগায়িত করে তুলতে সক্ষম।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।